বিজ্ঞাপন

ফাঁসির সেলে মায়ের সঙ্গে ১১ মাসের শিশু যেসব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে

January 21, 2024 | 11:52 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত হবিগঞ্জের এক নারী কয়েদির সঙ্গে ফাঁসির সেলে থাকা তার ১১ মাসের শিশুকে নিয়ম অনুসারে সবধরনের খাবার ও সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

হাইকোর্টের নির্দেশে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপারের পাঠানো প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। এই প্রতিবেদনের ওপর বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে।

এ বিষয়ে সিনিয়র জেল সুপার হালিমা খাতুনের পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়, সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত নারী বন্দিদের অন্য বন্দিদের থেকে আলাদাভাবে নারী বন্দি ভবন এলাকায় অবস্থিত ৪৫ বাই ২২ ফুটের একটি ওয়ার্ডে, ১৩ বাই ১১ ফুটের ৩টি টয়লেটসহ ওয়াশরুম, ৬টি সিলিং ফ্যান, ৮টি লাইট, ১টি দরজা, ৬টি জানালা এবং ১০ বাই ৫ ফুটের একটি বারান্দা বিশিষ্ট পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশের সুযোগ সম্বলিত ওয়ার্ডে তাদের আটক রাখা হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত বন্দির শিশুসহ অন্য নারী বন্দির সঙ্গে কারাগারে থাকা শিশুদের জন্য ৪৫ বাই ২২ ফুটের একটি কক্ষকে খেলনাসহ শিক্ষণীয় প্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্র স্থাপনের মাধ্যমে ডে-কেয়ার সেন্টার চালু করা আছে, যাতে নারী বন্দিদের সঙ্গে থাকা শিশুরা খেলাধুলা করা ও শিশু শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। তা ছাড়া মায়ের সঙ্গে থাকা শিশুদের (৬ বছর পর্যন্ত) নিয়মিত খিচুরি, ডিম, দুধ ও কলা সরবরাহ করা হয় এবং দুগ্ধজাত শিশুকে মশা-মাছির হাত থেকে রক্ষার লক্ষ্যে ছোট মশারি সরবরাহ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

এ ছাড়া স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় মায়ের সঙ্গে থাকা শিশুদের প্রয়োজনীয় পোশাক, নতুন নতুন খেলনা ও লেখাপড়ার সামগ্রী সরবরাহ করা হয়। এমনকি বিভিন্ন দিবসে শিশুদের জন্য আলাদা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ও দিবসের তাৎপর্য অনুযায়ী নতুন পোশাক, খেলনা ও কেকসহ বিভিন্ন খাবার সরবরাহ করা হয়।

গত ৯ জানুয়ারি সই করা এ প্রতিবেদনে এ শিশুর সম্পর্কে বলা হয়, মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত নারী বন্দি ও তার সঙ্গে থাকা ১১ মাস ১৩ দিন বয়সী কন্যা শিশু সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে বর্ণিত সব সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন এবং তাদের দৈনন্দিন খাবার সরবরাহসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।

এর আগে, গত ৩০ নভেম্বর একটি দৈনিকে ‘ফাঁসির সেলে কেমন আছে ১০ মাসের মাহিদা’ শীর্ষক শিরোনামে প্রতিবেদন ছাপা হয়।

বিজ্ঞাপন

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, এক মামলায় পাঁচ আসামির সবাইকে দোষী সাব্যস্ত করে গত ২৬ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতের বিচারক জাহিদুল হক। রায় ঘোষণার দিন মা হুছনা আক্তারের সঙ্গে আদালতে এসেছিল ১০ মাসের শিশু মাহিদা।

রায় ঘোষণার পর মায়ের সঙ্গেই মাহিদার জায়গা হয় হবিগঞ্জ কারাগারের ফাঁসির সেলে। হবিগঞ্জ কারাগারের ওই সেলে সরাসরি পানির কোনো ব্যবস্থা নেই।

ছোট বালতিতে করে পানি পাওয়া যায়। তাও সবসময় নয়। ওই পানিতেই চলতে হয় তাদের। একজন সশ্রম কারাবন্দি যে হারে খাবার পান, ফাঁসির সেলে বন্দিদের একই নিয়মে খাবার দেওয়া হয়ে থাকে।

ওই প্রতিবেদনটি যুক্ত করে শিশুটির জন্য পর্যাপ্ত খাবার, স্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও অন্যান্য মৌলিক চাহিদা পূরণের নিশ্চিতে নির্দেশনা চেয়ে গত ১৪ ডিসেম্বর রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানভীর আহমেদ। রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব, আইন সচিব, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও কারা মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়‌।

বিজ্ঞাপন

এরপর গত ১৭ ডিসেম্বর হবিগঞ্জের কারাগারে কনডেম সেলে মায়ের সঙ্গে শিশুটির থাকা এবং শিশুটির অবস্থা সম্পর্কিত বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি রুল জারি করেন আদালত।

রুলে কারাগারের কনডেম সেলে মায়ের সঙ্গে থাকা শিশুর শারীরিক ও মানসিক উন্নয়ন নিশ্চিতে বিধি বা নীতিমালা বা প্রবিধান তৈরি করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

ওই দিন আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত।

সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন