বিজ্ঞাপন

ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে সম্প্রীতির ইফতার

April 9, 2024 | 6:15 pm

মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ

প্রায় শেষ হয়ে এসেছে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র রমজান মাস। সিয়াম সাধনার এ মাসে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে অবস্থান মুসলিম শিক্ষার্থীরাও রোজা পালন করেন। দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা এসব শিক্ষার্থীকে থাকতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল বা মেসে, পরিবার থেকে শত মাইল দূরে। তাই চাইলেও বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সেহেরি কিংবা ইফতারের সুযোগ পান না। তা নিয়ে মন খারাপও হয়। তবে পরিবারের সেই শূন্যতা অনেকাংশেই দূর করে ক্যাম্পাসে বন্ধু কিংবা সহপাঠী-সিনিয়র-জুনিয়র সবাই মিলে ইফতারের আয়োজন।

বিজ্ঞাপন

রমজান মাসে ইফতার ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে সরগরম পরিবেশ বিরাজ করে। হলগুলোতে একটি রুমের বাসিন্দারা যেমন সবাই একসঙ্গে ইফতার করেন, তেমনি প্রায়ই একাধিক রুমের সব শিক্ষার্থী মিলেও একসঙ্গে ইফতার করে থাকেন। বিভাগের বন্ধুরা মিলে আয়োজন করা হয় ইফতার। হলের বা ক্যাম্পাসের একই এলাকার সিনিয়র-জুনিয়রদের আয়োজনেও ইফতার হয়। দলবেঁধে ইফতার সামগ্রী কেনা ও ইফতার আয়োজন রীতিমতো উৎসবে পরিণত হয়। পরিবারের বাইরে এ যেন এক নতুন পরিবার। সম্মিলিত ইফতারের এই আয়োজন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোর ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বিজ্ঞাপন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একসঙ্গে ইফতার করে থাকেন। ইফতার উপলক্ষে সন্ধ্যা নাগাদ মুখরিত হয়ে ওঠে টিএসসি এলাকা। এ ছাড়াও ক্যাম্পাসের সড়কদ্বীপ, মিলন চত্বর, হাকিম চত্বর, কার্জন হল, রোকেয়া হলের সামনে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটক, সবুজ চত্বর, মলচত্বর, বিভিন্ন হলের মাঠসহ ক্যাম্পাসের আনাচে-কানাচের সব জায়গা সরগরম হয়ে ওঠে ইফতার করতে আসা শিক্ষার্থীদের পদচারণায়।

শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া তরুণদেরও ইফতারের প্রিয় স্থান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। সবার উদ্দেশ্য, সারা দিনের সিয়াম সাধনার পর বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে আনন্দে ইফতার করা এবং ইফতারের পর একসঙ্গে আড্ডা দেওয়া।

শিক্ষার্থীদের ইফতারে ছোলা, মুড়ি, খেজুর, জিলাপি, বেগুনি, পেঁয়াজু, চিকেন, পাকোড়া, বুন্দিয়া, আলুর চপের পাশাপাশি থাকে বিভিন্ন রকমের পানীয়, শরবত, জুস, কলা, আপেলসহ নানা জাতের ফল। কেউ কেউ ভালো রেস্তোরাঁ থেকে বিরিয়ানি বা পোলাও আনেন। অনেকেই আবার ইফতার তৈরি করে আনেন বাসা বা হল থেকে। সবুজ ঘাসের ওপর খবরের কাগজ বিছিয়ে ইফতারের পাশাপাশি চলে জমজমাট আড্ডা।

বিজ্ঞাপন

এ ছাড়াও টিএসসির মূল মিলনায়তন, গেমস রুম, ক্যাফেটেরিয়া কিংবা সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর কার্যালয়েও চলে নানা ধরনের ইফতার আয়োজন। এসবের আয়োজনে থাকে মূলত বিভিন্ন জেলা সংগঠন, টিএসসির সামাজিক সংগঠন ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-কর্মকর্তা এবং সাবেক শিক্ষার্থীরাও তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে ইফতার করতে আসেন ঢাবি ক্যাম্পাসে, খুঁজে ফেরেন শিক্ষাজীবনের স্মৃতি।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির মেলবন্ধনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার, অবকাশ ভবন, শান্ত চত্বর, মুক্তমঞ্চ, কাঁঠালতলা, রফিক ভবনের প্রতিটি তলার বারান্দা, বিবিএ ভবনের নিচতলায় পুরোটা, বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণ, পোগোজ স্কুলের খেলার মাঠ ছাড়াও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন আঙিনায় জমে ওঠে ইফতারের মহোৎসব। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণোচ্ছ্বল পরিবেশ দেখা যায় শহিদ মিনারে।

বিজ্ঞাপন

ক্যাম্পাসের জুনিয়র সিনিয়র সবার সম্মিলিত অংশগ্রহণে ইফতার আয়োজনের প্রস্তুতিতে রমজান মাসের বিকেল থেকেই জবি ক্যাম্পাস হয়ে ওঠে উৎসবমুখর, প্রাণচঞ্চল। ক্যাম্পাসে ছোট ছোট দলে ছড়িয়ে আড্ডা গল্পের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা ইফতারের আয়োজন করেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় করার প্রত্যয়ে ইফতার আয়োজন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, টিএসসি, আবাসিক হল, ‘টারজান’ পয়েন্ট, পরিবহন চত্বর ইত্যাদি বহুল পরিচিত স্থানে শিক্ষার্থীরা ইফতার করেন। এ ছাড়াও আবাসিক হলের ছাদ, মাঠ, ডাইনিং-ক্যানটিনেও ইফতারে মিলিত হন শিক্ষার্থীরা। তবে ইফতারের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, যা শিক্ষার্থীদের কাছে ‘সেন্ট্রাল ফিল্ড’ নামে পরিচিত। তবে বন্ধুমহল ছাড়াও সিনিয়র-জুনিয়র, বিভিন্ন বিভাগ ও সংগঠনও ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

প্রতিদিন বিকেল হলেই খেলার মাঠ শিক্ষার্থীদের ছোট ছোট জটলায় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে। তীব্র গরম, আকাশে বজ্রের চোখ রাঙানি, কাকভেজা বৃষ্টি কিংবা প্রচণ্ড শীত— কোনো ঋতু বা কোনো আবহাওয়াতেই যেন এর ব্যতিক্রম নেই। বর্তমান শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অনেক সাবেক শিক্ষার্থী, এমনকি আশপাশের বহিরগতরাও এখানে ইফতার করতে আসেন। ক্যাম্পাসে অবস্থানরত পথশিশু কিংবা দুঃস্থ-অসহায় ব্যক্তিদেরও শিক্ষার্থীরা নিজেদের ইফতারের অংশ করে নেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হল, ক্যাফেটেরিয়া, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, শহিদ মিনার, স্টেশন চত্বর, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণসহ বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা দলবেঁধে ইফতারের আয়োজন করেন। অনেকেই বন্ধুদের নিয়ে ক্যাম্পাসের সবুজ ঘাসের ওপর পত্রিকা বিছিয়ে ইফতার করেন। এতে যেন সব ক্লান্তি নিমেষেই দূর হয়ে যায়।

ক্যাম্পাস জীবনের শুরু থেকেই একই হল বা বিভাগের বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থী-বন্ধুদের ইফতার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ। সামাজিক সৌহার্দ্য ও বন্ধন দৃঢ় করতেও এই ইফতার ভূমিকা রাখে বলে মনে করেন তারা। ক্যাম্পাসে যে শুধু বর্তমান শিক্ষার্থীরা ইফতার করেন তা কিন্তু নয়, দূরদূরান্ত থেকে দলবেঁধে সাবেকরাও একসঙ্গে ইফতার করতে ছুটে আসেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিকেল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন খেলার মাঠে খোলা আকাশের নিচে দেখা যায় ইফতার আয়োজনের দৃশ্য। বন্ধু-বান্ধব ও পরিচতজনদের নিয়ে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে ইফতার আয়োজন করেন শিক্ষার্থীরা। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই অংশগ্রহণ করেন এসব ইফতারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ হবিবুর রহমান হল মাঠ, শেখ রাসেল মডেল স্কুল মাঠ, শহিদ মিনার চত্বর, ইবলিশ চত্বর ও সাবাস বাংলাদেশ মাঠে ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর ছাদ, টিভিরুমসহ বিভিন্ন বিভাগের কক্ষেও ইফতার আয়োজন হয়ে থাকে। এর মধ্যে থাকে বিভিন্ন বিভাগ ও ব্যাচের পক্ষ থেকে আয়োজিত ইফতার। থাকে জেলাভিত্তিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সাংবাদিক সংগঠনসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত ইফতার।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, শহিদ মিনার, মুক্তমঞ্চ, কাঁঠালতলা, ক্যাফেটেরিয়ার ছাদ, বিভিন্ন বিভাগের করিডোর, অনুষদের হলরুম, ছাদের আঙিনা, ব্যাডমিন্টন কোর্টসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে শিক্ষার্থীদের আয়োজনে জমে ওঠে ইফতার উৎসব। এসব স্থানগুলোর পরিবেশ হয়ে ওঠে প্রাণোচ্ছ্বল। ক্যাম্পাস রূপ নেয় সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির ভ্রাতৃত্বের মেলবন্ধনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বন্ধুদের সঙ্গে মিলেমিশে ইফতার আয়োজন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, আঞ্চলিক সংগঠনগুলোও ইফতারের আয়োজন করে থাকে। এতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকরাও সামিল হন।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

রমজানের শিক্ষা নিজেদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ ও সর্বস্তরে ইসলামি সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ইফতারের আয়োজন করেন। আসরের নামাজের পর থেকেই একে একে জড়ো হতে থাকেন সবাই। অনেকেই কোরআন তিলাওয়াত, হামদ-নাত ও ইসলামি বিভিন্ন পরিবেশনার পর দোয়া ও মোনাজাত পর্বের মধ্য দিয়ে ইফতারের আগের সময়টুকু পার করেন।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়

ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসজুড়ে ইফতারকে কেন্দ্র করে চলে উৎসবের আমেজ। আসরের আজানের পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠ, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের আশপাশে দেখা যায় দলে দলে ইফতার প্রস্তুতির দৃশ্য। প্রতিদিন বিকেল হতেই শিক্ষার্থীদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলে বিভক্ত হয়ে বাহারি পদের ইফতারির আয়োজন করতে দেখা যায়। ক্যাম্পাসের খোলা জায়গায় বা মাঠে চলে সম্প্রীতির এই আয়োজন। ইফতার শেষে মাঠেই নামাজ পড়েন অনেকে।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের গোলচত্বরে ইফতারের আধা ঘণ্টা আগে থেকেই শিক্ষার্থীরা হাতে ইফতারসামগ্রী নিয়ে জড়ো হতে থাকেন। পত্রিকার কাগজ ও জায়নামাজ বিছিয়ে সারিতে বসেন। ইফতারের আগে তাদের কয়েকজন হামদ-নাতও পরিবেশন করেন।

শিক্ষার্থীদের মতে, ক্যাম্পাসের ইফতারের আয়োজন সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির এক অনন্য বন্ধন। বছরের পর বছর ধরে এ সংস্কৃতি চলছে। সবাই একত্রে ইফতার করা নিয়ে সব শিক্ষার্থীর মনে একটা আবেগ কাজ করে। সবাই মিলে ইফতারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, অ্যাগ্রোনমি ফিল্ড, টিএসসির সিঁড়ি, কৃষি অনুষদ মাঠ, শহিদ মিনার ও হলগুলো ইফতারের ঠিক আগ মুহূর্তে প্রাণের আড্ডায় জমে ওঠে। ক্যাম্পাসজুড়ে বিরাজ করে অন্যরকম আনন্দানুভূতির এক আবেশ। রমজানে প্রতিদিনই দেখা যায় মাঠে বিভিন্ন ল্যাব গ্রুপ অথবা সময়ের পরিক্রমায় বন্ধু ও বড়-ছোট ভাইদের নিয়ে গোল হয়ে বসে আছেন তরুণ-তরুণীরা। শিক্ষার্থীদের আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্নার ক্যাম্পাস জীবনে অন্যরকম অনুভূতি যোগ করে ইফতারের আনন্দ। ইফতারের পর কেন্দ্রীয় মাঠ, জহির ক্যানটিন, টংয়ের দোকানে এক কাপ চায়ের সঙ্গে চলে পুরোদমে আড্ডা।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ইফতার আয়োজন করেন। ক্লাস-পরীক্ষা ও টিউশনির ব্যস্ততা শেষে শিক্ষার্থীরা দলে দলে জড়ো হতে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠসহ মুক্তমঞ্চ, হলের ছাদ কিংবা টিএসসিসহ বিভিন্ন চত্বরে। উদ্দেশ্য সহপাঠী বা সিনিয়রদের নিয়ে একসঙ্গে ইফতারে অংশগ্রহণ। সচরাচর ইফতার আয়োজনে থাকে খেজুর, শরবত, ছোলা, বেগুনি, আলুর চপ, জিলাপি, পেয়ারাসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল। সবার সম্মিলিত অংশগ্রহণে সৌহার্দ্যের মেলবন্ধনে প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে ইফতারের আয়োজন। রোজা মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের ইবাদত হলেও ইফতারে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়ে থাকেন অন্য ধর্মাবলম্বী বন্ধুরাও।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে রীতিমতো উৎসবের আবহ ছড়িয়ে পড়ে প্রথম রমজান থেকেই। এ ছাড়া হলের ছাদ ও ডাইনিংসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে বন্ধু-বান্ধব এবং সিনিয়র-জুনিয়রদের দলবদ্ধ হয়ে ইফতার করতে দেখা যায়। প্রতিদিন বিকেল হলেই শিক্ষার্থীদের ছোট ছোট জটলায় পূর্ণ হয়ে ওঠে কেন্দ্রীয় মাঠটি। বিস্তৃত সবুজ মাঠজুড়ে সবাই প্রস্ততি নিতে থাকে ইফতারির জন্য। দলের মধ্যে কেউ ছোলা মুড়ি মাখাতে ব্যস্ত, কেউ ব্যস্ত শরবত বানাতে। কেউবা আবার গল্প আড্ডায় জমিয়ে রাখেন আসর। এদিকে ইফতার আয়োজনে অন্য ধর্মের শিক্ষার্থীরাও যোগ দিয়ে থাকেন। আবার ইফতার শেষে মাঠেই জামাতে নামাজ আদায় করেন অনেক শিক্ষার্থী।

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিদিন বসে সিনিয়র-জুনিয়রদের সম্প্রীতির ইফতার বসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ফিল্ডে ইফতারকে কেন্দ্র করে মুখরিত হয়ে উঠে। ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে অন্যান্য ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরাও ইফতার কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়। সারিবদ্ধ হয়ে ইফতার একরকম চাঞ্চল্যতা বিরাজ করে পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে।

হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা টিএসসিতে প্রতিদিন ইফতারের আয়োজন করে থাকেন। ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থীরা আলাদা আলাদাভাবে বসে ইফতার গ্রহণ করেন। কখনো হলের বন্ধুরা, কখনো বিভাগের বন্ধুরা মিলে আয়োজন হয় ইফতার।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিদিন কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, স্বাধীনতা চত্বর মাঠ, ক্যাফেটেরিয়ার সামনের মাঠ, সেন্ট্রাল লাইব্রেরির আশপাশে ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পয়েন্টে চলে শিক্ষার্থীদের ইফতার উৎসব। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ছাড়াও মাঝে মধ্যে দর্শনার্থীরাও ক্যাম্পাসে বসে ইফতারের স্বাদ নেন।

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন