বিজ্ঞাপন

নির্বাচনে বাধা দেওয়া জনগণ মেনে নেবে না: শেখ হাসিনা

January 4, 2024 | 5:57 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচনে তারা আসেনি। সেটি তাদের ইচ্ছা। কিন্তু মানুষের ভোটের অধিকারে বাধা দেওয়া, এটি কখনোই এদেশের জনগণ মেনে নেবে না। ইনশাআল্লাহ ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হবে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের এ কে এম শামসুজ্জোহা স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনি জনসভায় তিনি এ সব কথা বলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে শেষ নির্বাচনি জনসভায় ভাষণ দেন আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা।

ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলায় আওয়ামী লীগ সভাপতির জনসভা ঘিরে নেতাকর্মীদের ঢল নামে। দুপুর ২টার পর জনসভা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।

টানা মেয়াদে সরকারের নানামুখী উন্নয়নের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি বলেন, ‘বিএনপি সেখানে কী করে? আপনারা দেখেছেন ২৮ অক্টোবর পুলিশের ওপর ভয়ঙ্করভাবে আক্রমণ করেছে। পুলিশকে ফেলে পিটিয়ে হত্যা করেছে। পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে অ্যাম্বুলেন্স জ্বালিয়ে দিয়েছে। রোগী দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স যাচ্ছে সেই অ্যাম্বুলেন্সকে আক্রমণ করেছে।’

বিজ্ঞাপন

ঠিক ২০১৩ সালে যেভাবে হত্যা করেছে। একইভাবে আবার করেছে। প্রধান বিচারপতির বাড়ির ওপরও আক্রমণ করেছে। প্রধান বিচারপতির বাড়িতে কেউ আক্রমণ করতে পারে এটি ভাবা যায় না। জাজেস কোয়ার্টার সেখানে আক্রমণ করেছে। সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ করেছে। এখনও অনেক সাংবাদিক চিকিৎসাধীন রয়েছে।

আমাদের মহিলারা মিছিল নিয়ে আসছিল ঠিক পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মতোই মহিলাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে অকথ্য অত্যাচার নির্যাতন করেছে বলেও অবহিত করেন তিনি।

বিএনপির এই নির্যাতন আর অগ্নিসন্ত্রাসকে ২০১৩ ও ২০১৪ সালের সঙ্গে তুলনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, রেললাইনের ফিশ প্লেট খুলে দিয়ে মানুষ হত্যার ফাঁদ পেতেছে। আপনারা দেখেছেন একটি ছবি। একটি মা তার সন্তানকে বুকে চেপে ধরে আছে। পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। এই চিত্র সারাবিশ্বের বিবেককে নাড়া দিয়েছে। ঠিক প্যালেস্টাইনে ইজরাইল যেভাবে হামলা করছে, হাসপাতালের ওপর বোম্বিং করছে ঠিক বিএনপিও সেই ইজরাইলদের অনুসরণ করে আজকে পুলিশের হাসপাতালের ওপর আক্রমণ অ্যাম্বুলেন্স আক্রমণ, ওইভাবে আক্রমণ করেছে। ওদের মনুষ্যত্ব বলে কিছু নেই। কাজেই আজকে নির্বাচনে তারা আসেনি। সেটি তাদের ইচ্ছা কিন্তু মানুষের ভোটের অধিকারে বাধা দেওয়া, এটি কখনোই এদেশের জনগণ মেনে নেবে না। এই অধিকার মানুষের অধিকার। কাজেই ৭ জানুয়ারি নির্বাচন, ইনশাআল্লাহ সেই নির্বাচন হবে।’

বিজ্ঞাপন

বিএনপি-জামায়াত অপশক্তিরা যেন কোনো জাতীয় সম্পদ নষ্ট করতে না পারে তাই নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান তিনি। পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জে আজকে এটাই হচ্ছে নির্বাচনকালীন সময়ের শেষ জনসভা বলেও জানান তিনি।

কৃষি তথা খাদ্য উৎপাদনে সবাইকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গণভবন এখন একটা ছোটখাট খামারবাড়ি। ওটা শুধু প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি না, খামারবাড়ি করে দিয়েছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আজকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। এই উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে আমাদের যাত্রা শুরু। এই যাত্রা যেন সহজ হয়। একমাত্র আওয়ামী লীগ ছাড়া কেউ আর এটি ধরে রাখতে পারবে না। কারণ আমরা দেখেছি, ওই বিএনপি একবারেই ক্ষমতায় এসে আমরা যতটুকু উন্নতি করেছিলাম, ধ্বংস করেছিল। আর কেউ এই দেশের উন্নতি করবেও না। ওই মন দিয়েও করবে না।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। আজকে আমরা সেই স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর‌্যাদা পেয়েছি বলেও দাবি করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

উন্নয়ন অর্রজনের মর‌্যাদা ধরে রাখার আহ্বান জানিয়ে দলীয় প্রধান বলেন, ২০৪১ সালের বাংলাদেশ এই বাংলাদেশে আমাদের তরুণ সমাজ শিক্ষায় দীক্ষায় প্রযুক্তি জ্ঞানে দক্ষ জনশক্তি হিসাবে গড়ে উঠবে। আমাদের স্মার্ট জনশক্তি, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট সোসাইটি আমরা গড়ে তুলবো। ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট সোনার বাংলা যে স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘নৌকা হচ্ছে নূহ নবীর নৌকা। আপনারা জানেন, মহাপ্লাবনে নৌকা মানবজাতিকে রক্ষা করেছিল। এই নৌকায় ভোট দিয়ে এদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। এই নৌকা আজকে উন্নয়ন দিয়েছে। এই নৌকায় আগামী দিনে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।’

তাই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের প্রার্থীদের জয়যুক্ত করবেন। আপনাদের কাছে সেই আহ্বান জানাই। আপনারা নৌকায় ভোট দেবেন তো?অবশ্য নৌকায় আবার লাঙ্গলও চড়ে বসেছে। যা হোক সেদিকেও একটু দেখবেন বলে অবহিত করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই’র সভাপতিত্বে জনসভায় বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের নৌকার প্রার্থী বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের নৌকার প্রার্থী ও সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশেনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীসহ অনেকে।

প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে এক নির্বাচনি জনসভায় নারায়ণগঞ্জ শহরে আসেন। এরপর বিগত ১৫ বছরে আর নারায়ণগঞ্জ শহরে আসেননি তিনি। তবে জেলার বিভিন্ন স্থানে সমাবেশসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গত বছর সরকারের নানান প্রকল্প ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন উপলক্ষে রূপগঞ্জ উপজেলায় তিনবার আসেন প্রধানমন্ত্রী। তিনটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন উপলক্ষে ২০১১ সালের ২০ মার্চ নারায়ণগঞ্জের বন্দরে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া ২০১৩ সালের ২৪ আগস্ট আড়াইহাজার উপজেলায় উপস্থিত থেকে জেলার অনেকগুলো প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।

সারাবাংলা/এনআর/একে

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন