বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সন্ত্রাসী ও জঙ্গি ছাড়া ডান্ডাবেড়ি পরানো যাবে না: হাইকোর্ট

January 30, 2024 | 11:19 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: শীর্ষ সন্ত্রাসী, দুর্ধর্ষ অপরাধী ও জঙ্গির মতো কারাগারে আটক বিশেষ প্রকৃতির বন্দিদের আদালতে হাজির বা অন্যত্র স্থানান্তরের সময় ডান্ডাবেড়ি পরানো যাবে না। এ সংক্রান্ত কারা অধিদফতরের বিধান অনুসরণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিজ্ঞাপন

২০২২ সালের ২১ নভেম্বর কারা মহাপরিদর্শকের পক্ষে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শকের স্বাক্ষরে এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্রটি জারি করা হয়।

ওই পরিপত্রে বলা হয়, এখন থেকে কারাগারে আটক বিশেষ প্রকৃতির বন্দি, যেমন শীর্ষ সন্ত্রাসী, দুর্ধর্ষ, জঙ্গি (জেএমবি, হরকাতুল জিহাদ, হিযবুত তাহরীর, আনসারউল্লাহ বাংলা টিম, আনসার আল-ইসলাম ইত্যাদি) বন্দিদের বিজ্ঞ আদালতে হাজির বা অন্যত্র স্থানান্তরের সময় আনা-নেওয়ার পথে ডান্ডাবেড়ি পরানোসহ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করা হলো।

হাইকোর্ট কারা বন্দিদের ডান্ডাবেড়ি পরানোর ক্ষেত্রে এই পরিপত্র অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১১ মার্চ দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

এ সংক্রান্ত এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী কায়সার কামাল ও আইনজীবী মো. মাকসুদ উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আযাদ।

এর আগে, গত ২৩ জানুয়ারি ডান্ডাবেড়ি পরানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মো. নাজমুল হোসেন মৃধা নামের ছাত্রদলের এক নেতা রিটটি করেন।

বিজ্ঞাপন

প্যারোলে মুক্তি পেয়ে ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় পটুয়াখালীতে বাবার জানাজায় অংশ নিয়েছিলেন নাজমুল। তিনি পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক।

এরপর নাজমুল আইনি প্রক্রিয়ায় ১৭ জানুয়ারি জামিনে মুক্তি পান।

শুনানিতে ‘ডান্ডাবেড়ি নিয়েই মারা গেলেন কাজল’ শিরোনামে একটি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের অংশবিশেষ তুলে ধরেন আইনজীবী কায়সার কামাল।

তিনি বলেন, ‘বিএনপির কারাবন্দি নেতা–কর্মীদের কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে মারা যাচ্ছেন কারাগারে বা হাসপাতালে। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাদের ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। ডান্ডাবেড়ি নিয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে, এগুলোর একটি হচ্ছে কাজল।’

বিজ্ঞাপন

তখন আদালত বলেন, ‘ডান্ডাবেড়ির বিষয়ে ১৮৯৪ সালের প্রিজন্স অ্যাক্ট ও কারাবিধিতে উল্লেখ রয়েছে। শুধু রুল দিলেই হবে না। গাইডলাইন দিতে হবে। মানুষকে রক্ষা করতে হবে।’

একপর্যায়ে আইন ও সালিস কেন্দ্রের করা এক মামলার রায়ের প্রসঙ্গ টেনে আদালত বলেন, ‘নির্দেশনা অনুসারে রাষ্ট্রের প্রয়োজনে অথবা বন্দিদের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা যদি মনে করেন আসামি পালিয়ে যেতে পারেন, সে ক্ষেত্রে দিতে পারেন।’

তখন আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, ‘বিষয়টি এখন আপিল বিভাগে বিচারাধীন।’

শুনানির একপর্যায়ে আদালত বলেন, ‘আমাদের কাজটা হবে রাষ্ট্রযন্ত্র এবং জনগণের মধ্যে একটা সেতুবন্ধ তৈরি করা।’ আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, পরিপত্রটি প্রতিটি কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’

আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, ‘গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে গ্রেফতার ব্যক্তিদের রেনডম ডান্ডাবেড়ি পরানো হচ্ছে। রিট আবেদনকারীর বয়স ২১ বছর। যে মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়, সেই মামলার এজাহারে তার নাম ছিল না।’

আইনজীবী কায়সার কামাল এক পর্যায়ে রুলের পাশাপাশি ডান্ডাবেড়ি পরোনো নিয়ে নির্দেশনা দেওয়ার আরজি জানান।

তখন আদালত বলেন, ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী, দুর্ধর্ষ, জঙ্গি ছাড়া অন্যদের ক্ষেত্রে এটি (ডান্ডাবেড়ি) পরানো যাবে না।’

পরে আদালত ডান্ডাবেড়ি পরানোর ক্ষেত্রে ২০২২ সালের ২১ নভেম্বরের পরিপত্র অনুসরণের নির্দেশ দেন।

সারাবাংলা/কেআইএফ/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন