বিজ্ঞাপন

২৩ মে জাতীয় নৌ-নিরাপত্তা দিবস চায় নোঙর

May 23, 2018 | 2:30 pm

।। এম এ কে জিলানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: নৌ-পথের যাত্রাকে নিরাপদ এবং সহজ করতে ২৩ মে’কে জাতীয় নৌ-নিরাপত্তা দিবস ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন নোঙর-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুমন শামস। নোঙর নদী নিরাপত্তা বিষয়ক সামাজিক সংগঠন।

২৩ মে’কে জাতীয় নৌ-নিরাপত্তা দিবস ঘোষণার দাবিতে বুধবার (২৩ মে) মেঘনা নদীতে দিনব্যাপি এক ভাসমান বৈঠকের আয়োজন করে সংগঠনটি।

নোঙর-এর সভাপতি সুমন শামসের সঙ্গে আলাপ হয় সারাবাংলার এই প্রতিবেদকের। কী কারণে ২৩ মে’কে নৌ-নিরাপত্তা দিবস ঘোষণা করতে চায় নোঙর। এমন প্রশ্নের জবাবে নোঙরের সভাপতি সুমন শামস বলেন, ‘বিগত ২০০৪ সালের ২৩ মে তারিখে নদীমাতৃক বাংলাদেশের নৌপথে ইতিহাসের ভয়াবহতম নৌ-দূর্ঘটনা ঘটে। ওইদিন মাদারীপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্য ছেড়ে আসা ১৫৬টি তালি দেওয়া চলাচলের অযোগ্য লঞ্চ ‘এমভি লাইটিং সান’ ও ‘এমভি দিগন্ত’ মেঘনা নদীতে গভীর রাতে ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। সমগ্র মেঘনা থেকে পদ্মা নদীতে সে রাতে কচুরিপানার মতো ঢেউয়ের সাথে ভাসে ওঠে দুই শতাধিক মৃতদেহ।’

বিজ্ঞাপন

‘সেই ভয়াবহ লঞ্চডুবিতে স্বজন হারানো গভীর শোককে শক্তিতে পরিণত করে আজ থেকে ১৩ বছর আগেই নিরাপদ নৌপথ প্রতিষ্ঠার লক্ষে গণসচেতনতার মাধ্যমে গড়ে উঠেছিল ‘নদী নিরাপত্তার সামাজিক সংগঠন, নোঙর’। তাই বাংলাদেশের নৌপথে নিহতদের স্মরণে ‘২৩ মে’কে জাতীয় নৌ-নিরাপত্তা দিবস ঘোষণার দাবি জানাচ্ছে নোঙর।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০০৪ সালের ২৩ মে থেকে আমার কানে আজও নদীর কান্নার শব্দ ভেসে বেড়ায়। সেই দিনের দানব লঞ্চের একজন যাত্রী ছিলেন আমার প্রিয় মা জননী, যিনি নিজের জীবন দিয়ে তার সঙ্গে থাকা পুত্রকে জীবন দান করে নদীতে মিশে গেছেন। আর সেই দিন থেকেই নদীর প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা, মায়ের কথা মনে পড়লে ছুটে যাই নদীতে। নদীরাও চায় নৌ-নিরাপত্তা দিবস।’

সুমন শামস সারাবাংলাকে বলেন, ‘এখনো নদীতে লঞ্চ চলাচলের প্রতিযোগিতা চলছে আর ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। পাশাপাশি দিনে রাতে চলছে গিয়ারবিহীন বালুবাহী বাল্কহেড, যা প্রায় সময় বিভিন্ন ধরণের যাত্রীবাহী নৌযানের চলাচলের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। এই ধরণের বাল্কহেডের আসল সংখ্যা আমাদের অজানা! চিন্তার বিষয় হচ্ছে যে, এখন ভরা বর্ষার মৌসুম আসন্ন ঈদের সময় লক্ষ লক্ষ নৌযাত্রী জীবন বাজি রেখে ফিরে যাবেন প্রিয় মানুষের কাছে। তাই যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে ২৩ মে’কে জাতীয় নৌ নিরাপত্তা দিবস ঘোষণার মাধ্যমে সরকারে সংশ্লিষ্টি কর্তৃপক্ষকে এখনই সতর্ক প্রস্তুতি নিতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

সুমন শামস জানান, এ পর্যন্ত দেশে ৫৩৫টি বড় ধরনের নৌ দুর্ঘটনা ঘটেছে যেখানে মৃতের সংখ্যা প্রায় ৬ হাজারেও বেশি। এ সব দুর্ঘটনার পর সরকার দুর্ঘটনা তদন্তে এক বা একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এবং কমিটিগুলো দুর্ঘটনার প্রেক্ষাপটে কিছু পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা দিয়ে প্রতিবেদনও দাখিল করেছেন।

তিনি আরও জানান, অপর একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ৫৩৫টি নৌ দুর্ঘটনার বিপরীতে ৮৬৩টি তদন্ত কমিটি সুপারিশ প্রণয়ন করে প্রতিবেদন জমা দিলেও সেগুলো যেমন জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি তেমনি এগুলোর কোনো সুপারিশও বাস্তবায়িত হয়নি। এমনও শোনা যায় যে, সম্পাদিত প্রতিবেদনগুলোর যে অংশে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে সেগুলোর ভিতরের পাতা উধাও হয়েছে এবং সংশ্লিষ্টদের অনেকের বিরুদ্ধেই অপরাধের বিষয়টি প্রমাণিত হলেও তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়নি।

সারাবাংলা/জেআইএল/এমআই

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন