বিজ্ঞাপন

বাবার হাত ধরে রাজনীতিতে, এখন সংসদের পথে ফারজানা ছাত্তার

February 15, 2024 | 2:59 pm

কাজী মোহাম্মদ মোস্তফা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

ময়মনসিংহ: বাবা মো. আব্দুস ছাত্তার একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ ময়মনসিংহ-৮ আসন থেকে দুইবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। সেই বাবার হাত ধরেই রাজনীতিতে হাতে খড়ি মেয়ে ব্যারিস্টার উম্মি ফারজানা ছাত্তারের। ছিলেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। এখন পুরোদস্তুর আইন পেশায় নিয়োজিত হলেও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত। রাজনীতির প্রতি তার সেই অনুরাগ এবার তাকে নিয়ে যাচ্ছে জাতীয় সংসদের পথে।

বিজ্ঞাপন

জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ যে ৪৮ জনকে মনোনয়ন দিয়েছে, সেই তালিকাতেই ময়মনসিংহ অঞ্চল থেকে জায়গা পেয়েছেন ফারজানা ছাত্তার। সংসদের পরোক্ষ এই নির্বাচনে সাধারণত প্রার্থীর সংখ্যা আসনসংখ্যার সমান হয় বলে ফারজানা ছাত্তারের সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য হওয়া এখন সময়ের অপেক্ষামাত্র।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদের মহিলা সংরক্ষিত আসনের জন্য দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। ৪৮ জনের সেই তালিকাতেই জায়গা পেয়েছেন ব্যারিস্টার উম্মি ফারজানা ছাত্তার। আগামী রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) অন্যদের সঙ্গে তিনিও মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। আগামী ১২ মার্চ এই নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। তবে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষ হলেই বাড়তি প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া সবাইকে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন।

বুধবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন তালিকা প্রকাশের পর থেকেই অভিনন্দনে ভাসছেন ব্যারিস্টার ফারজানা। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানিয়েছেন, সবার সহযোগিতায় এলাকার উন্নয়নে নিজেকে নিয়োজিত করতে চান।

বিজ্ঞাপন

ব্যারিস্টার উম্মি ফারজানা ছাত্তার ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের মেয়ে। বাবা বর্ষীয়ান রাজনীতিক ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, ময়মনসিংহ-৮ ঈশ্বরগঞ্জ আসনের দুইবারের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুস ছাত্তার। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সভাপতি ছিলেন তিনি। এ ছাড়া ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মাহমুদ হাসান সুমন ব্যারিস্টার ফারজানার চাচাতো ভাই।

ব্যারিস্টার উম্মি ফারজানা ছাত্তার যুক্তরাজ্য থেকে উচ্চতর পড়ালেখা শেষে ব্যারিস্টার-অ্যাট-ল ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস শুরু করেন। তার স্বামী ব্যারিস্টার মাহিন এম রহমানও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। এই আইনজীবী দম্পতির সন্তান দুটি— জোয়া মাহিন রহমান ও জায়রা মাহিন রহমান।

ব্যারিস্টার ফারজানা ২০১০ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে অ্যাডভোকেট হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে যুক্ত হন। ২০০৭-০৮ সালে দেশে জরুরি অবস্থার সময় বাবা আব্দুস ছাত্তারের পাশে থেকে অনির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে তৃণমূলে আন্দোলন সংঘটিত করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন। ২০০৯ সালে পুরোপুরি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন তিনি। ২০১৩ সাল থেকে একজন আইনজীবী হিসেবে তো বটেই, রাজনৈতিক ও সামাজকর্মী হিসেবেও নারী ও সুবিধা বঞ্চিতদের জন্য সক্রিয়ভাবে প্রো-বোনো আইনি সেবা দিয়ে আসছেন।

বিজ্ঞাপন

উম্মি ফারজানা ছাত্তার কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের নাজমা আক্তার ও অপু উকিল কমিটির সদস্য ছিলেন। বর্তমানে ঈশ্বরগঞ্জ কল্যাণ সমিতির নির্বাচিত আইন সম্পাদক। এ ছাড়া সোসাইটি অব লিংকনস ইন লন্ডন ও বার অব ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলসের জেনারেল কাউন্সিলের সদস্য তিনি। বাংলাদেশ বার কাউন্সিল, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য এবং আর্মি গলফ ক্লাব ও ঢাকা ক্লাব লিমিটেডের সহযোগী সদস্য হিসেবে নিজেকে যুক্ত করেছেন ব্যারিস্টার ফারজানা। তিনি ঢাকা লেডিস ক্লাব লিমিটেডের আজীবন সদস্য।

রাজনৈতিক আবহে বেড়ে ওঠা ফারজানা ছাত্তার পেশাগত অভিজ্ঞতায় প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম ছাড়াও অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, ব্যারিস্টার তানজিব-উল-আলম ও অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের মতো আইনজীবীদের সঙ্গে একাধিক মামলা পরিচালনায় সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন।

আওয়ামী লীগ থেকে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ব্যারিস্টার উম্মি ফারজানা ছাত্তার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান। তাকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে কৃতজ্ঞতা জানান তার বাবার প্রতিও, যার হাত ধরেই তিনি আজকের এই অবস্থানে পৌঁছেছেন।

ব্যারিস্টার ফারজানা সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি গর্ব করি যে আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। ছোটবেলা থেকে বাবাকে দেখেছি ঈশ্বরগঞ্জের মানুষের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করতে। বাবার অনেক অসম্পূর্ণ কাজ রয়েছে। সেগুলো সম্পন্ন করার ইচ্ছা রয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

সবার সহযোগিতা কামনা করে ব্যারিস্টার ফারজানা বলেন, ‘আমার আগামীর পরিকল্পনায় গোটা ময়মনসিংহের জন্য কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন যে স্মার্ট বাংলাদেশ, সেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য নিজেকে নিয়োজিত করতে চাই। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ প্রতিটি খাতে অবদান রাখতে চাই। সবার সহযোগিতা পেলে ইনশাল্লাহ আমার লক্ষ্য পূরণ করতে পারব, মানুষের জন্য কাজ করতে পারব।’

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন