বিজ্ঞাপন

শিল্পীদের বেদনা বোঝার কেউ নেই

March 15, 2024 | 7:47 pm

অভ্র বড়ুয়া

একটি জাতির বেড়ে ওঠার ইতিহাসে,তার সংস্কৃতি সেই জাতির ক্রমবর্ধমান যাত্রার মেরুদন্ড। শিল্প একজন শিল্পীর জীবনের সবচেয়ে বড় আশ্রয়,আত্মপরিচয়ও বটে। একজন শিল্পী তার অটল সংকল্পের সাথে, তার নৈপুণ্যে তার আত্মা ঢেলে দেন, একটি জাতির বিকাশের মর্মকে লালন করার মাধ্যমে। তবুও, তাদের সৃষ্টির মহিমার মধ্যে, অচেনা আত্মত্যাগ এবং অপূর্ণ স্বপ্নের একটি মর্মান্তিক কাহিনী রয়ে যায়। যা উপলব্ধি করার মতো কেউ নেই।

বিজ্ঞাপন

একজন চিত্রশিল্পীর তুলির প্রতিটি গল্প, একজন কবির লেখা প্রতিটি স্তবক, একজন নৃত্যশিল্পীর প্রতিটি নৃত্যের ছন্দ, একজন সংগীতশিল্পীর নিবেদিত সংগীত প্রতিটি জাতির হৃদয়ের স্পন্দনে অনুরণিত হয়। তাদের অবদান শুধু সৃজনশীলতার ধারক নয়; তারা সময়ের মধ্য দিয়ে একটি সভ্যতার যাত্রার জীবন্ত প্রতিধ্বনি বয়ে নিয়ে যায়। জাতির সাংস্কৃতিক পরিচয় রক্ষার তাড়নায়, এই শিল্পীরা কখনও নিজেদের নিয়ে ভাবেন না। ভাবেন জাতি, রাষ্ট্র ও সমাজের ক্রমবর্ধমান উন্নতির কথা।

একজন প্রকৃত শিল্পী শিল্পী হয়ে ওঠেন কঠোর পরিশ্রম,অধ্যাবসায়,ত্যাগের মধ্যে দিয়ে। তারা খ্যাতি বা ভাগ্য খোঁজে না বরং ইতিহাসের ইতিহাসে তাদের শিল্পের জন্য একটু আশ্রয় এর চিহ্ন রেখে যেতে যান, যাতে প্রজন্ম হতে প্রজন্ম সেই শিল্পের ধারা বয়ে নিয়ে যেতে পারে। এত ত্যাগের পরেও তাদের অস্তিত্ব অনিশ্চয়তায় পরিপূর্ণ, তাদের প্রচেষ্টাগুলি তাৎক্ষনিক তৃপ্তি এবং অস্থায়ী প্রশংসার জন্য কোলাহল দ্বারা আবৃত থাকে! তারপর? সেটা বড় প্রশ্ন।

যেহেতু তারা তাদের সৃষ্টিতে,সৃজনশীলতায় জাতির অস্তিত্বকে খুঁজে পায় তাই তারা তাদের দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের রক্ষক হয়ে ওঠে। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করে। তবুও, তাদের অবদানগুলো মূল্যায়ন করার কেউ থাকে না। পাশাপাশি যোগ্য ও অযোগ্যের মানদন্ড নিয়ে আছে নানা প্রশ্ন।

বিজ্ঞাপন

সাংস্কৃতিক শিল্পীদের বেদনা তাদের সৃষ্টিতে অক্ষমতার মধ্যে নয় বরং তাদের তাৎপর্য স্বীকার করতে ব্যর্থ একটি সমাজের উদাসীনতায় নিহিত বলে আমি মনে করি। কতদিন তারা অজ্ঞাতসার ছায়ায় স্তব্ধ থাকবে, তাদের প্রতিভা অচেনা এবং অপ্রশংসিত হয়ে পড়ে থাকবে? উত্তরটি অধরা থেকে যায়, ক্ষণস্থায়ী প্রবণতা এবং ক্ষণস্থায়ী আকাঙ্ক্ষা দ্বারা অন্ধ সমাজের উদাসীনতার মধ্যে হারিয়ে যায়।

সাংস্কৃতিক শিল্পীদের বেদনা,না বলা নানা মনের কথা, তাদের একার নয়, শিল্প ও সংস্কৃতির প্রকৃত মূল্য উপলব্ধি করতে আমাদের সম্মিলিত ব্যর্থতার প্রতিফলন।আমরা যখন একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ে তোলার প্রয়াস নিয়ে থাকি আমাদের জাতির আত্মার প্রকৃত পথপ্রর্দশকদের আমরা যেন না ভুলি।

একটি জাতি হিসেবে একজন শিল্পীকে বাঁচার আনন্দটুকু দেওয়া,তার অভিমান বোঝা কী খুব দূরহের?

বিজ্ঞাপন

লেখক: শিক্ষার্থী

প্রিয় পাঠক, লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই ঠিকানায় -
sarabangla.muktomot@gmail.com

মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত মতামত ও লেখার দায় লেখকের একান্তই নিজস্ব, এর সাথে সারাবাংলার সম্পাদকীয় নীতিমালা সম্পর্কিত নয়। সারাবাংলা ডটনেট সকল মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে মুক্তমতে প্রকাশিত লেখার দায় সারাবাংলার নয়।

সারাবাংলা/এজেডএস

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন