বিজ্ঞাপন

পাঠ্য ব‌ই থেকে ‘শরীফ ও শরীফার গল্প’ বাদ দিতে আইনি নোটিশ

January 25, 2024 | 1:24 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান ব‌ই থেকে ‘শরীফ ও শরীফার গল্প’ প্রত্যাহার করে নিতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। যদিও পাঠ্যবইয়ে

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান এই আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন। আইনি নোটিশটি রেজিস্ট্রি ডাকযোগে শিক্ষা সচিব ও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবির) চেয়ারম্যান বরাবরে পাঠানো হয়েছে।

নোটিশে ৩০ দিনের মধ্যে ‘শরীফ ও শরীফার গল্প’ বাদ দিয়ে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ব‌ইয়ের দোকান থেকে এই ব‌ই প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় এর প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী।

আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান ব‌ইয়ে শরীফার গল্প বলা হয়েছে। এখানে শরীফ আহমেদ একজন ছেলে এবং তার সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ অনুযায়ী সে একজন ছেলে। কিন্তু সে মনে করে যে, সে এক জন মেয়ে। তাই তার নাম পরিবর্তন করে রেখেছে শরীফা। এখানে স্বীকার করা হয়েছে যে, শরীফ আহমেদের শারীরিক কোনো পরিবর্তন হয়নি। শুধুমাত্র মানসিকভাবে মনে করে সে একজন মেয়ে।

বিজ্ঞাপন

আইনি নোটিশে বলা হয়েছে যে, উক্ত গল্পের মাধ্যমে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ট্রান্সজেন্ডারের প্রতি আকৃষ্ট করা হয়েছে। সুকৌশলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মনে ট্রান্সজেন্ডারদের প্রতি প্রেরণা সৃষ্টি করা হচ্ছে। ট্রান্সজেন্ডার ও হিজড়া এক নয়, এদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। হিজড়ারা জন্মগতভাবেই কিছুটা বিকৃত অঙ্গ নিয়ে জন্মায়। এটা সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত। কিন্তু ট্রান্সজেন্ডারদের শারীরিক কোন ত্রুটি থাকে না, তারা মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত। উদাহরণস্বরূপ একজন ট্রান্সজেন্ডার পুরুষ মনে করে সে একজন নারী। অপরদিকে একজন একজন নারী ট্রান্সজেন্ডার মনে করে সে একজন পুরুষ।

এই ট্রান্সজেন্ডাররা বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত হয়। তারা সমমৈথুনে (same sex) এ লিপ্ত হয়। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী এই ট্রান্সজেন্ডারদের বিকৃত যৌনাচার সম্পূর্ণ অবৈধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। দন্ডবিধি এর ৩৭৭ অনুযায়ী পুরুষ-পুরুষ, নারী-নারী তথা প্রাকৃতিক নিয়মের বিরুদ্ধে যৌনতার শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা দশ বছরের কারাদণ্ড এবং অর্থ দণ্ড। এক্ষেত্রে উভয় পক্ষের সম্মতি থাকলেও এই ধারায় শাস্তিযোগ্য হবে। এক্ষেত্রে বিএলসি ১৯(এইচ ডি)১৭১ এর প্যারাগ্রাফ ৮ তে হাইকোর্ট বলেছেন দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারায় অপরাধের ক্ষেত্রে উভয়ের সম্মতি থাকলেও ছাড় পাবে না।

নোটিশে আরও বলা হয়েছে, সপ্তম শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকে এই বিকৃত যৌন রুচির ও মানসিক বিকারগ্রস্ত ট্রান্সজেন্ডারদের প্রতি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করা হচ্ছে। পাশাপাশি এই মানসিক বিকারগ্রস্ত ট্রান্সজেন্ডারদের কার্যকলাপ সুকৌশলে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করে দেশে প্রচার করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এতে করে দেশের আপামর মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২-ক অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হলো ইসলাম। অপরদিকে সংবিধানের মৌলিক অধিকার অনুচ্ছেদ ৪১(১) অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিকের ধর্ম অবলম্বন ও পালন করার অধিকার রয়েছে। এক্ষেত্রে দেশের পাঠ্য পুস্তকে ট্রান্সজেন্ডারদের কার্যকলাপ প্রচারের মাধ্যমে মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মবিশ্বাসে আঘাত করা হচ্ছে। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী বিকৃত যৌনাচার, সমমৈথুন (Same Sex) কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। তাই মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মবিশ্বাসে আঘাতের মাধ্যমে দণ্ডবিধির ২৯৫-এ ধারা লঙ্ঘিত হয়েছে। যা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

বিজ্ঞাপন

উক্ত আইনি নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান ব‌ই থেকে ‘শরীফা ও শরীফার গল্প’ বাদ দেওয়াসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ব‌ইয়ের দোকান থেকে এই ব‌ই প্রত্যাহার করতে হবে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের সংশোধিত ব‌ই সরবরাহ করতে হবে। অন্যথায় এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

সারাবাংলা/কেআইএফ/ইআ

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন