বিজ্ঞাপন

ডিবি, কাস্টম কর্মকর্তা, রিপোর্টার— নানা রূপে ছিনতাইকারী

March 31, 2024 | 8:07 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম নগরীতে দিনের বেলায় ডিবি পরিচয়ে ছিনতাইয়ের একটি ঘটনা তদন্তে নেমে পুলিশ ছয়জনের একটি চক্রকে গ্রেফতার করেছে।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ জানিয়েছে, এ চক্রের সদস্যরা কখনও পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্য, কখনও অনলাইন পত্রিকার সাংবাদিক আবার কখনও কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয়ে ছিনতাই করে। তাদের মূল টার্গেট থাকে বিদেশ ফেরত যাত্রীরা।

শনিবার (৩০ মার্চ) রাতভর নগরীর কোতোয়ালী, পতেঙ্গা ও হাটহাজারী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে, বৃহস্পতিবার দুজনকে গ্রেফতারের তথ্য দিয়েছিল পুলিশ।

গ্রেফতার ছয়জন হলেন সাজ্জাদ হোসেন সিফাত (২২), মুজিবুল হাসান তাসির (১৯), শাহাদাত হোসেন (৩৮), জাহাঙ্গীর আলম (৩৩), মো. হানিফ (৩৮) এবং মীর আহম্মদ বিপ্লব (৩৫)। এদের মধ্যে সিফাত ও তাসিরকে গত বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী— গত ২৫ মার্চ সকালে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী আত্মীয়ের পাঠানো কিছু মালামাল গ্রহণ করে প্রাইভেটকারে এক ব্যক্তি হাটহাজারীতে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। গাড়ি নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার লিংক রোডে পৌঁছার পর তিনজন ব্যক্তি ওয়াকিটকি দেখিয়ে ইশারায় সেটি থামায়। তারা নিজেদের ডিবি সদস্য পরিচয় দিয়ে গাড়িতে অবৈধ মালামাল তল্লাশির নামে সেখানে উঠে বসে।

এরপর গাড়ি মনছুরাবাদ ডিবি কার্যালয়ে নেওয়ার কথা বলে সিআরবিতে নিয়ে যায়। ভয়ভীতি দেখিয়ে ১২টি সোনার হাতের বালা, ৯টি সোনার কানের দুল, ৬টি সোনার লকেট, তিনটি মোবাইল সেট, তিনটি ল্যাপটপ ও ছয় কার্টন সিগারেট নিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় ওই ব্যক্তি ২৮ মার্চ কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন।

নগর পুলিশের কোতোয়ালী জোনের সহকারী কমিশনার অতনু চক্রবর্তী সারাবাংলাকে বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েই আমরা প্রথমে দুজনকে শনাক্ত করে চকবাজার থেকে গ্রেফতার করি। এরপর তাদের দেওয়া তথ্যে বাকি চারজনকে সর্বশেষ গ্রেফতার করা হয়েছে। চারজনের মধ্যে শাহাদাত, জাহাঙ্গীর ও হানিফ সরাসরি ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত। বিপ্লব ছিল এয়ারপোর্ট থেকে তাদের ইনফর্মার। সিফাত ও তাসির শাহাদাতের শ্যালক। তারা শাহাদাতের কাছ থেকে ছিনতাই করা ল্যাপটপগুলো বিক্রির জন্য নিয়েছিল।’

বিজ্ঞাপন

পুলিশ জানায়, ছিনতাইয়ের সময় ব্যবহৃত দুটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া ছিনতাই করা সোনার গহনা বিক্রি বাবদ প্রায় আড়াই লাখ টাকা, গলিত অবস্থায় প্রায় ৯০ গ্রাম সোনা এবং মোবাইল ও ল্যাপটপ ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ছিনতাইয়ের কৌশল প্রসঙ্গে এসি-কোতোয়ালী অতনু চক্রবর্তী বলেন, ‘সর্বশেষ গ্রেফতার চারজন সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। এরা প্রায়ই অনলাইন পত্রিকার রিপোর্টার পরিচয় দিয়ে বিভিন্নস্থানে গিয়ে সংবাদ সংগ্রহের নামে লোকজনকে হয়রানি করে, টাকা-পয়সা আদায় করে অথবা ছিনতাই করে। আবার বিদেশফেরত যাত্রীদের টার্গেট করে তারা কখনও ডিবি সদস্য, কখনও কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ছিনতাই করে।’

‘এয়ারপোর্টের আশপাশে কয়েকজন ইনফর্মার ঘোরাফেরা করে। তারা যাত্রীর তথ্য, গাড়ির নম্বর ছিনতাইকারীদের কাছে সরবরাহ করে। ছিনতাইকারীরা নির্দিষ্ট স্থান থেকে সেই গাড়িকে মোটর সাইকেলে চড়ে অনুসরণ করে এবং সুযোগ বুঝে গাড়ি আটকে ছিনতাই করে। গ্রেফতার শাহাদাত মাদকের মামলায় পাঁচ বছর সাজা খেটে কয়েক মাস আগে জেল থেকে বের হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে মামলা আছে কি না যাচাইবাছাই করছি,’— বলেন অতনু চক্রবর্তী।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন