বিজ্ঞাপন

ট্রেনে আগুন: এখনও মেলেনি এলিনা, চন্দ্রিমার মরদেহ

January 6, 2024 | 2:45 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুনের ঘটনার ১১ ঘণ্টা পরও মেলেনি এলিনা ও চন্দ্রিমা চৌধুরী মরদেহ। এলিনা পরিবারের সঙ্গে রাজবাড়ী স্টেশন থেকে ওই ট্রেনে ঢাকায় ফিরছিলেন। আগুন লাগার পর শিশু সন্তানসহ পরিবারের লোকজন ট্রেন থেকে নামতে পারলেও এলিনা নামতে পারেননি। একটা পর্যায়ে এলিনা তার পরিবারকে ফোন করে বলেন, ‘আমি আর পারছি না।’ এরপর থেকেই তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। মেলেনি তার মরদেহ।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৬ জানুয়ারি) শেখ হাসিনা বার্ণ এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সামনে এলিনার স্বজনদের সঙ্গে কথা হয় সারাবাংলার এই প্রতিবেদকের।

এলিনার ভাসুর রেজাউল করিম বলেন, ‘শুক্রবার থেকেই খুঁজছি এলিনাকে। কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। ট্রেনেও মেলেনি, হাসপাতালেও নেই। উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলো দেখেছি সেখানেও নেই। সব জায়গায় পরিবারের লোকজন খুঁজছে। কোথাও নেই। ফোনটাও বন্ধ। হয়তো ট্রেনেই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’

আরেক ভাসুর মুরাদ হোসেন বলেন, ‘গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ীতে। স্বামী সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন এবং পাঁচ মাসের ছেলে সন্তান আরফানকে নিয়ে থাকতেন মিরপুরের ৬০ ফিটে। ১০ দিন আগে মারা যান এলিনার বাবা। বাবাকে চিরবিদায় জানাতে সন্তানকে নিয়ে বাড়ি গিয়েছিলেন। ছেলে আরফান ও ভাই-ভাবির সঙ্গে একই ট্রেনে ঢাকা আসছিলেন এলিনা। আগুন লাগলে এলিনার ভাই-ভাবি শিশু আরফানকে নিয়ে ট্রেন থেকে নেমে যান। পরে এলিনা ফোন করে বলেন, ‘আমি আর পারছি না।’ এরপর থেকে আর তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।’

বিজ্ঞাপন

এছাড়া, অগ্নিকাণ্ডে নিখোঁজ ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী চন্দ্রিমা চৌধুরী। ২৮ বছর বয়সী চন্দ্রিমার খোঁজে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে হন্যে হয়ে ছুটছেন তার পরিবারের সদস্যরা। ট্রেনে আগুন লাগার আধা ঘণ্টা আগেও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা হয় তার। তবে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে তার খোঁজ মিলছে না বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।

শনিবার (৬ জানুয়ারি) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে চন্দ্রিমাকে খুঁজতে আসেন তার পরিবারের সদস্যরা। এ সময় চন্দ্রিমার ফুফাতো ভাই অনিন্দ্য পাল বলেন, ‘ঘটনার দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাজবাড়ী স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে বেনাপোল এক্সপ্রেসে ওঠেন চন্দ্রিমা। এরপর বেশ কয়েকবার পরিবারের সঙ্গে কথা হয়। তবে অগ্নিকাণ্ডের পর তার ফোন নম্বরে কল করা হলে তখন ব্যস্ত পাওয়া যায়। এরপর থেকে তার ফোন বন্ধ রয়েছে, কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।’

রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় বড় ভাইয়ের বাসায় থেকে চন্দ্রিমা লেখাপড়া করছিলেন জানিয়ে অনিন্দ্য বলেন, ‘শুক্রবার রাত থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ আশপাশের সব হাসপাতালে আমরা খুঁজেছি। হাসপাতালের মর্গে গিয়েও তার খোঁজ পাইনি। পাগলের মতো আমরা তাকে খুঁজছি কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে শনিবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ডা. সামন্ত লাল সেন সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ‘গোপীবাগে ট্রেনের আগুনের ঘটনায় দগ্ধ আটজনকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সবার অবস্থাই আশঙ্কাজনক। কেউ শঙ্কামুক্ত নন।’

সারাবাংলা/ইউজে/ইআ

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন