বিজ্ঞাপন

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মডেল হতে পারে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন

January 17, 2024 | 3:44 pm

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া

অবাধ সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে গত ৭ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম একটি নির্বাচন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ভোটারদের সমর্থন এবং তাদের সরাসরি ভোটে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বিশ্বাসী স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের প্রাণের সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অতীতের ন্যায় বিপুল ভোটে পূণরায় নির্বাচিত হয়েছে। এই নির্বাচন নিঃসন্দেহে আগুন সন্ত্রাসীদের মুখে চপেটাঘাত করে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষার এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার ধারাবাহিকতা রক্ষার নির্বাচন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অন্যান্য যেসকল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে তার মধ্যে এই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এতোটাই অবাধ সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সংঘটিত হয়েছে যার ফলে এই নির্বাচন যে বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের নিকট একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মডেল হতে পারে এবং কেন হতে পারে তা এই নির্বাচনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিকের বিচার বিশ্লেষণ থেকে স্পষ্ট হওয়া যায়।

বিজ্ঞাপন

এই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু পরিবেশে সংঘটনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সংবিধানের আলোকে গঠিত স্বাধীন ও নিরেপক্ষ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন নির্বাচন শুরুর অনেক আগে থেকেই বেশ ভালো প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। এমন একটি অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের যে ভুমিকা তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। তাদের একান্ত প্রচেষ্টার ফলেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এতোটা সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের এই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি সব ধরনের ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তকে উপেক্ষা করে এমন অবাধ ও সুষ্ঠু একটি নির্বাচন পরিচালনা করা সম্ভব হয়েছে একমাত্র বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের যথার্থ এবং সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে। উল্লেখ্য যথাসময়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) সম্ভাব্য সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছিল। নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী সামগ্রী ক্রয়, প্রশিক্ষণ, অন্যান্য প্রয়োজনীয় খাতসহ নির্বাচন পরিচালনা ব্যয় হিসেবে বরাদ্দ করেছিল প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, সিনিয়র ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইসির মতবিনিময় হয়েছে; মাঠ কর্মকর্তাদের ইসির তরফে দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় এবং পর্যাপ্ত দিকনির্দেশনা। পাশাপাশি নির্বাচনী প্রশিক্ষকদের এমন একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যেই দেওয়া হয়েছিল যথেষ্ট প্রশিক্ষণ। নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর করতে নির্বাচন কমিশনের প্রয়াসে কোনো ঘাটতি থাকার অবকাশ ছিলোনা। নির্বাচনের আগে ও পরে নির্বাচনকালীন নিরাপত্তার লক্ষ্যে ১৩ দিনের জন্য অর্থাৎ ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনে করা হয়েছিল। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩৫ হাজারের বেশি সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল। এবার প্রয়োজনে তার চেয়েও বেশি সেনা মোতায়েন করার পরিকল্পনা নির্বাচন কমিশন করেছিল এবং মোতায়েন করেছেও বটে। এভাবেই একটি অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ মডেল নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। সব ধরনের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত মোকাবেলা করে এমন একটি অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়াটা সত্যিই অকল্পনীয় ছিলো। নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি সব ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তকে উপেক্ষা করে কিভাবে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সংঘটিত হতে পারে এই দিক চিন্তা করলে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের একান্ত প্রচেষ্টায় অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিঃসন্দেহে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মডেল হতে পারে।

বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কতটা অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে তা বিদেশি পর্যবেক্ষক দলের মন্তব্য থেকে আমরা স্পষ্ট হতে পারি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও রাশিয়া থেকে আসা বিদেশি পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, সফল ও বৈধ বলে অভিহিত করেছেন। তারা গত ৭ জানুয়ারি (রোববার) অনুষ্ঠিত হওয়া বাংলাদেশের ১২তম সাধারণ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের পর এমন মন্তব্য করেন। রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হওয়া একটি সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য জিম বেটস বলেন, ‘আমি নির্বাচনকে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও সুষ্ঠু বলে মনে করছি।’ সংবাদ সম্মেলনে আরোও যেসব বিদেশি পর্যবেক্ষক বক্তব্য দেন তাদের মধ্যে ছিলেন রাশিয়ান ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের সদস্য আন্দ্রে ওয়াই শুতোভ, ফিলিস্তিনের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের সিইও হিশাম কুহাইল, গাম্বিয়া হাইকমিশনের মোহামাদু মুসা এনজি, স্কটিশ এমপি মার্টিন ডে, ওআইসির নির্বাচনি ইউনিটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাকির মাহমুদ বান্দার, আরব পার্লামেন্টের সদস্য আবদি হাকিম মোয়ালিয়াম, দক্ষিণ এশিয়া গণতান্ত্রিক ফোরামের নির্বাহী পরিচালক পাওলো কাসাকা, ভিক্টর ওএইচ ও কানাডার চন্দ্রকান্ত আর্য। সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা রাজধানী ও পার্শ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করে যে চমৎকার অভিজ্ঞতা হয়েছে তার কথা তুলে ধরেন। তাঁদের এই অভিজ্ঞতার তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশর এই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিঃসন্দেহে একটি অবাধ সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের নিকট একটি মডেল হতে পারে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশে নির্বাচনে ভোট গ্রহণের জন্য যে সময় নির্ধারণ করা হয় তার তুলনায় বাংলাদেশের নির্বাচনে ভোট গ্রহণের সময় অনেক কম দেওয়া হয়। এই অল্প সময়েও বাংলাদেশের এতো বেশিসংখ্যক মানুষ ভোটে অংশগ্রহণ করে বিদেশি পর্যবেক্ষক দলকে এতোটাই তাক লাগিয়ে দেন যা মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য ও পর্যবেক্ষক জিম বেটসের বক্তব্যে পরিষ্কারভাবে ওঠে আসে। এত অল্প সময়ে প্রায় ৪০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি সম্পর্কে মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য ও পর্যবেক্ষক জিম বেটস বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণের যে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে, তা বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় সবচেয়ে কম। অনেক দেশে ভোট সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত হয়।’ তাঁর মতে এতো অল্প সময়ে ৪০ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতি কোনো অংশেই মুখের কথা নয়। একটি অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে বলেই তা সম্ভব হয়েছে। এই দিক দিয়ে চিন্তা করলে কিভাবে অল্প সময়েও একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সংঘটিত হয়ে থাকে তার একটি মডেল হতে বাংলাদেশের এই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া আমেরিকান গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিসের সিইও আলেকজান্ডার বি গ্রে এর মন্তব্যে চমৎকারভাবে ওঠে এসেছে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কতটা অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে তা। এই নির্বাচন সম্পর্কে আমেরিকান গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিসের সিইও আলেকজান্ডার বি গ্রে বলেন, ‘আমি নিজের চোখে দেখেছি, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। এটি ভোটার, পোলিং স্টাফ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের পেশাদারিত্ব ও ব্যাপক উৎসাহের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়েছে।’ গ্রে ১০টি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনের পর তাঁর অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে বলেন, ‘একজন ভোটারও বা কেউ তার কাছে তাদের উদ্বেগ বা অভিযোগ জানাননি। এই নির্বাচন গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতা এবং পেশাদারিত্বের সর্বোচ্চ মান পূরণ করেছে। আমি অত্যন্ত নিশ্চিত, নির্বাচন কমিশন সততার সঙ্গে পেশাদার কাজ করেছে।’ তাঁর এই মন্তব্যে বাংলাদেশ সংবিধানের আলোকে গঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের একটি অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সংঘটনের যে প্রতিশ্রুতি ছিলো তা বাস্তবায়নে নির্বাচন কমিশনের যে প্রয়াস তার বাস্তব প্রমাণ খুব চমৎকারভাবে ওঠে এসেছে। বাংলাদেশ সংবিধানের আলোকে গঠিত এই নির্বাচন কমিশনের ওপর জনগণ পরিপূর্ণ আস্থা রেখেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিয়ে বিপুল ভোটে পূনরায় নির্বাচিত করে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির কারিগর, জনগণের সমর্থন ও শক্তিতে বিশ্বাসী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে। এইক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতা এবং পেশাদারিত্বের সর্বোচ্চ মান পূরণের দিক চিন্তা করলেও এই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মডেল হতে পারে।

এই নির্বাচনে বাংলাদেশের গণতন্ত্রমনা জনগণের অংশগ্রহণ কতটা স্বতঃস্ফূর্ত ছিলো তা স্পষ্টভাবে ওঠে এসেছে রাশিয়ান ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের সদস্য আন্দ্রে ওয়াই শুতোভের মন্তব্যে। এই সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ভোটাররা খুব সক্রিয় এবং সমস্ত প্রার্থী ও ভোটাররা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত। এই জনগণই এদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে এবং এটি আমাদের জানিয়ে দেয়, এ নির্বাচন বৈধ।’ তিনি নির্বাচনের এই উন্মুক্ততা এবং স্বচ্ছতা দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। ভোট সম্পর্কে সমস্ত তথ্য পেয়েছেন। সুতরাং এই নির্বাচনে ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের দিক চিন্তা করলেও নিশ্চিত হওয়া যায় কিভাবে অন্যান্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কাছে এই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মডেল হতে পারে।

দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য দলগুলো যেখানে এমন একটি অবাধ সুষ্ঠু ও মডেল নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ইসিকে সর্বোচ্চ সহায়তা করেছে সেখানে নির্বাচন সংলাপে না এসে এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে জনসমর্থনহীন এবং জনবিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী সংগঠন বিএনপি-জামায়াত জোট আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও করে দেশের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে নির্বাচন ছাড়াই পিছনের দরজা দিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতা আসীন হতে অপপ্রচেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে এবং এখনো তা চলমান রেখেছে। খুনী জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া সন্ত্রাসী সংগঠন বিএনপি তাদের অতীতে করা দূর্নীতি, লুটপাট, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ইত্যাদি কর্মকা-ের মাধ্যমে ২০০৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনসমর্থন হারিয়ে ভরাডুবি হওয়ার পর থেকে জ্বালাও-পোড়াও, ষড়যন্ত্র এবং চক্রান্তের অপরাজনীতির তীব্রতা আগের চেয়ে এখন আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বানচালের লক্ষ্যে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারা জ্বালাও-পোড়াও নীতির মাধ্যমে জনগণের মনে ত্রাস সৃষ্টি করে অতীতের ন্যায় পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসীন হতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। বিএনপির এই অপপ্রচেষ্টাকে উপেক্ষা করেই অনুষ্ঠিত হয়েছে এমন অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। কিভাবে অভ্যন্তরীণ সকল অপপ্রয়াসকে ব্যাহত করে দিয়ে একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সংঘটিত হতে পারে সেইদিক বিচারেও এই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মডেল হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

এই সব দিক চিন্তা করে একটি ব্যাপারে আমাদের দ্বিমত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই যে গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচন একে অপরের পরিপূরক। সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্রকে কল্পনা করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকার পরিবর্তনের একমাত্র উপায় হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন। বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত রাখতে সুষ্ঠু নির্বাচনই একমাত্র পন্থা। সেই লক্ষ্যেই বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এমন একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে এতোদিন তাদের জোরালো প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছিল। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং জ্বালাও-পোড়াও করে গণতান্ত্রিক দেশে সরকারের ক্ষমতায় আসীন হওয়ার কোনো ধরনের সুযোগ নেই। গণতন্ত্র মূলত জনগণের সরকার। জনগণই গণতন্ত্রের প্রাণ এবং সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। আর জণগণ তাদের চূরান্ত এই ক্ষমতা কেবল এমন সুষ্ঠু নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমেই প্রয়োগ করতে পারে। সহজ কথায় বলতে গেলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এমন একটি সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমেই গণতন্ত্র প্রকৃতভাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে এবং তার ধারাবাহিকতা রক্ষা পায়। সুতরাং বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষায় বাংলাদেশের এই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশ এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের নিকট একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মডেল হতে পারে এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই।

লেখক: উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব), বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও সাবেক চেয়ারম্যান, ট্যুরিজম অ্যান্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সারাবাংলা/এসবিডিই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন