বিজ্ঞাপন

‘বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি বজায় রাখা বড় চ্যালেঞ্জ’

February 13, 2024 | 3:01 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: চলতি বছরে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি বজায় রাখা হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে জানিয়েছেন ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত ‘সিএমজেএফ টক’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর পুরানা পল্টনের আল-রাজী কমপ্লেক্স সিএমজেএফের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। সিএমজেএফের সাধারণ সম্পাদক আবু আলীর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন সভাপতি গোলাম সামদানী ভূঁইয়া।

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য কমে যাওয়ায় কার্যকরি মূলধনের চাহিদা ৩০/৪০ শতাংশ বেড়ে গেছে। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংক মাত্র ১০ শতাংশ ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ঠিক করেছে। এ অবস্থায় চলতি মূলধনের চাহিদা পূরণ করাই হবে বড় চ্যালেঞ্জ।

তিনি বলেন, এটির সমাধান করা না গেলে খরচ কমাতে হবে। এতে করে উৎপাদনে প্রভাব পড়ে। উৎপাদন কমলে প্রবৃদ্ধি প্রভাব পড়বে। এছাড়াও কর্মসংস্থান সংকুচিত হবে। আমরা সরকারের সঙ্গে কাজ করছি যেন ক্রেডিট ফ্লো-টা বাড়ানো যায়। এতে অর্থনীতি গতিশীলতা ধরে রাখা সম্ভব।

বিজ্ঞাপন

আশরাফ আহমেদ বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির দেশ হবে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্য অর্জন করতে হলে অর্থনীতির আকার আড়াইগুণ বাড়াতে হবে। এই চ্যালেঞ্জ উৎরাতে গেলে অনেক কিছু করতে হবে। গত দেড়-দুই বছরে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে গেছে আমাদের ইকোনমি ও বিশ্ব ইকোনমি। প্রধানত, মুদ্রাস্ফীতির সমস্যার মধ্য দিয়ে গেছে। এটি দশ বছরে করার কথা ছিল। কিন্তু কোভিডের কারণে চার বছর পিছিয়ে গেছি। ১০ বছরের কাজটি এখন ছয় বছরে করতে হবে।

তিনি বলেন, দেশে এখন ডলারের সংকট রয়েছে। ব্যাংকগুলোর কাছে যথেষ্ট পরিমাণ ডলার লিকুইডিটি নেই। এজন্য আমদানির সমস্যাটা সমাধান হচ্ছে না। আমদানি কমলে উৎপাদনের ওপর বড় ধরণের প্রভাব পড়ে।

বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি কম হওয়ায় পুঁজিবাজার থেকে পুঁজি সংগ্রহ করা হচ্ছে না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, ব্যাংক থেকে দীর্ঘমেয়াদি লোন নেয়া খুব ডিফিকাল্ট। এটা পুঁজিবাজারে নেই। আপনি বন্ড ইস্যু করে পাঁচ বছর থেকে ১০ বছরের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে পারেন। আপনি যখন খুশি তা বিক্রি করে দিয়ে পারেন। পুঁজিবাজার থেকে পুঁজি সংগ্রহ করাটা একটু সময়সাপেক্ষ। এটা ইমিডিয়েট কাজ করবে না। দীর্ঘমেয়াদে এটা নিয়ে কাজ করা যাবে। অডিট রিপোর্টের একটা বাধ্যবাধকতা আছে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেটে ভালো ইস্যুয়ারগুলোকে নিয়ে আসা। আমরা এ বিষয়ে অনেকগুলো পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করছি। ভালো ইস্যুয়াররা বন্ডে ও ফিক্সড ডিপোজিট দুটোতেই আসতে পারে। বন্ড মার্কেটে প্রাইমারি ট্রেড হচ্ছে কিন্তু সেকেন্ডারি হচ্ছে না। ইস্যুয়ারদের নিয়ে এসে আমাদের ইনভেস্টমেন্ট বাড়াতে হবে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে ডিসিসিআই প্রেসিডেন্ট বলেন, দেশের বাইরে অর্থপাচার বা মানি লন্ডারিং শুধু অর্থনৈতিক কারণে হয় না। অর্থের ধর্ম হলো রিটার্ন যেখানে বেশি, সেদিকেই যাবে। দেশের বাইরে বিনিয়োগ করলে যে রিটার্ন বেশি পাওয়া যায়, এমন নয়। বরং, দেশে বিনিয়োগ করলেই তার চেয়ে বেশি রিটার্ন পাওয়া যায়। সুতরাং মানি লন্ডারিং অর্থনৈতিক কারণে হয় না। অন্য কারণও থাকতে পারে।

তিনি বলেন, মানি লন্ডারিং বা অন্য কোনো অনিয়মে যেসব ব্যবসায়ী জড়িত দায় শুধু তারই। তাই কোনো একজন ব্যবসায়ীর দায় সব ব্যবসায়ীর ওপর বর্তায় না।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, আমরা বিভিন্ন পলিসি নিয়ে সরকারের সাথে কাজ করতে পারি।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, অনেকগুলো নতুন ধরনের ইন্ডাস্ট্রি আসছে। যেমন, স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন যে আছে, সেটার ক্যাপাসিটি বাড়াতে পারলে ট্রিলিয়ন ডলারের ইকোনমি হতে পারবে। যদি ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টির রাইট ধরে রাখতে না পারলে নলেজ বেসড প্রপার্টি ডেভেলপ করা সম্ভব হবে না।

দেশের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা ও তার দূর করার বিষয়ে তিনি বলেন, পুরনো ঢাকার যানজট খুব ক্রিটিকাল হয়ে গেছে। গতকাল ইভেন্টে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তাদের যে পাইকারি ব্যবসা সেটা মার খাচ্ছে যানজটের কারণে। সেখানে যাওয়া আসাতেই পুরো সময় চলে যায়। তাই যানজট নিরসন করাটা ব্যবসায়ীদের জন্য অনেক জরুরি।

তিনি আরও বলেন, ট্রেড লাইসেন্স নিতে গেলে ৪/৫ জনের কাছে যেতে হয়। যেগুলো ওয়ানস্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে এক জায়গায় নিগে আসা যায়। এর জন্য লোকাল ব্যবসায়ীদের অ্যাওয়ারনেস বাড়াতে হবে। এটা কিন্তু সরকার সরাসরি এসে করে দেবে না।

সারাবাংলা/জিএস/এনইউ

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন