বিজ্ঞাপন

রাজশাহীতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, হাসপাতালে বাড়ছে রোগী

January 15, 2024 | 10:58 am

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

রাজশাহী: উত্তরের হিমেল হাওয়ার সঙ্গে ঘনকুয়াশা। রাত-ভোর ঘনকুয়াশার আবরণে পথঘাট ভিজে যাচ্ছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রার ফারাকও কমেছে। এতেই নামছে কনকনে শীত। হাড় কাপানো শীতে জবুথবু জনজীবন। চলতি মৌসুমের তাপমাত্রায় কাঁপছে পুরো রাজশাহী।

বিজ্ঞাপন

গত শনিবার (১৩ জানুয়ারি) থেকে মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েছে রাজশাহী। ওইদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রোববার সবনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

রাজশাহীতে গত কয়েকদিন থেকে দুপুরের আগে দেখা মিলছে না সূর্যের । যদিও দেখা যাচ্ছে তবুও সূর্যের তেজ নেই। রাজশাহীতে কয়েকদিন থেকে বয়ে যাচ্ছে মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহ। তবে সোমবার থেকে তা আর থাকছে না।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক হেলেন খান বলেন, গত দুইদিন রাজশাহীতে মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেলেও সোমবার তাপমাত্রা বেড়েছে। আকাশ মেঘে ঢেকে থাকার কারণে সূর্যের দেখা মিলছে না। মঙ্গলবার থেকে সূর্যের দেখা মিলতে পারে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে শীতজনিত নানা জটিলতায় রোগীদের ভীড় বাড়ছে হাসপাতালে। শিশু-বয়স্করাও হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন বেশি। উষ্ণতা পেতে শীতের কাপড়ের দোকানগুলোতেও বেড়েছে বিক্রি।

ঘন কুয়াশায় দুপুর গড়িয়ে গেলেও দেখা মিলছে না সূর্যের। যদিও হিমেল বাতাসে হাঁড়কাপানো ঠাণ্ডা ছিল সারাদিনই। হঠাৎ তাপমাত্রার এমন নিম্নমুখি আচরণ জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। দিনের স্বাভাবিক চলাফেরায় বাঁধা সৃষ্টি করছেন এই শীত। ছিন্নমূল ও খেটে-খাওয়া মানুষরা পড়েছেন বিপাকে।

বিজ্ঞাপন

রামেক হাসপাতালসহ উপজেলা সদর হাসপাতাল ও বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকেও শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ২৪ ঘণ্টায় রোগী ভর্তি হয়েছিলো ৬২ জন। শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ৮ টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত রোগী ভর্তি হয়েছে ৭২ জন। শিশু ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেড়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও বাড়তি ব্যবস্থাপনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে।

হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডেও বৃদ্ধ ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। রোববার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল দুই হাজার ৩১২ জন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে শিশু ও বয়স্ক মানুষের বের না হওয়াই ভালো। এছাড়া অন্যদেরও সতর্ক থাকতে হবে।

রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক জানান, উপজেলা পর্যায়ে রোগীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। তবে ভর্তি রোগীর চেয়ে আউটডোর রোগীর সংখ্যা বেশি। আর পরিস্থিতি খুব খারাপ, এমনটা না। এ সময়টায় রোগী কিছুটা বাড়ে। সে রকমভাবে ব্যবস্থাপনাও করা আছে।

বিজ্ঞাপন

শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ছিন্নমূল মানুষের কষ্ট বেড়েছে। নগরীর শিরোইল স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, ছিন্নমূল মানুষদের অনেকেই কষ্ট করে শীত নিবারণ করছেন। দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন শ্রমজীবীরাও।

নির্মাণ শ্রমিক শফিকুল ইসলাম জানান, এই শীতে কাজ করা অনেক কষ্টের। কিন্তু জীবিকার তাগিদে ঘনকুয়াশা মাড়িয়েই ভোরেই কর্মক্ষেত্রে যেতে হচ্ছে।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম বলেন, ‘হঠাৎ শীতের প্রকোপ বেশি। শৈত্যপ্রবাহ কয়েকদিন থাকতে পারে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলেই সেটি শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। আর তাপমাত্রা ৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে করা হয়।’

সারাবাংলা/ইআ

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন