বিজ্ঞাপন

রাজশাহীর সেই ২ শিশুর মৃত্যু বরই খেয়ে নয়: আইইডিসিআর

April 1, 2024 | 9:55 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

রাজশাহী: রাজশাহীতে দুই দিনের ব্যবধানে দুই শিশুর মৃত্যুর সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ খুঁজে পায়নি রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। অজানা কোনো ভাইরাসযুক্ত বরই খাওয়ার কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে— প্রাথমিকভাবে এমনটি মনে করা হলেও সে সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে সংস্থাটি।

বিজ্ঞাপন

আইইডিসিআর বলছে, কোনো খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে দুই শিশুর মৃত্যুর কোনো সংযোগ নেই। তাদের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে ‘মেনিনগোকক্কাস’ ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে সৃষ্টি ‘মেনিনগোকক্কাল মেনিনজাইটিস’ রোগে। বিষয়টি নিশ্চিত না হলেও এক শিশুর মরদেহ থেকে নেওয়া রক্তের নমুনা বিশ্লেষণ করে এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ধারণা করছে আইইডিসিআর।

সোমবার (১ এপ্রিল) আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন বলেন, আমরা এক শিশুর নমুনা পেয়েছিলাম। সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা গেছে, বরই কিংবা অন্য কোনো খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে শিশু দুটির মৃত্যুর সংযোগ নেই। রক্তের নমুনা বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা মেনিনগোকক্কাস ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ধারণা করছেন। তবে এটিও প্রমাণিত নয়, সন্দেহ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন- ‘বরই খেয়ে’ ২ বোনের মৃত্যু, মা-বাবা আইসোলেশনে

বিজ্ঞাপন

আইইডিসিআর পরিচালক আরও বলেন, কোনো খাবার নয়, আশপাশের পরিবেশ সাধারণত এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটিয়ে থাকে।

এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মারা যায় শিশু মুফতাউল মাশিয়া (৫)। এর দুই দিন আগে ১৪ ফেব্রুয়ারি একই উপসর্গ নিয়ে মারা যায় তার ছোট বোন মুনতাহা মারিশা (২)।

দুই শিশুর বাবার নাম মনজুর রহমান (৩৫) রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক। তার স্ত্রী পলি খাতুন (৩০) গৃহিণী। তাদের বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার চুনিয়াপাড়া গ্রামে। তবে তারা চারঘাটের সারদায় ক্যাডেট কলেজের কোয়ার্টারেই থাকেন।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- শনাক্ত হয়নি নিপাহ ভাইরাস, অজানাই থাকল ২ বোনের মৃত্যুর কারণ

শিশু দুটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে কোয়ার্টারের কাজের বুয়া ক্যাম্পাসের গাছ থেকে বরই কুড়িয়ে এনে দুই শিশুকে খেতে দিয়েছিলেন। না ধুয়েই ওই বরই খেয়েছিল দুই শিশু মারিশা আর মাশিয়া। পরদিন (১৪ ফেব্রুয়ারি) মারিশার জ্বর আসে। বারবার পানি খাচ্ছিল। দুপুরের পর শুরু হয় বমি। রাজশাহী সিএমএইচে নেওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।

১৬ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) মাশিয়ারও জ্বর আসলে শুরু হয় বমি। তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে সিএমএইচে নেওয়া হয়। তারও শরীরে ছোপ ছোপ কাল দাগ উঠতে শুরু করে। তা দেখে চিকিৎসকেরা মাশিয়াকে রামেক হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। রাতে রামেক হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

পরদিন ১৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেলে মাশিয়াও মারা যায়। তার মরদেহ থেকে রক্ত ও পাকস্থলী থেকে খাবারের নমুনা সংগ্রহ করেন চিকিৎসকেরা। ছোট মেয়ে মারিশার লাশ আগেই দাফন করায় কোনো নমুনা সংগ্রহ করা যায়নি। আর তখন ওই দুই শিশুর মা-বাবাকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়। পরে স্বজনদের মাধ্যমে মাশিয়ার লাশ গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন