বিজ্ঞাপন

রামচন্দ্রপুর খাল অভিযানে ভেঙে দেওয়া হলো নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবন

February 23, 2024 | 8:12 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকার লাউতলা রামচন্দ্রপুর খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও ময়লা পরিষ্কার কার্যক্রম পরিচালনা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এ সময় ভেঙে দেওয়া হয়েছে একটি নির্মাণাধীন দশতলা ভবন ও আরও দুটি স্থাপনা। খালের সীমানার ভিতরের সব অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় শুরু হয়ে বিকেল ৫টা ৪৫ পর্যন্ত পুরো তিন কিলোমিটার দীর্ঘ রামচন্দ্রপুর খালের ময়লা পরিষ্কার করা সম্পন্ন হয়েছে। মাঝে দেড় ঘণ্টার বিরতি বাদ দিলে প্রায় ছয় ঘণ্টায় এটি সম্পন্ন হয়। পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ডিএনসিসিকে সহায়তা করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লিনের দেড় হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী। সকাল থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম সেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে পরিষ্কার অভিযানে ছিলেন।

অভিযান শুরুর আগে সকাল পৌনে ১০টার দিকে বছিলায় অবস্থিত পশ্চিমাঞ্চল পুলিশ লাইন মাঠে (বছিলা ট্রেনিং একাডেমি) ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বিডি ক্লিনের স্বেচ্ছাসেবীদের শপথবাক্য পাঠ করান। সেখানে তিনি বলেন, ‘খালে যাঁরা ময়লা ফেলেন, তাদের মস্তিষ্কে ময়লা আছে। তাদের মনে ময়লা আছে। তারা সুনাগরিক নন। খালে ময়লা ফেলে নিজেদের সুনাগরিক দাবি করা যায় না।’

সকাল ১০টার দিকে রামচন্দ্রপুর খাল পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়। এ সময় স্বেচ্ছাসেবীদের উৎসাহ দিতে মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম হাতে গ্লাভস পরে নিজে খালে নেমে ময়লা পরিষ্কারের কাজ করেন। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মৃত এই খালকে আবার জীবিত করতে চান বলে জানান ডিএনসিসি মেয়র।

বিজ্ঞাপন

বেলা ১১টার দিকে রামচন্দ্রপুর ও লাউতলা খালের পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হয়। প্রথমে খালের মোহনার জায়গা দখল করে বানানো একটি আধপাকা ও একটি পাকা স্থাপনা গুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় খালের পাড়ে নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবন ভাঙার কাজ। ডিএনসিসির সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তারা খালের সীমানা মেপে দেখেন নির্মাণাধীন ভবনটির ৭০ ভাগই খালের জায়গার ওপর বানানো হয়েছে। এ কারণে নির্মাণাধীন ভবনটির অবৈধ অংশ ডিএনসিসি ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ছয়টি বিশেষ বুলডোজার ও এক্সেভেটরসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে অবৈধ ভবন ভাঙার কাজ করা হয়।’

খালের সীমানায় অবৈধভাবে গড়ে তোলা ভবন ভাঙার কাজ চলমান থাকবে বলে জানান ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা।

বিজ্ঞাপন

খাল উদ্ধার ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা পরিবেশ ধ্বংস করে ফেলেছি। পরিবেশ এখন প্রতিশোধ নিচ্ছে। একটু বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, রাস্তাঘাট ডুবে যায়। কারণ খাল দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে পারে না। ময়লা ফেলে খালগুলোকে ধ্বংস করে ফেলেছে। খাল পুনরুদ্ধারে আমরা এলাকাবাসীর সহযোগিতা চাই।’

মেয়র বলেন, ‘এর আগে মিরপুর প্যারিস খাল, সূতিভোলা খালে অভিযান করেছি। গত দুইবছর আগে এই মোহাম্মদপুরেই লাউতলা খালে অবৈধভাবে গড়ে তোলা ট্রাক স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করে আমরা গাছ লাগিয়ে দিয়েছি। সেখানে এখন সবুজায়ন হয়েছে৷ পাশেই বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে একটি মাঠ নির্মাণ করে দিয়েছি। আজ রামচন্দ্রপুর খালে অভিযান শুরু করেছি। এটি প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ ও প্রায় ১০০ ফুট প্রশস্ত খাল। খালের সীমানার ভেতরের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।’

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘অবৈধ ভবন সরিয়ে নেয়ার জন্য আমরা কোন বৈধ নোটিশ দিব না। সবাই জানে কারা খালের সীমানায় ভবন বানিয়েছে। ১০০ ফুট প্রশস্ত খাল জনগণের। এই সীমানা কেউ দখল করতে পারবে না।’

মেয়রের উপস্থিতিতে এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন ডিএনসিসি অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুব হাসান এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান।

বিজ্ঞাপন

অভিযানে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মাহে আলম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান, ৩৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ, সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর রোকসানা আলম ও শাহিন আক্তার সাথী।

সারাবাংলা/আরএফ/একে

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন