বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রামে বেশিরভাগ আসনে নৌকার সঙ্গে ঈগলের লড়াই

December 18, 2023 | 5:40 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের ১৬ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে ভোটের মাঠে আসা বেশিরভাগ প্রার্থীই তাদের পছন্দের ‘ঈগল’ প্রতীক পেয়েছেন। অধিকাংশ আসনেই নৌকার সঙ্গে লড়াই হবে ঈগলের অথবা কেটলি কিংবা ফুলকপি-ট্রাকের।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামে নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারের কাছ থেকে প্রতীক বুঝে নেন প্রার্থীরা।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬ আসনে মোট ১১৭ জন প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী ১৭ জন।

নৌকা-লাঙ্গল-স্বতন্ত্র

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম–১ (মীরসরাই) আসনে নৌকার প্রার্থী মাহবুব উর রহমান রুহেল। তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন, তিনি লড়বেন ঈগল প্রতীকে। এ আসনে মোট প্রার্থী সাত জন। বাকি পাঁচজন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের।

চট্টগ্রাম- ২ (ফটিকছড়ি) আসনে লড়াই হবে চতুর্মুখী। নৌকার প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ার সনির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন ফুলের মালা প্রতীকে বর্তমান সংসদ সদস্য তরিকত ফেডারেশনের সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারি, একতারা প্রতীকে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদ আল মাইজভাণ্ডারি এবং তরমুজ প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এইচ এম আবু তৈয়ব। এছাড়া আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শাহজাহান পেয়েছেন ঈগল প্রতীক। এ আসনে মোট প্রার্থী আট জন।

চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের নেতা জামাল উদ্দিন চৌধুরী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীকে নির্বাচন করবেন। এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে তিন বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন মাহফুজুর রহমান মিতা। এবারও তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন। এ আসনে মোট প্রার্থী আট জন।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন এস এম আল মামুন। প্রথমবারের মতো মনোনয়ন পাওয়া এ প্রার্থীসহ সীতাকুণ্ড লড়বেন ছয়জন প্রার্থী। এ আসনে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। এ আসনে ছয় জন প্রার্থী।

চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে লাঙ্গল প্রতীকের জাতীয় পার্টির প্রার্থী আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সঙ্গে স্বতন্ত্র হিসেবে কেটলি প্রতীকে লড়বেন আওয়ামী লীগ নেতা মো. শাহজাহান। আসনটি আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিয়েছে। এ আসনে মোট প্রার্থী সাত জন।

চট্টগ্রাম -৬ (রাউজান) আসনে চারবারের সংসদ সদস্য নৌকার প্রার্থী এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। এ আসনে মোট প্রার্থী পাঁচ জন।

চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালী আংশিক) এ আসনে আওয়ামী লীগের তিন বারের এমপি হাছান মাহমুদ এবারও নৌকার মাঝি হয়েছেন। এ আসনে ছয় জন প্রার্থী হিসেবে আছেন। এখানে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী ও নগরীর একাংশ) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক আবদুচ ছালাম পেয়েছেন কেটলি প্রতীক। স্বতন্ত্র হিসেবে আরও আছে ফুলকপি প্রতীকে চসিকের সাবেক কাউন্সিলর বিজয় কুমার চৌধুরী। আসনটি আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিয়েছে। লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করছেন জাতীয় পার্টির সোলায়মান আলম শেঠ। এ আসনে মোট প্রার্থী ১০ জন।

চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসনে এবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি শিক্ষা উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। নৌকা প্রতীকে লড়বেন তিনি। এ আসনেও কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। তবে ন্যাপ নেতা মিটুল দাশগুপ্ত লড়বেন কুঁড়েঘর প্রতীকে। এই আসনে মোট প্রার্থী সাত জন।

চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-হালিশহর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিউদ্দীন বাচ্চু। তার সঙ্গে স্বতন্ত্র হিসেবে আছেন সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম। তিনি পেয়েছেন ফুলকপি প্রতীক। আর সাবেক যুবলীগ নেতা ফরিদ মাহমুদ স্বতন্ত্র হিসেবে পেয়েছেন কেটলি প্রতীক। এ আসনে মোট প্রার্থী নয় জন।

চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনে তিনবারের সংসদ সদস্য এম এ লতিফ এবারও লড়ছেন নৌকা প্রতীকে। তার সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন চসিক কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন। তিনি পেয়েছেন কেটলি প্রতীক। এই আসনে মোট প্রার্থী সাত জন।

চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরী পেয়েছেন ঈগল প্রতীক। এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়বেন পটিয়া উপজেলার সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। এই আসনে মোট প্রার্থী আট জন।

চট্টগ্রাম-১৩ (কর্ণফুলী-আনোয়ারা) আসনে টানা চতুর্থবার আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। এবারও নৌকা প্রতীকে লড়বেন তিনি। এ আসনে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। মোট প্রার্থী সাত জন।

চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) আসনে দুইবারের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী এবারও নৌকা প্রতীকে লড়ছেন। তার সঙ্গে লড়াইয়ে আছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার চৌধুরী, তিনি পেয়েছেন ট্রাক প্রতীক। মোট প্রার্থী আট জন।

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মোতালেব, তিনি পেয়েছেন ঈগল প্রতীক। এই আসনে মোট প্রার্থী সাত জন।

চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে দুইবারের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এবারও আওয়ামী লীগের টিকিটে নৌকা প্রতীকে লড়ছেন। এ আসনে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমান স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে পেয়েছেন ঈগল প্রতীক। আরও দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল্লাহ কবির ট্রাক ও খালেকুজ্জান পেয়েছেন বেঞ্চ। এই আসনে মোট প্রার্থী ১০ জন।

রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল বাসার মো. ফখরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, চট্টগ্রাম জেলার ১০টি আসনে মোট ৭৪ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে দলীয় ৬৩ জন ও স্বতন্ত্র ১১ জন। প্রার্থীরা তাদের পছন্দ মতো প্রতীক দেওয়া হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের ক্ষেত্রে দুই একটি আসনে লটারি করতে হয়েছে। প্রার্থীদের নির্বাচনি আচরণবিধি পালন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন