বিজ্ঞাপন

ইউনূসকে ক্ষমার বিষয়ে আমার কিছুই করার নেই: শেখ হাসিনা

January 8, 2024 | 8:49 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মুহাম্মদ ইউনূস নিজেদের কর্মীদের বঞ্চিত করেছেন, তাদের কাছেই তার ক্ষমা চাওয়া উচিত। তিনি শ্রম আইন ভঙ্গ করেছেন, নিজের কর্মীদের বঞ্চিত করেছেন। এখানে আমার কিছু করার নেই।

বিজ্ঞাপন

ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে বহু মানুষের দারিদ্র্যমুক্তিতে ভূমিকা রাখায় ড. মুহম্মদ ইউনূস ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান।

বিদেশি এক সাংবাদিক প্রধামন্ত্রীর কাছে জানতে চান, তার এই বিজয় উদ্‌যাপনের সময় তিনি কি ড. ইউনূসকে ক্ষমার বিষয়টি বিবেচনা করবেন কি না?

সোমবার (৮ জানুয়ারি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরদিন আজ সোমবার সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। বিকেলে গণভবনে এ মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ পরিচালনাকারী ‘লৌহমানবীর’ সঙ্গে তাকে তুলনা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা সাংবাদিককে বলেন, ‘দেশ চালানো সময় পুরুষ না নারী, সে চিন্তা করা উচিত নয়। একজন নারী হিসেবে তিনি কখনোই মনে করেন না তার কোনো বাধা আছে। তিনি দেশের মানুষের জন্য কাজ করেন। নারী একজন মা। যিনি পরিবার ও বাচ্চাদের দেখেন ও বড় করে থাকেন। মাতৃস্নেহ থেকেই তিনি দেশের মানুষের জন্য কাজ করেন।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি খুবই সাধারণ নারী। দেশের জনগণের জন্য দায়িত্ববোধ রয়েছে যে তাদের জন্য কাজ করতে হবে। তাদের উন্নত জীবন দিতে হবে। আমি সেটি করে যাচ্ছি।’

ভারতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি গৌতম লাহিড়ীর সুশাসন ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিষয়ক প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশকে লক্ষ্য ধরে তরুণ জনগোষ্ঠীকে ভবিষ্যতের জন্য সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত করে গড়ে তুলবেন।’

বিজ্ঞাপন

এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনালের (এএনআই) সাংবাদিক অশোকা রাজের প্রশ্ন ছিল, আগামী পাঁচ বছরের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য কী? নির্বাচনে জয়ের পরে ভারত থেকে বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদির কাছ থেকে কী ধরনের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রী পেয়েছেন?

জবাবে শেখ হাসিনা জানান, ভারত বাংলাদেশের বড় বন্ধু। ১৯৭৫ এ তার পরিবারকে হত্যার পর ভারত তাকে ও তার বোনকে আশ্রয় দিয়েছিল। যদিও কিছু সমস্যা আছে কিন্তু সেটা দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমাধান করা হয়। এ ছাড়া সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা বাংলাদেশের নীতি।’

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন থেকে আসা একজন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের দিক থেকে কোনো সমস্যা নেই। বাংলাদেশের নির্বাচন ভালো হয়েছে—এটি বলার জন্য ওই ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রী ধন্যবাদ জানিয়ে পাল্টা জিজ্ঞাসা করেন, ‘আপনি কী বলবেন, এটি আপনার দেশের (যুক্তরাষ্ট্র) চেয়ে ভালো নির্বাচন কি না?’

বাংলাদেশে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে করা একটি মামলায় ২ জানুয়ারি গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার ঢাকার তিন নম্বর শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালত বলেন, ‘মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্যদের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।’

মামলার আরেকটি ধারায় তাদের ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অর্থাৎ তাদের প্রত্যেককে মোট ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা দিতে হবে।

তবে কারাদণ্ড হলেও এখনি কারাগারে যেতে হয়নি ড. ইউনূসকে। আদালতে তাদের আইনজীবীরা ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করার শর্তে জামিন চাইলে পাঁচ হাজার টাকার বন্ডে আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেন। অর্থাৎ আগামী একমাসের মধ্যে তাদের শ্রম আপিলেট ট্রাইবুনালে আপিল করতে হবে।

রায়ের পরে আদালতের বাইরে এক প্রতিক্রিয়া ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘যে দোষ আমরা করি নাই, সেই দোষের ওপরে শাস্তি পেলাম। এটি আমাদের কপালে ছিল, জাতির কপালে ছিল, আমরা সেটা বহন করলাম।’

সারাবাংলা/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন