বিজ্ঞাপন

সাতকানিয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকের বাড়িতে গুলি-ভাঙচুর

December 21, 2023 | 8:50 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের এক চেয়ারম্যানের বাড়িতে গভীর রাতে ‍গুলিবর্ষণ ও যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মোতালেবের নির্বাচনি কার্যালয়ও ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় মোতালেবের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দীন নদভীর অনুসারীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মোতালেবের সমর্থক পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিদোয়ানুল ইসলাম সুমনের বাড়িতে হামলার এ ঘটনা ঘটে।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী আব্দুল মোতালেবের প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান সারাবাংলাকে জানান, গভীর রাতে ২৫ থেকে ৩০ জনের একদল দুর্বৃত্ত পশ্চিম ঢেমশার ইছামতি গ্রামে চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে গিয়ে অতর্কিতে গুলিবর্ষণ শুরু করে। এ সময় তারা মোতালেবের প্রচারকাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস, একটি পিকআপ ও দুটি সিএনজি অটোরিকশা ভাঙচুর করে। এছাড়া ওই গ্রামে মোতালেবের নির্বাচনি কার্যালয়ও ভাঙচুর করা হয়।

হামলার সময় দুর্বৃত্তরা আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভীর নাম এবং ‘নৌকা, নৌকা’ উল্লেখ করে স্লোগান দিচ্ছিল বলে জানান মিনহাজুর রহমান।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস, সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী নোমান, সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রিটন সরকার।

এ ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সকালে সাতকানিয়ায় সংবাদ সম্মেলন করেন মোতালেবের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব পৌর মেয়র মোহাম্মদ জোবায়ের। তিনি বলেন, ‘মানুষের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য, নির্বাচন বানচালের জন্য, নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কমানোর জন্য নৌকার প্রার্থী গত কয়েকদিন ধরে যে উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন, এটা তারই বহিঃপ্রকাশ। পুলিশের গাফিলতি ও দুর্বৃত্তদের সঙ্গে সখ্যতার কারণে সন্ত্রাসীরা নির্বিঘ্নে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে পেরেছে।’

জানতে চাইলে সাতকানিয়া থানার ওসি প্রিটন সরকার সারাবাংলাকে বলেন, ‘একজন ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। আট আসামির নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের হয়েছে। আসামিরা বর্তমান এমপি সাহেবের লোক হিসেবে পরিচিত।’ এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী। ‘জামায়াত ঘরানার’ নদভীকে দলে এনে ২০১৪ সালের নির্বাচনে প্রথম মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ, যিনি ‘মধ্যপ্রাচ্য লবির’ জন্য আগে থেকেই পরিচিত ও আলোচিত। ‘কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার’ নীতি নিয়ে আওয়ামী লীগ তাকে দলে নিলেও দলটির পোড়খাওয়া অনেক নেতাকর্মীই তাকে মেনে নিতে পারেননি। একাংশের বিরোধিতার মধ্যেই নদভী ২০১৪ ও ২০১৮ সালে ‍দুই দফায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

গত দশ বছরে এমপি নেজামউদ্দিন নদভী’র বিভিন্ন কর্মকাণ্ড আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ‘জামায়াত তকমা’ ঘুচিয়ে এলাকায়-দলে প্রভাব-প্রতিপত্তি তৈরি করতে বিভিন্ন সময়ে তার কর্মকাণ্ড বিতর্ক তৈরি করেছে। অভিযোগ আছে, জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে যুক্ত নিজের স্বজন ও অনুসারীদের তিনি আওয়ামী লীগে প্রতিষ্ঠা করেছেন। বিপরীতে আওয়ামী লীগের প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যারা ছিলেন, তাদের কোণঠাসা করেছেন।

ফলে আওয়ামী লীগের যেসব নেতাকে পাশে নিয়ে গত দুই নির্বাচনে তিনি বৈতরণী পার হয়েছিলেন, তাদের অনেকেই এখন নদভীকে ছেড়ে গেছেন। তার একসময়ের ঘনিষ্ঠ সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ মোতালেব চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নেমেছেন নির্বাচনের মাঠে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন