বিজ্ঞাপন

পাহাড়ে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের প্রত্যাশা ইউপিডিএফের

December 25, 2023 | 2:37 am

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

রাঙ্গামাটি: দলের রজতজয়ন্তীতে ‘পাহাড়-সমতলে সংগ্রামী মৈত্রী জোরদারের’ আহ্বান জানিয়েছেন পাহাড়ে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলনকারী সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) প্রধান প্রসিত খীসা। মৈত্রী জোরদারের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের ন্যায্য দাবি পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন ও দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম হবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) ইউপিডিএফ প্রতিষ্ঠার ২৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে রোববার (২৪ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় প্রসিত খীসা এ মন্তব্য করেন। বার্তায় প্রসিত খীসা ইউপিডিএফের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশে ও দেশের বাইরে অবস্থানরত কর্মী-সমর্থক, জনগণ, ভ্রাতৃপ্রতিম দল, সংগঠনের নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের শুভেচ্ছা ও অভিবাদন জানিয়েছেন। বার্তায় বড় দিনের শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন খ্রিষ্টান সম্প্রদায়কে।

গত ১১ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ির পানছড়িতে দলের কর্মী বিপুল-লিটন-সুনীল ও রুহিন হত্যার প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়া সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে প্রসিত খীসা বলেন, ‘বিবৃতি, দেয়াল লিখন, পোস্টার-হ্যান্ডবিল প্রচার, গান-আবৃত্তি, সভা-সমাবেশের মাধ্যমে দেশের বিবেক গণতান্ত্রিক শক্তি খুনি ও তাদের মদতদাতাদের বিরুদ্ধে যেভাবে সোচ্চার হয়েছেন, তা সরকার-শাসকগোষ্ঠীর প্রতি বীতশ্রদ্ধ পার্বত্যবাসীদের মনে আস্থার ক্ষেত্র তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে পাহাড় ও সমতলের গণতন্ত্রকামী মানুষের সংগ্রামী মৈত্রী গড়ে উঠছে।’

ইইউপিডিএফ প্রধান প্রসিত বলেন, ‘স্বাধীনতার সপক্ষের দল’ দাবিদার দেশের লুটেরা নিপীড়ক শাসকগোষ্ঠী পাহাড়ি জনগণের ওপর দমন-পীড়ন, হত্যা-ধর্ষণ, ভূমি দখল এবং বন, প্রকৃতি ও পরিবেশ ধ্বংস করলেও দেশের প্রকৃত গণতান্ত্রিক শক্তি তা অনুমোদন করে না। স্মরণকালের ভয়াবহ লোগাঙ গণহত্যা, কল্পনা অপহরণ ও ইউপিডিএফের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ভণ্ডুল করার প্রতিবাদে দেশের গণতান্ত্রিক শক্তি যেভাবে পাহাড়ি জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছিল, বিপুল-লিটন-হত্যার প্রতিবাদে সবার সোচ্চার হওয়া সেসব ঘটনাকেই মনে করিয়ে দেয়।

বিজ্ঞাপন

আশির দশকের আগ পর্যন্ত পাহাড়ি-বাঙালি সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের উল্লেখ করেন প্রসিত খীসা। ২০২২ সালের জুনে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের অগ্নিকাণ্ডে উদ্ধার অভিযানে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনজন নিহতের কথাও স্মরণ করেন।

প্রসিত খীসা বলেন, দেশের প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও যেকোনো কঠিন সময়ে পাহাড়ের যুবশক্তি জীবনবাজি রেখে ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত, সেটা তারই আভাস দেয়। কিন্তু ‘স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি’ বেশ কয়েক বছর ধরে ‘স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা’র জিগির তুলে মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে অতীতে বিভিন্ন সময়ে পাহাড়ের ছাত্র-যুবকদের ভিন্নভাবে চিত্রিত করে দূরে সরিয়ে রেখেছে, তাদের শক্তি সম্ভাবনা ধ্বংস করার নীলনকশা জারি রেখেছে। তাতে গোটা দেশেরই ক্ষতি হচ্ছে।

১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর অস্ত্র সমর্পণের মধ্য দিয়ে সরকারের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সই করে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস)। তখন জেএসএসের নেতাকর্মীদের একটি পক্ষ ওই চুক্তির বিরোধিতা করে ছিল। পরের বছর ১৯৯৮ সালের ২৬ ডিসেম্বর ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। ইউপিডিএফের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি প্রসিত খীসার নেতৃত্বেই প্রথম ভাঙন হয় সন্তু লারমার জনসংহতি সমিতির। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিকে ‘কালো চুক্তি’ অভিহিত করে পাহাড়ে পূর্ণ স্বাত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে ইউপিডিএফ।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন