বিজ্ঞাপন

আসছে বাজেটে কৃষি খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ

May 22, 2018 | 4:15 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ‘খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রাখতে হলে কৃষির উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। এ জন্য কৃষি উপকরণের দাম কমানোর পাশাপাশি কৃষিখাতে আরও বেশি প্রণোদনার প্রয়োজন। আসছে বাজেটে কৃষিখাতে বরাদ্দ ও ভর্তুকি বাড়ানোর পাশাপাশি খাদ্য ও পুষ্টি অধিকার নিশ্চিত করতে আইন প্রণয়নে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ।’

মঙ্গলবার (২২ মে) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘কৃষিখাতে স্বয়ম্ভরতা ও খাদ্য অধিকার’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে বক্তাদের আলোচনায় এসব কথা উঠে আসে। খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ ও ক্রিশ্চিয়ান এইড বাংলাদেশ যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেন, ‘কৃষিতে আমাদের সাফল্য অনেক বেশি। খুবই আনন্দের কথা বাংলাদেশ এখন আর দরিদ্রপিড়ীত দেশ নয়। বর্তমানে দেশে সাড়ে ৩ কোটি টন দানা জাতীয় খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়। খাদ্য নিয়ে মানুষের কোনো অভিযোগ নেই। তবে পুষ্টি জাতীয় ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।’

বিজ্ঞাপন

প্রয়োজনে ভর্তুকী দিয়ে হলেও কৃষি ঋণের সুদ কমাতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কৃষি উপকরণের দাম কমানোর ব্যবস্থা করতে হবে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এসেছে। উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে এই স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রাখতে হবে। কৃষির বিভিন্ন উপকরণে আরও বেশি বেশি প্রণোদনা দেওয়া উচিৎ।’

সভাপতির বক্তব্যে ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ‘কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতি এখনও অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি। গ্রামে মানুষের মধ্যে এখন প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। তবে কৃষকের দাবি কারও কানে পৌঁছায় না। সামাজিক সূচকে দেশের অগ্রগতি হলেও বৈষম্য বাড়ছে। দেশ এখন নব্য উদারতাবাদের কবলে। অর্থনৈতিক ক্ষমতা যাদের হাতে আমরা তাদের নিয়ন্ত্রণে। পৌনে ছয় কোটি মানুষ এখন কোনো না কোনোভাবে পুষ্টিহীন। উন্নয়নের মহাসড়কের পথ সুসংহত করতে হলে নব্য উদারতাবাদদের হাত ছোট করতে হবে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান বলেন, ‘মূল্য বঞ্চনার কারণে অনেক কৃষক হতাশ হয়ে পেশা পাল্টাতে বাধ্য হচ্ছে। বাজার ব্যবস্থা ও জলবায়ু পরিবর্তন কৃষি ব্যবস্থাকে পরিবর্তিত করছে। তবে খাদ্য উৎপাদন স্থিতিশীল হচ্ছে না। আর যে হারে কৃষিজমি শিল্পের দখলে চলে যাচ্ছে তা রোধ করা সম্ভব না হলে খাদ্যের জন্য আমাদের পুরোটাই আমদানি নির্ভর হয়ে উঠতে হতে পারে।’

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক মহসীন আলী। সংগঠনটির পক্ষে ৫ টি সুপারিশ তুলে ধরে তিনি বলেন, টেকসই কৃষি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় কৃষক উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণে ‘মূল্য কমিশন’ গঠন করতে হবে। বাজেটে অগ্রাধিকার দিয়ে কৃষিখাতে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার। কৃষিখাতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, ভালো ফসল উত্তোলন ব্যবস্থাপনা ও আগামীতে কৃষি শ্রমিকের ঘাটতি বিবেচনায় নিয়ে কৃষি ব্যবস্থার যান্ত্রিকীকরণে প্রয়োজনীয় ভর্তুকি প্রদান, কৃষি জমি সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় নীতি বা আইন প্রণয়ন এবং ৪ কোটি অতিদরিদ্র ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ‘খাদ্য ও পুষ্টি অধিকার’ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আইন প্রণয়ণের সুপারিশ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপচার্য ড. মাহবুবার রহমান, ক্রিশ্চিয়ান এইডের দেশীয় পরিচালক সাকেব নবী, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জায়েদ ইকবাল খানমহ অনেকে।

সারাবাংলা/ইএইচটি/এমআই

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন