বিজ্ঞাপন

বসছে ফুলের জলসা, হাসবে ডালিয়া-চন্দ্রমল্লিকা

January 24, 2024 | 9:16 am

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: পাহাড়-সমুদ্রে ঘেরা চট্টগ্রাম নগরী যেন হারিয়ে যেতে বসেছে তার চিরচেনা সেই অপরুপ সৌন্দর্য। যেদিকেই চোখ যায় চারদিকে শুধু ইট-কংক্রিটের তৈরি দালানকোঠা। কোথাও বসে শান্তিতে বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলার জায়গা নেই। শিশুদের জন্য খেলার মাঠ নেই। নেই বয়স্কদের নিশ্চিন্তে কোনো হাঁটার স্থান।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম নগরীতে থাকা মানুষরাও যেন হাঁসফাঁস করছিল একটু প্রশান্তি পেতে। তাই চট্টগ্রামবাসীর জীবনে আনন্দ ফেরাতে ফৌজদারহাটের সাগরতীরে ডিসি পার্কে ১২৭ প্রজাতির ফুল নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো মাসব্যাপী ফুল উৎসবের আয়োজন করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) মাসব্যাপী এ উৎসব শুরু হবে। উৎসবে দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির দুই লাখ ফুলের মেলা বসছে। ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এ উৎসব।

২০২৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এখানে ফুল উৎসব অনুষ্ঠিত হয়, যা চট্টগ্রামবাসীর মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। দ্রুতই জনপ্রিয়তা পায় ১৯৪ একর সরকারি জমিতে গড়ে তোলা ডিসি পার্ক। এরপর থেকে প্রতিবছর এখানে ফুল উৎসবের আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন।

বিজ্ঞাপন

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ফুল উৎসবে ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, ম্যাগনলিয়া, শিউলি, হাসনাহেনা, অপরাজিতা, চেরী, জাকারান্ডা, উইলো, উইস্টেরিয়া, কনকাম্বরী, হাইব্রিড জবা, চিলিজবা, হিজল, কৃষ্ণচূড়া,বকুল, পলাশ, শিমুল, প্লুমেরিয়া, করবী, ধানলিলি, নীল পারুল, নীলকণ্ঠ, রেইনলিলি, গন্ধরাজ, কাঠমল্লিকা, বাসন্তী, লিলিয়াম, জিনিয়া, ইনকা মেরী গোল্ড, ডালিয়াকামিনী, বেলী, দোলনচাঁপা, মাধবীলতাসহ দেশি–বিদেশি ১২৭ প্রজাতির কয়েক লাখ ফুলের সমারোহে সাজবে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট ডিসি পার্ক। ফুলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে প্রত্যেক ফুলের পাশে লেখা থাকবে তাদের নাম ও বৃত্তান্ত।

ছবি: সারাবাংলা

ছবি: সারাবাংলা

মাসব্যাপী এ আয়োজনকে আরও আকর্ষণীয় করতে ফুলের প্রদর্শনীর পাশাপাশি কয়েকটি সেলফি জোন ও পর্যটকদের জন্য থাকবে সাম্পান বাইচের আয়োজন। আবহমান বাংলার ঐতিহ্য রক্ষার্থে থাকবে বিভিন্ন সময়ের ১৫টি নৌকা প্রদর্শন। সপ্তাহব্যাপী ধরে অনুষ্ঠিত হবে বইমেলা। যা শুরু হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি। থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পিঠা উৎসব ও বিভিন্ন খাবারের দোকান।

এছাড়া শিশুদের জন্য থাকছে আলাদা কিডস জোন, দীঘির পানির ওপর নির্মিত কাঠের পুলের রাস্তা, আঁকাবাঁকা সেতু, ছনের ছাউনির গোলঘর, বাদামতলায় চেয়ার-টেবিল, পানিতে প্যাডেলচালিত কায়াকিং। ফুল উৎসবের দিন এখানে হবে ঘুড়ি উৎসব, ফানুস উৎসব, সাংস্কৃতিক উৎসব ও ১০০’র বেশি গুণী শিল্পীদের চিত্র প্রদর্শনীসহ নানা আয়োজন।

বিজ্ঞাপন

ফুল উৎসবের দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. হোসাইন সারাবাংলাকে জানান, ফুল উৎসবের প্রায় ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) রাত ১২টার মধ্যে সব কাজ শেষ হয়ে যাবে। গত বছর থেকে জেলা প্রশাসক স্যারের উদ্যোগে এখানে ফুল উৎসব শুরু হয়। এখানে আগে মাদকের আস্তানা ছিল।

তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয়বারের মতো আবার ফুল উৎসব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ডিসি পার্কে। জেলা প্রশাসনের নিজস্ব ফান্ড থেকে করা এ উৎসবে এবারও থাকছে নানা আয়োজন। ১২৭ প্রজাতির প্রায় দুই লাখের মতো ফুল গাছের চারা ইতোমধ্যে লাগানো হয়েছে।

পুরো ফুল উৎসবকে ঝাঁকজমকপূর্ণ করতে আয়োজন করা হবে মাল্টি কালচারাল বিশেষ আয়োজন ঘুড়ি উৎসব, পিঠা উৎসব, বইমেলা ও সাম্পান বাইচ। এছাড়া প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার শিল্পীদের পরিবেশনায় থাকবে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা।

উল্লেখ্য, ফৌজদারহাট সাগর উপকূলীয় এ অঞ্চলের প্রায় ১৯৪ একর সরকারি জমি গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে অবৈধভাবে দখল করে মাদক ব্যবসা ও অবৈধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল একাধিক চক্র। জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান চট্টগ্রামে দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র এক মাসের মধ্যে এসব জমি অবৈধ দখলমুক্ত করেন।

বিজ্ঞাপন

উদ্ধার করা জায়গায় গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১০ দিনব্যাপী চট্টগ্রামে প্রথম ফুল উৎসবের আয়োজন করা হয়। সেসময় ১২২ প্রজাতির ফুলের চমকপ্রদ প্রদর্শনীর মাধ্যমে উদযাপন করা হয়েছিল ফুল উৎসব–২০২৩। ১০ দিনব্যাপী এ ফুল উৎসব ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল পুরো চট্টগ্রাম জুড়ে।

সারাবাংলা/আইসি/এনএস

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন