বিজ্ঞাপন

এই মেয়াদে তিস্তার মীমাংসা হচ্ছে না

May 24, 2018 | 4:48 pm

।। এম এ কে জিলানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অমীমাংসিত অন্যতম ইস্যু তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি দুই দেশের সরকারের চলমান মেয়াদে মীমাংসা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে ঢাকা ও নয়া দিল্লির একাধিক কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।

আগামীকাল শুক্রবার (২৫ মে) পশ্চিমবঙ্গ সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সফরেও তিস্তা চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে কি না, সে সম্পর্কে পরিষ্কার করে কিছু বলেননি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

তিনি জানান, এ সফরের উদ্দেশ্য আলাদা। ঢাকা-নয়া দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, কেন্দ্র সম্মত থাকলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরোধিতার মুখে আলোর মুখ দেখছে না তিস্তা চুক্তি। ঢাকাও এ পরিস্থিতিতে কেন্দ্র সরকারকে এই ইস্যু নিয়ে বিব্রত না করার নীতি গ্রহণ করেছে।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুই দিনের (২৫ ও ২৬ মে) পশ্চিমবঙ্গ সফর নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে তিনি পশ্চিমবঙ্গ যাচ্ছেন। সফরে আগামীকাল শুক্রবার (২৫ মে) তিনি শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং ‘বাংলাদেশ ভবন’ উদ্বোধন করবেন। পরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবস্থা নিয়ে আলোচনায় বসবেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো জানান, ‘বাংলাদেশ ভবনে’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নরেন্দ্র মোদি ছাড়াও উপস্থিত থাকবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তবে তার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে কিনা— সে বিষয়ে পরিষ্কার কোনো তথ্য জানানে পারেননি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বুধবারের (২৩ মে) ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চান, পশ্চিমবঙ্গ সফরে তিস্তা নিয়ে কোনো সুখবর আসবে কিনা বা সফরে তিস্তা বিষয়ে কোনো আলোচনা হবে কিনা কিংবা সরকারের বর্তমান মেয়াদে তিস্তা ইস্যুতে কোনো সমাধানের আশা আছে কিনা। কোনো প্রশ্নেরই পরিষ্কার কোনো জবাব দেননি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

বিজ্ঞাপন

তিস্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যথাসময়ে প্রকাশ্য, এর বাইরে কিছু বলার নাই।’ তিনি আরো বলেন, ‘কী করব, এর চেয়ে বেশি বলা যায় না।’

একপর্যায়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিছুটা উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘এই সফরের উদ্দেশ্য আলাদা। আপনারা তো কিছু দেখতে পান না।’

এর আগে, গত ১৯ এপ্রিল দুই শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে সর্বশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় লন্ডনে। ওই বৈঠক শেষে শেখ হাসিনার মুখপাত্র গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, তিস্তা নিয়ে আলাপ হয়েছে দুই সরকারপ্রধানের মধ্যে। তবে ওই সময় নরেন্দ্র মোদির মুখপাত্র তিস্তা বিষয়ে কোনো শব্দই উচ্চারণ করেননি।

এর আগে, গত এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঢাকা সফরে আসেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিজয় কেসব গোখলে। ওই সময় পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘তিস্তা নিয়ে আলাপ হয়েছে।’ যদিও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব তিস্তা নিয়ে টুঁ শব্দ করেননি।

বিজ্ঞাপন

বিজয় কেসব গোখলে বলেন, ‘আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে আরো কিছু অমীমাংসিত ইস্যু রয়ে গেছে। এগুলো আমরা ভুলে যাইনি। অমীমাংসিত বিষয়গুলোর মীমাংসার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

নয়াদিল্লির একাধিক কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, নরেন্দ্র মোদির সরকার তিস্তার সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে আন্তরিক। তবে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধিতার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। আগামী বছর ভারতের জাতীয় নির্বাচন। তাই নির্বাচনের আগে এই বিষয় নিয়ে নাড়াচাড়াও করতে চায় না বিজেপি সরকার।

ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রগুলোও বলছে, নরেন্দ্র মোদি তিস্তার মীমাংসা করতে আন্তরিক হলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না— ঢাকার কাছে এই বার্তা পরিষ্কার। তাই ঢাকাও আর তিস্তা ইস্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বিব্রতকর অবস্থায় না ফেলে অন্য বিষয়ে মনোযোগ দিয়েছে।

সারাবাংলা/জেআইএল/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন