বিজ্ঞাপন

সমঅধিকার নিশ্চিতে বিনিয়োগে প্রাধান্য দিয়ে বিশ্ব নারী দিবস আজ

March 8, 2024 | 12:11 am

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আজ বিশ্ব নারী দিবস। নারীর সমানাধিকার নিশ্চিতে বিনিয়োগে গুরুত্ব দিয়ে শুক্রবার (৮ মার্চ) বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে দিবসটি।

বিজ্ঞাপন

চলতি বছর জাতিসংঘ দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘নারীর সমঅধিকার, সমসুযোগ; এগিয়ে নিতে হবে বিনিয়োগ’। একই প্রতিপাদ্য ও স্লোগান নিয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ও জাতীয়ভাবে দিবসটি পালন করবে।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস ঘিরে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সারাদেশে শোভাযাত্রা, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এ ছাড়াও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে দিবসটি উদযাপন করবে। দিবসটি উপলক্ষে আলাদা আলাদা বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ ছাড়া আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে নানা ক্ষেত্রে অবদানের জন্য জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ পাঁচজন জয়িতাকে সম্মাননা দেওয়া হবে। সম্মাননা পাওয়া জয়িতারা পাবেন এক লাখ টাকার চেক, ক্রেস্ট, উত্তরীয় ও সনদ।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি।

প্রতিমন্ত্রী জানান, এ বছর জয়িতা পদক পাচ্ছেন— ময়মনসিংহের আনার কলি, রাজশাহীর কল্যাণী মিনজি, সিলেটের চা শ্রমিক কমলী রবিদাশ, বরগুনার জাহানারা বেগম ও খুলনার পাখি দত্ত হিজড়া।

প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন বলেন, এরই মধ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নাম নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

নারী দিবসের ইতিহাস

১৬৭ বছর আগে সমতার দাবিতে নারী শ্রমিকদের ত্যাগের বিষয়টি মনে করিয়ে দিতে প্রতিবছর আসে নারী দিবস। ১৮৫৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে মজুরি বৈষম্য, নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা ঠিক করা ও কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমে সরকারি বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকরা।

পরে ১৯০৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে প্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯১০ সালে ১৭টি দেশের ১০০ জন নারী প্রতিনিধির অংশগ্রহণে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন।

ওই সম্মেলনেই পরের বছর থেকে ৮ মার্চ দিনটিকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব আসে। সেই থেকেই ধীরে ধীরে ৮ মার্চ দিবসটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নারী অধিকারের প্রতীকে পরিণত হয়। অনেক দেশই সরকারিভাবে স্বীকৃতি দেয় দিবসটিকে। অনেক দেশেই এই দিনটি নারীদের জন্য রাষ্ট্রীয় ছুটি হিসেবে পালন করে থাকে।

রাষ্ট্রপতির বাণী

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) দেওয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘অর্থনৈতিক, সামাজিক, প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ আর্থসামাজিক বিভিন্ন খাতে অভাবনীয় সমৃদ্ধি, উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের নারীদের সাফল্যও আজ অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়।’

বিজ্ঞাপন

নারীর উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও নানাবিধ উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে বলে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি। নারীর সমঅধিকার ও সমসুযোগ এগিয়ে নিতে বিনিয়োগে প্রাধান্য দিয়ে গৃহীত প্রতিপাদ্য যথার্থ হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশে নারীদের সমঅধিকার, সমসুযোগ ও সুষ্ঠু বিকাশের লক্ষ্যে সরকার উন্নয়ন পরিকল্পনার নীতি, কর্মকৌশল হিসেবে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেছে। পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন ২০১০, পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা বিধিমালা ২০১৩, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭, যৌতুক নিরোধ আইন ২০১৮, ডিএনএ আইন ২০১৪ এবং নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০১৩-২০২৫ প্রণয়ন করা হয়েছে, যেগুলো বাংলাদেশে নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে মাইলফলক হয়ে থাকবে।

প্রধানমন্ত্রীর বাণী

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গৃহকর্মে নারীর শ্রম ও অবদানকে জাতীয় অর্থনীতিতে মূল্যায়নের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে প্রতিটি কাজে নারী-পুরুষের সম-অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে নারী-পুরুষ সমতা অর্জন ও নারী ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে বিনিয়োগ এবং জেন্ডার-রেসপনসিভ অর্থায়নকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নারীদের এগিয়ে নেওয়ার জন্য এবং ২০৪১ সালের উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক বিভিন্ন উদ্যোগ গৃহীত হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, মা ও শিশু স্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণ ও নারীদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। শুধুমাত্র চাকরিনির্ভর না হয়ে প্রতিটি নারী যেন নিজ নিজ ক্ষেত্রে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করতে পারেন এ লক্ষ্যে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমসহ তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। গৃহকর্মে নারীর শ্রম ও অবদানকে জাতীয় অর্থনীতিতে মূল্যায়নের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিসিএ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের উপকূলীয় এলাকায় নারীর জন্য জলবায়ুসহিষ্ণু বিকল্প জীবিকা এবং সুপেয় পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন সেবা প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীদের হাতের মুঠোয় এনে দেওয়ার জন্য কাজ করছে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্প।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের নারীসমাজ এগিয়ে যাবে প্রত্যাশা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের নারী-পুরুষ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব।

সারাবাংলা/আরএফ/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন