বিজ্ঞাপন

দুর্নীতির সংবাদ করায় ক্ষিপ্ত জবি কর্মকর্তা, ছিঁড়লেন ব্যানার

March 6, 2024 | 12:25 pm

জবি করেসপন্ডেন্ট

জবি: দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের ব্যানার ছিঁড়েছেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার কামাল হোসেন। এমনকি সাংবাদিকদের নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সম্পত্তি কর্মকর্তা। কামালের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসে অবৈধভাবে জমি দখল করে তা ইজারা দেওয়া, মাছ চাষ, সবজি ও বিভিন্ন ফসল চাষসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাবশালী বলয়ের কামাল হোসেন বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ, সম্পত্তি আত্মসাৎ, অর্থের বিনিময়ে সম্পত্তি দখলদারদের দিয়ে দেওয়া, নতুন ক্যাম্পাসে অবৈধভাবে জমি দখল করে ইজারা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা, নতুন ক্যাম্পাসের অধিগ্রহণকৃত জমি নিয়ে কারসাজি, নতুন ক্যাম্পাসের গাছ বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ, নতুন ক্যাম্পাসের কাজ আটকে রাখাসহ নানান অপকর্মে জড়িত। তার এসব অপকর্ম ও দুর্নীতি নিয়ে জবি প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা তথ্য-প্রমাণসহ দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে সংবাদ প্রকাশ করে আসছেন।

এসব সংবাদ প্রকাশের পর সাংবাদিকদের ওপর ক্ষিপ্ত হন জবির সম্পত্তি কর্মকর্তা কামাল হোসেন। এ কারণে দীর্ঘদিন থেকেই সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে আসছেন তিনি। এমনকি সাংবাদিকদের নানাভাবে হুমকিও দিয়ে আসছেন তিনি।

গত ২০ নভেম্বর প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকায় তথ্য-প্রমাণসহ ‘প্রকল্পের কাজ আটকে রেখে চলছে চাষাবাদ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ পায়। সেখানে কামাল হোসেন ও তার সহযোগী কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি আব্দুল কাদের ওরফে কাজী মনিরের অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরা হয়। এরপর থেকেই তিনি ও তার সহযোগীরা সাংবাদিকদের ওপর আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। প্রতিদিনের বাংলাদেশ’র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ইউছুব ওসমানসহ প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের তিনি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।

বিজ্ঞাপন

এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাশ ভবনে প্রেসক্লাবের অফিসের সামনে টানানো প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন কামাল হোসেন ও তার সহযোগীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে সকলের সামনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, সাংবাদিকদের সব নিউজেই তার নাম দেওয়া হয়।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের ব্যানার এবং অবকাশ ভবনের সব ব্যানার সরিয়ে ফেলতে উপাচার্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে গুজব ছড়ান তিনি। সাংবাদিকরা তার কাছে ব্যানার ছিঁড়ার কারণ জানতে চাইলেও তিনি একই কথা বলেন। তবে তার এই বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সম্পত্তি কর্মকর্তা ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার কামাল হোসেন বলেন, ‘ভিসি ম্যাম সব সরানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাই সরিয়েছিলাম। অবকাশ ভবনের ব্যানারগুলো সরানো ভুল হয়েছে। আমি তখন ওখানে ছিলাম না। নিরাপত্তাকর্মীরা সরিয়েছেন। সাংবাদিকদের ব্যানার সরিয়ে ছিঁড়ে ফেলা ভুল হয়েছে। আমি এটা ঠিক করে দেব।’

বিজ্ঞাপন

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, ‘আমি বাণী অর্চনার নষ্ট হয়ে যাওয়া ব্যানার-পোস্টারগুলো সরাতে বলেছিলাম। কিন্তু সে (সম্পত্তি কর্মকর্তা কামাল হোসেন) অবকাশ ভবনের ব্যানারও সরিয়ে ছিঁড়ে ফেলেছে বলে শুনলাম। আমি তাকে ডেকে নিয়ে কথা বলেছি। তাকে বলেছি, তুমি এটা ঠিক করে দেবা। সে ঠিক করে দেবে বলেছে।’

সারাবাংলা/এনএস

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন