বিজ্ঞাপন

টানা শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত যশোরের জনজীবন

January 23, 2024 | 7:29 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

যশোর: টানা শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে যশোরের জনজীবন। কনকনে শীতে জুবুথুবু হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষসহ প্রাণিকুল। প্রতিদিনই কমছে তাপমাত্রা। ব্যারোমিটারের পারদ নামতে নামতে মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) যশোরে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে এসে দাঁড়িয়েছে।

বিজ্ঞাপন

যশোরের তাপমাত্রার নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত থাকায় মঙ্গলবার জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ছিল। একই পূর্বাভাস থাকায় আগামীকাল বুধবারও (২৪ জানুয়ারি) জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আর এই শৈত্যপ্রবাহে সবচেয়ে বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। কাজ না থাকায় তাদের দিন কাটছে দুর্বিষহ অবস্থায়।

জানা যায়, এবছর পৌষের শেষ ও মাঘের শুরু থেকেই বাড়ছে শীতের তীব্রতা। তবে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরেই ছিল। গতকাল সোমবার (২২ জানুয়ারি) এই তাপমাত্রা নেমে আসে ৯ দশকি ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর মঙ্গলবার যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে, পৌষের মাঝামাঝি হিসেবে সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষে এবং ২০১৮ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে যশোরে দীর্ঘ সময় ধরে শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করেছিল। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

যশোর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ভোরে যশোরে সর্বনিম্ন ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এর আগে সোমবার ভোরে যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ০৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবারও তাপমাত্রার একই চিত্র বিরাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রচণ্ড শীতের কারণে মানুষজনের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড ব্যহত হচ্ছে। মোটা জ্যাকেট, মাফলারে ঢেকে মানুষজনকে জুবুথুবু হয়ে পথ চলতে দেখা যায়। হাড় কাঁপানো শীতে ঘর থেকে বের হননি অনেকে। তবে ঘর থেকে বের হয়েও কাজ মিলছে না শ্রমজীবী মানুষের।

যশোর শহরের লালদীঘি পাড়ে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ মানুষ শ্রম বিক্রির জন্য জড়ো হয়ে থাকেন। প্রচণ্ড শীতে সেই সংখ্যা অর্ধেকে এসে দাঁড়িয়েছে। তবে তারপরও কাজ না পাওয়ায় অনেকেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। কিছু মানুষ অনেক বেলা অবধি অপেক্ষা করছেন কাজের আশায়।

উপশহর এলাকার ওয়াহেদ আলী বললেন, ‘গত এক সপ্তাহ ধরে কাজ হচ্ছে না। শীতে একদিন কাজ পাই তো, তিনদিন পাই না। দিন কাটছে খেয়ে না খেয়ে।’

বিজ্ঞাপন

বাহাদুরপুর বাঁশতলা এলাকার রিকশা চালক আব্দুল লতিফ বলেন, ‘সকাল ৮টা ৯টার আগে রাস্তায় কোনো মানুষ আসছে না। আবার সন্ধ্যার পরপরই অনেক মানুষ ঘরে ঢুকে যাচ্ছে। ফলে যাত্রী অনেক কমে গেছে। আয়ও কমে অর্ধেকে নেমেছে।’

এদিকে যশোরের তাপমাত্রার নিম্নমুখি ধারা অব্যাহত থাকার পূর্বাভাসে মঙ্গলবার জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ছিল। সোমবার রাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধের ওই ঘোষণা দেওয়া হয়। শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহতের পূর্বাভাস থাকায় বুধবারও জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

এবিষয়ে যশোর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাহফুজুল হোসেন বলেন, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে যাওয়ায় মঙ্গলবার যশোরের সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী এ ছুটির ঘোষণা দেওয়া হয়। শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহতের পূর্বাভাস থাকায় বুধবারও জেলার মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মোফাজ্জল হোসেন খান জানান, জেলার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে যাওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী মঙ্গলবার জেলার এক হাজার ২৮৯টি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বুধবারও জেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রমের বন্ধ থাকবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/টিএম/এনএস

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন