বিজ্ঞাপন

ট্রেন লাইনচ্যুতিতে বিচ্ছিন্ন ঢাকা, চালু হতে লাগবে আরও ৬ ঘণ্টা

March 17, 2024 | 7:43 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের ৯টি বগি লাইনচ্যুত হওয়ায় সারাদেশের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে আরও পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা সময় লাগবে। এদিকে লাইনচ্যুতির ঘটনায় এরই মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন রেলের কর্মকর্তারা।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১৭ মার্চ) দুপুর পৌনে ২টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যাওয়া জামালপুরগামী বিজয় এক্সপ্রেস নাঙ্গলকোটের ঢালুয়া তেজের বাজার এলাকায় পৌঁছালে হঠাৎ লাইনচ্যুত হয়ে যায়। এ সময় লাইন থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রাম লেনে ট্রেনটির ৯টি বগি ছিটকে পড়ে। ওই ঘটনায় কোনো যাত্রী নিহত না হলেও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

রেলওয়ের কুমিল্লার ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) লিয়াকত আলী মজুমদার বলেন, হঠাৎ গরমের কারণে লাইন বেঁকে গিয়ে এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি।

আরও পড়ুন- গরমে বেঁকে গেছে রেললাইন, ট্রেনের ৯ বগি লাইনচ্যুত

বিজ্ঞাপন

এদিকে কুমিল্লার এই রেল দুর্ঘটনার পর সারাদেশের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. সরদার সাহদাত আলী সারাবাংলাকে বলেন, ‘লাইনের কী কী ক্ষতি হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখনো বলা যাচ্ছে না লাইন ক্লিয়ার হতে কত সময় লাগতে পারে।’

লাইনচ্যুতির ঘটনায় ঢাকা রেলপথে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকাগামী ট্রেনগুলো মাঝপথে থমকে গেছে। কোনো কোনো ট্রেন সময়মতো ছাড়তেই পারেনি।

দুপুর সাড়ে ১২টায় কক্সবাজার আইকনিক স্টেশন থেকে ঢাকার পথে ছেড়ে গেছে ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’। বিকেল ৩টার দিকে চট্টগ্রাম পৌঁছানোর পর ট্রেননি সেখান থেকে আর ছাড়তে পারেনি। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত লাইন ক্লিয়ারের কোনো সিগন্যাল না পেয়ে চট্টগ্রাম স্টেশনেই অপেক্ষায় ছিল ট্রেননি।

বিজ্ঞাপন

কক্সবাজার এক্সপ্রেসে অপেক্ষমাণ যাত্রীরা। ছবি: সারাবাংলা

কক্সবাজার এক্সপ্রেস ঘুরে দেখা যায়, তীব্র গরমে যাত্রীরা হাঁসফাঁস করছেন। বিশেষ করে বেশি সমস্যা হচ্ছে শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের। বিকেলের দিকে বেশির ভাগ যাত্রীকে প্লাটফর্মে হাঁটাহাঁটি করতে দেখা গেলেও সন্ধ্যায় গরমের মধ্যে বগিতেই বসে থাকতে দেখা গেল তাদের।

কক্সবাজার এক্সপ্রেসের যাত্রী পার্থ সারথী মজুমদার সারাবাংলাকে বলেন, প্রথমবারের মতো কক্সবাজার এসেছিলাম পরিবার নিয়ে। ভীষণ আনন্দ করেছি। এখন ফেরার সময় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মাইকে বলা হলো এক ঘণ্টা লাগতে পারে। এখন শুনছি, আরও পাঁচ-ছয় ঘণ্টা নাকি অপেক্ষা করতে হবে!

পার্থ আরও বলেন, ‘সব যাত্রীই বিপাকে পড়েছেন। একবার ভাবছি বাসে যাব। কিন্তু নাইট কোচগুলো ১২টার দিকে। তাই ট্রেন ছাড়ার জন্যেই অপেক্ষা করছি। তবে ট্রেনের লাইন ক্লিয়ার হতে ঠিক কত সময় লাগবে, সেটি সবাইকে বললে ভালো হতো। অনেকেই সেই অনিশ্চয়তায় ট্রেন থেকে নেমে বিকল্প উপায়ে ঢাকা পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।’

স্টেশনে হাঁটাহাঁটি করে যাত্রীরা সময় পার করার চেষ্টা করছেন। ছবি: সারাবাংলা

জানতে চাইলে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, নাঙ্গলকোটের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি এখন ঘটনাস্থলে। লাইনের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, সেটি দেখে তারপর ঠিক করার পদক্ষেপ নিতে হবে। একটু সময় লাগবে।

বিজ্ঞাপন

অবকাঠামো খাতে সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার খাত রেলখাত। গত এক যুগে রেলের পেছনে এক লাখ কোটি টাকারও বেশি খরচ করা হয়েছে। তবে তাতে সুফল মিলছে না। যখন তখন ঘটে যাচ্ছে দুর্ঘটনা। কখনো ট্রেন লাইনচ্যুত হচ্ছে, কখনো নষ্ট হচ্ছে ইঞ্জিন। মাসখানেক আগেও একবার ইঞ্জিন বিকল হয়ে কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী কক্সবাজার এক্সপ্রেস পথে অপেক্ষমাণ ছিল প্রায় ছয় ঘণ্টা।

সারাবাংলা/জেআর/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন