বিজ্ঞাপন

নববর্ষ বরণে প্রস্তুত ছায়ানট

April 6, 2024 | 4:23 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বর্ষবরণে প্রস্তুত ছায়ানট। ‘স্বাভাবিকতা এবং পরস্পরের প্রতি সম্প্রীতির সাধনা’ এই প্রত্যয়ে এবার রমনা বটমূলে নতুন বাংলা বছরকে বরণ করবে ছায়ানট। ১৪৩১ বঙ্গাব্দের নতুন প্রভাতে গানে আর পাঠে থাকবে অন্ধকার থেকে আলোর সন্ধান। প্রায় দেড় শতাধিক শিল্পীর অংশগ্রহণে সেই প্রভাতী আয়োজনের মহড়া চলছে ছায়ানট ভবনে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৬ এপ্রিল) ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমেদ লিসা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নির্বাহী সভাপতি ডা. সারওয়ার আলী, সহ-সভাপতি আতিউর রহমান, সহ-সভাপতি খায়রুল আনাম শাকিল ও যুগ্ম সম্পাদক জয়ন্ত রায়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বর্ষবরণ সার্থক করতে প্রায় আড়াই মাস আগে থেকে গান তোলা আর গলা মেলানোর কাজে নেমেছে শতাধিক ক্ষুদে ও বড় শিল্পী। রমনা উদ্যানে দুই ঘন্টাব্যাপী এই আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার। দেখা যাবে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেলেও।

লাইসা আহমেদ লিসা বলেন, রমনা বটমূলে ভোরের আলো ফুটতেই আহীর ভৈরব রাগে বাঁশির সুরে এবারের নতুন বছরকে আবাহন করা হবে। পুরো অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে নতুন স্নিগ্ধ আলোয় স্নাত প্রকৃতির গান, মানবপ্রেম-দেশপ্রেম আর আত্মবোধন জাগরণের সুরবানী দিয়ে। যোগ হয়েছে জাতীয় কবির কালজয়ী সৃষ্টির বিজাতীয় অবমাননার প্রতিবাদ এবং লেখনীর দুর্দম শক্তিতে বাঙালির গণজাগরণে স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে চলা আবু বকর সিদ্দিককে স্মরণ।

বিজ্ঞাপন

ছায়ানট কর্মীদের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করবে লাউড ওয়ার্কস এবং থার্টিনথ হুসার্স ওপেন রোভার গ্রুপ।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘বিশ্বব্যাপী বস্তুর প্রতি মানুষের আকর্ষণ যেভাবে বেড়েছে, সেভাবে কমেছে মানুষের প্রতি মমত্ববোধ, যার ফলে ক্ষয়ে চলেছে মানবতা, ক্রমান্বয়ে অবক্ষয় ঘটছে মূল্যবোধের। মানুষের সঙ্গে মানুষের দূরত্বের ক্রমবৃদ্ধিতে, অন্য মানুষের প্রতি আচরণের অস্বাভাবিকতায় আজ আমরা মুখোমুখি নতুন সংকটের। তবে এই সংকটে আমরা আশাহত হই না, দিশা হারাই না, বিশ্বাস করি মানুষের কাছে গিয়ে, মানুষের হাতে হাত রেখে সবার সাথে মিলবার, চলবার, গাইবার সাধনাই মানুষকে আবার ফিরিয়ে আনবে মানুষের কাছে।’

বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘স্বাভাবিকতা ও পরস্পরের প্রতি সম্প্রীতির সাধনায় আমাদের যুক্ত হতে হবে। মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসার শক্তিতে বাঙালি মনুষ্যত্বের জয়গান গাইবে, উচ্চারণ করবে, “কত শতাব্দী করেছি মা পাপ মানুষেরে করি ঘৃণা, জানি মা মুক্তি পাব না তাহার প্রায়শ্চিত্ত বিনা, পরম প্রত্যয়ে বলবে হিংসা আর নিন্দা ছাড়ো মনটা করো পরিষ্কার।” মানুষকে ভালোবেসে নিজেকে সার্থক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আঁধার রজনী শেষে নবীন আলোয় নবীন আশায় নবীন জীবন লাভ করে সুদিনের পথে চলব আমরা, বাঙালিকে বলব, নাই নাই ভয়, হবে হবে জয়। এবারের নববর্ষের প্রথম প্রভাতে, আমরা মানুষের জয়গান করব, ভোগবাদ নয়, স্বার্থপরতা নয় মনুষ্যত্বকে পাওয়ার অভিলাষী ছায়ানটের আহ্বান, স্বাভাবিকতার সাধনা এবং সম্প্রীতির ধ্যান— দূর করো আত্মকেন্দ্রিকতা, আপনি জ্বালো এই তো আলো।’

বিজ্ঞাপন

খায়রুল আনাম শাকিল বলেন, নববর্ষের আয়োজনের মাধ্যমে আমরা সমাজের অবক্ষয় রোধ করতে চাই। উৎসব মানে শুধু নাচ-গান নয়, বরং বাঙালি সংস্কৃতি, কৃষ্টি, কালচারের চর্চা কর‍তে হবে। আর বাঙালির আবহমান সংস্কৃতির চর্চা বজায় না রাখতে পারলে সামাজিক অবক্ষয় দূর করা সম্ভব না।

সারাবাংলা/আরএফ/ইআ

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন