বিজ্ঞাপন

মুক্তামনির মৃত্যুর সংবাদ হার্ট-ব্রেকিং: ডা. সামন্তলাল

May 23, 2018 | 10:09 am

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ‘মুক্তামনির মৃত্যুর সংবাদ আমাদের জন্য হার্ট ব্রেকিং। মারা যাওয়ার মধ্য দিয়ে মেয়েটি আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থায় প্রশ্ন রেখে গেল।’ মুক্তামনি মারা যাওয়ার খবরে এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক ইউনিটের প্রধান সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন।

বুধবার (২৩ মে) সকালে সারাবাংলার কাছে এই প্রতিক্রিয়া জানান ডা. সামন্ত লাল সেন।

ডা. সামন্ত লাল সারাবাংলাকে বলেন, ‘রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত শিশু মুক্তামনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ছয় মাস চিকিৎসা নিয়েছে। তার চিকিৎসায় কোন ত্রুটি ছিল না। হাসপাতালের পক্ষ থেকে তার চিকিৎসার জন্য সব চেষ্টা করা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

সামন্ত লাল বলেন, ‘মুক্তামনির চিকিৎসার জন্য তার বাড়িতে নিয়মিত চিকিৎসক পাঠানো হতো। তাই, গতকাল (মঙ্গলবার ২২ মে) সাতক্ষীরা থেকে একজন চিকিৎসক পাঠানো হয়েছিল। আমাদের ইচ্ছা ছিল মুক্তামনিকে ঢাকায় আনা। এ নিয়ে ওর বাবার সঙ্গে কয়েক দফা কথাও হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু মুক্তামনির বাবা ইব্রাহিম মেয়েকে ঢাকায় আনতে রাজি হননি। তিনি জানিয়েছিলেন, মুক্তামনি নিজেই ঢাকায় আসতে রাজি হচ্ছিলো না।’

ডাঃ সামন্তলাল সেন বলেন, ‘মুক্তামনির চিকিৎসার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুরুতেই সব জানানো হয়েছিল। তাই শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী তার চিকিৎসার জন্য আন্তরিক ছিলেন। দ্বিতীয় দফায় মুক্তামনিকে ঢাকায় আনতে চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তার আগেই মুক্তামনি পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে গেল।’

বিজ্ঞাপন

২০১৭ সালের ১২ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি হয় মুক্তামনি। প্রথমে তার রোগটিকে বিরল রোগ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। পরে বায়োপসি করে জানা যায়, তার রক্তনালীতে টিউমার হয়েছে। তখন তার উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে যোগাযোগ করেন বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা। মুক্তামনির সব রিপোর্ট দেখে সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা তার চিকিৎসা করতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর ঢামেকের চিকিৎসকরাই তার অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন। পরে মুক্তামনির চিকিৎসার সব ধরনের খরচের দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মুক্তামনির হাতে গত বছরের ৫ আগস্ট প্রথম অস্ত্রোপচার হয়। তার হাতের ফোলা অংশ অস্ত্রোপচার করে ফেলে দেন চিকিৎসকরা। পরে দুই পায়ের চামড়া নিয়ে দু’দফায় তার হাতে লাগানো হয়। ঢামেকের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক আবুল কালামের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ একদল চিকিৎসক মুক্তামনির স্কিন গ্রাফটিং (চামড়া লাগানো) অপারেশনে অংশ নেন। পরে মুক্তামনির হাত আবার ফুলে যাওয়ায়, ফোলা কমানোর উদ্দেশ্যে হাতে প্রেসার ব্যান্ডেজ বেঁধে দেওয়া হয়।

মুক্তামনি ঢামেক হাসপাতালে ছয় মাস চিকিৎসা নিয়ে ২০১৭ সালের ২২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সাতক্ষীরায় নিজ বাড়িতে পৌঁছায়। বাড়িতেই তার চিকিৎসকের দেওয়া পরামর্শে ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছিল। গত সপ্তাহ থেকেই আবারো তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেএ/এমএইচ/জেএএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন