বিজ্ঞাপন

সম্পত্তির জন্য মায়ের প্রাণনাশের চেষ্টা, ২ ছেলে কারাগারে

March 31, 2024 | 6:12 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে সম্পত্তির জন্য মায়ের প্রাণনাশের চেষ্টার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় দুই ছেলেকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৩১ মার্চ) চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভূঁঞা তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মায়ের হত্যাচেষ্টা মামলার দুই আসামি হলেন- সুমন বড়ুয়া (৪২) ও অনুপম বড়ুয়া (৪০)। তাদের বাড়ি রাউজান উপজেলায়। বাসা নগরীর লালখান বাজারের হাই লেভেল সড়কে।

মামলার আরজির তথ্যানুযায়ী, তাদের বাবা সুজিত কুমার বড়ুয়া ২০২৩ সালের ১৯ এপ্রিল মারা যান। তিনি মার্স করপোরেশন নামে একটি সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের মালিক ছিলেন। নগরীর লালখান বাজারে স্ত্রী মিনু রাণী বড়ুয়ার নামে তিনি একটি ছয়তলা ভবন এবং আরও বিভিন্ন সম্পদ রেখে যান।

বিজ্ঞাপন

এ ছাড়া, জীবদ্দশায় তিনি রাউজানে শু-মিনু কমপ্লেক্স নামে একটি বৃদ্ধাশ্রম, চিকিৎসালয় ও বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ধ্যানাগার নির্মাণ শুরু করেছিলেন। সুজিতের মৃত্যুর পর মিনুর ভাই সমুদত্ত বড়ুয়া সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান এবং মিনু রাণী শু-কমপ্লেক্স নির্মাণ দেখভাল করছিলেন। তাদের তিন ছেলে- মিল্টন বড়ুয়া (৪৬), সুমন বড়ুয়া (৪২) ও অনুপম বড়ুয়া (৪০)।

আরজিতে মিনু রাণী অভিযোগ করেন, ছেলে সুমন বড়ুয়া মাদকাসক্ত ছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। সুজিতের মৃত্যুর পর থেকেই সুমন ও তার স্ত্রী শেলী বড়ুয়া সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা দেওয়ার জন্য মায়ের ওপর নির্যাতন শুরু করেন। বিষয়টি তিনি প্রবাসে থাকা ছেলে মিল্টনকে জানান।

২০২৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর মিল্টন দেশে ফিরে আসেন। কিন্তু মিল্টনও তাদের পক্ষ নিয়ে সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা দাবি শুরু করেন। ১ অক্টোবর মাকে এক কক্ষে আটকে মিল্টন, সুমন ও শেলী মিলে গলা টিপে ধরেন। তখন মিনুর ভাই সমুদত্ত এসে মীমাংসার কথা বলে তাকে ছাড়িয়ে নেন। পরে মিল্টন আবার বিদেশে চলে যান।

বিজ্ঞাপন

এরপর ৩ ডিসেম্বর মিনু তার স্বামীর স্মরণের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালনে রাউজানে গ্রামের বাড়িতে যান। আলাদাভাবে সুমন, শেলী, আরেক ছেলে অনুপম এবং ভাই সমুদত্তও সেখানে যান। আচার অনুষ্ঠান শেষে সম্পত্তি বিক্রি নিয়ে ফের মিনুর সঙ্গে ঝগড়া শুরু করেন তারা। এবার তাদের সঙ্গে সমুদত্তও যোগ দেন। সুমন ও শেলী মিলে মিনুকে গলা টিপে ধরেন, অনুপম একটি ধারালো বটি মায়ের দিকে ছুঁড়ে মারেন। তবে বটির আঘাত না লাগায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান। এরপর তারা আলমারি ভেঙে আড়াই লাখ টাকা নিয়ে শহরে চলে যান।

জেলা পিপি ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী সারাবাংলাকে জানান, সম্পত্তির জন্য বারবার নির্যাতনের ঘটনায় মিনু রাণী বড়ুয়া ২০২৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিন ছেলে, পুত্রবধূ ও ভাইসহ পাঁচজনের নামে মামলা দায়ের করেন। আদালত সরাসরি মামলা আমলে নিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

দুই আসামি সুমন ও অনুপম গত ১১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে অন্তবর্তীকালীন জামিন নেন। তাদের নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের শর্তে আগাম জামিন দেওয়া হয়েছিল। হাইকোর্টের আদেশে রোববার তারা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। দুপুরের দিকে তাদের কারাগারে নেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন