প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে শিশু মরিয়মকে হত্যা করে মা ও চাচা: পুলিশ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

পটুয়াখালী: পটুয়াখালীতে জমিজমা নিয়ে বিরোধিতার জোরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আট বছরের শিশুকে হত্যা করলেন মা ও চাচা। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে এঘটনা স্বীকার করেন তারা।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দশমিনা উপজেলার বেতাগী সানকিপুর ইউনিয়নের রামবল্লভ গ্রামে মরিয়ম হত্যার ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন পুলিশ সুপার মো. সাইদুল ইসলাম।

তিনি জানান, মরিয়ম হত্যার ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্তে নামে। তদন্তে বের হয়ে আসে হত্যার আগে মরিয়মের মা রিনা বেগম ও চাচা সেন্টু মৃধা জমিজমা বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে শিশু মরিয়মকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত শনিবার সন্ধ্যায় মা রিনা বেগম মেয়ে মরিয়মকে পাশের বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে নতুন পোশাক পরিয়ে চুল বেঁধে সাজিয়ে গুছিয়ে বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত ভিটায় নিয়ে যান। সেখানে ওড়না দিয়ে মরিয়মের মুখ বেঁধে রাখেন মা রিনা বেগম আর চাচা সেন্টু মৃধা মোটা শক্ত লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মাথায় আঘাত করে মরিয়মকে হত্যা করে।

তিনি আরও জানান, হত্যার আলামত ঢাকতে মা রিনা বেগম রক্তাক্ত পোশাক নিয়ে পুকুরে নেমে সাতার জানা মরিয়মকে খুঁজতে থাকেন এবং মরিয়মের নিখোঁজ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে বাড়ি বাড়ি না খুঁজে এলাকার মসজিদের মাইকে তার নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ প্রচার করতে থাকেন। এছাড়া মরিয়মের মায়ের অসংলগ্ন আচরণ দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। মরিয়মকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত লাঠি ও ওড়না উদ্ধার করেছে পুলিশ।

গত শনিবার রামবল্লভ অগ্রণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মরিয়মকে (৮) বাড়িতে ফিরতে না দেখে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। রাত ৮টায় বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত ভিটায় মরিয়মের রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন বাবা মকবুল মৃধা। এসময় শিশুটির মাথা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল এবং গলায় ওড়না পেঁচানো ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ রাত ১২টায় মরিয়মের লাশ উদ্ধার করে।

নিহত মরিয়মের বাবা মো. মকবুল মৃধা জানান, পুলিশ বলেছে মরিয়মের মা রিনা বেগম ও আমার ভাই সেন্টু মৃধা মিলে মরিয়মকে হত্যা করেছে। ঘটনা সত্যি কিনা জানি না তবে তারা অপরাধী হলে কঠোর বিচার চাই।

দশমিনা থানার ওসি মো. নুরুল ইসলাম মজুমদার জানান, মরিয়ম হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত রিনা বেগম ও চাচা সেন্টু মৃধাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

সারাবাংলা/এনইউ