বিজ্ঞাপন

একশৃঙ্গ গণ্ডারের দেখা পেতে কাজীরাঙ্গা ফরেস্টে

April 9, 2024 | 6:18 pm

প্রণব সাহা

ভ্রমনসূচীতে উল্লেখ না থাকলেও গোধূলী লগনে আমরা পৌছেছিলাম ভারতের সবচেয়ে উঁচু শিবলিঙ্গের কাছে। বলা যায় একটা অনির্ধারিত ভেনুতে নিয়ে আমাদের তাক লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। নিঃসন্দেহে সফল হয়েছিল আমাদের গাইড ওয়েঙ, পুরো নাম তেসরিঙ ওয়েঙ উত্তর-পুব ভারত যার নখদর্পণে। কোলকাতা থেকে আকাশপথে আসামের গোহাটি বিমানবন্দরে নামার পর বন্ধু অনিল ওরাওয়ের উষ্ণ অর্ভ্যথনায় আপ্লুত হয়ে যখন আরামদায়ক ইনোভায় চাপলাম তখন মূল গন্তব্য ছিল কাজিরাঙ্গা ফরেস্ট। যেখানে আমাদের অপেক্ষায় ছিল একশিঙের গন্ডার। তার আগেই দীর্ঘ উচ্চতার শিবলিঙ্গ অবাক করেছিল সবাইকে।

বিজ্ঞাপন

সতীর্থদের তাড়া ছিল তাই দু-তিনটি ক্লিক করেই আবারও গাড়িতে, যা ছুটল অরণ্য লজের উদ্দেশ্যে। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল মহা-মৃত্যুঞ্জয় নামের এই শিবলিঙ্গের উচ্চতা ১২৬ ফুট। আচার্য ভৃগগিরি মহারাজ আসামের গোহাটি থেকে ১২০ কিলোমিটার দুরে নাগাও নামের গ্রামে ধ্যান করতেন, সেখানেই ২০০৩ সালে এই শিবলিঙ্গ মন্দির বানানোর প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছিল। প্রাণ-প্রতিষ্ঠা মহৎসবের মধ্য দিয়ে মন্দিরের দ্বার উদঘাটন হয়েছিল ২০২১ সালের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে। কয়েকমাস পরে এপ্রিলের ২৮ তারিখে আসামে ৬.৭ রিক্টর স্কেলের ভূমিকম্পে কাঠামোগত কোনও ক্ষতি না হলেও উপরের অংশে যে ফাটল ধরেছিল তাকে “অর্নামেন্টাল ডেমেজ’’ বলেছিলেন প্রকৌশলীরা।

সময়ের অভাবে খুব কাছে যাওয়া হলো না, দেখা হলো না মহা-মৃত্যুঞ্জয়ের মূল আর্কষণ- এর বেসমেন্ট। স্থ্যপত্যকলা, আধুনিক প্রকৌশল আর শিব-মহেশ্বরের অগুনিত ভক্তের আকুতি এবং পূজারীদের নিবেদন দেখার সুযোগ মিলল না। শিব-চর্তুদর্শীর পুজায় সারাদিন উপবাস থেকে সন্ধ্যা বা রাতে শিবের মাথায় জল ঢালে সনাতন নারী পুর্ণ্যাথীরা। অল্প সময় থেকেই আমরা ভেতরে না গিয়ে চলে এসেছিলাম মহামৃত্যুঞ্জয় মন্দিরের সামনে থেকে। ফলে জানা হলনা পুজা-আর্চা কীভাবে হয় মহামৃত্যুঞ্জয় মন্দিরে?

আবার বনের পথে আমরা। যখন ঢুকলাম কাজীরাঙ্গা ফরেস্টের ভেতরে, তখন সুর্য্য অস্ত গেছে। জেঁকে বসেছে মাঘের শীত। কাঁপতে কাঁপতে গাড়ি থেকে নেমে লজের ভেতরে আশ্রয় নিলাম। স্টিলের জগে ধোঁয়া ওঠা গরম জলের গল্পের আগে জানিয়ে দেই অনুরাগ ধাবার কথা। যেখানে ছিল ক্ষুধা পেটে এক দারুন মধ্যাহ্ন ভোজনপর্ব। পেটে ছুঁচো ডন দিচ্ছিল; ফলে মেনু নয় দরকার ছিল দ্রুত খাওয়া। অনুরাগ ধাবার নাম বলে দিয়েছিল অনিল ওরাও, ভারতীয় পর্যটন বিভাগের উত্তর-পুর্ব সাতরাজ্যের পরিচালক, পুরোনো বন্ধু আমাদের। অনুরাগ ধাবার সামনে গাড়ি যখন থামল, তখন সেটিতে ভীড় ততটা নয়। আমরা হাত ধুয়ে নির্ধারিত টেবিলে বসতেই চলে এলো রাইস থালি। তবে হ্যাঁ, রুটিও ছিল সেখানে।

বিজ্ঞাপন

পঞ্চ বা অষ্টব্যাঞ্জন নয়, কাসার থালায় গোল করে ভাতের পাশে গুনে দেখি ১০ পদ। নানান রকম ভাজির সাথে পাপড় আর ছিল ধনেপাতা ভর্তা, উকি দিচ্ছিল একটু সর্ষে বাটাও। সাথে সাথে এলো গরম গরম মুরগীর মাংস, মাছ ভাজা আর ঘন ডাল। তৃপ্তির সাথেই খেতে খেতে দেখি নারী পরিবেশন কর্মীরা হাতে ফুলের সাজির মত পাত্রভরা ভাত নিয়ে ঘুরছেন আর জানতে চাইছেন আরও একটু ভাত নিব কি না? চাইলাম পেঁয়াজ-মরিচ- চলে এলো। সাথে আম আর জলপাইয়ের আচারও। নানান পদের খাবারের স্বাদের চেয়েও পরিবেশনায় সুরুচির ছাপটা চোখে পড়ল, মনেও ধরলো। ভারতজুড়ে থালির সুনাম আছে, আসামের থালিও ভাল লাগল। ১০ বছর আগে আরও একবার গিয়েছিলাম আসামে। সেবার কলকাতা থেকে গোহাটি বিমান বন্দরে নেমে উড়ে গিয়েছিলাম অরুনাচলের তাওয়াংয়ে। সেখানে থেকে উড়ে এসে সড়কপথে গিয়েছিলাম নাগাল্যান্ড। এবার অল্প হলেও বোঝার চেষ্টা করলাম অসম আসামকে।

কাজিরাঙ্গা ফরেস্টের অরন্য লজে দেখেছি অসম-আসামের লগো। সেই লজের রাতের নৈশভোজের খাবারও ভাল ছিল। ছিল স্টিলের জগে ধোঁয়া ওঠা গরম জল, কারন শীতও ছিল বেশ। ডাইনিংয়ের সাথেই বারে ঝুলছিল দারুন সব গ্লাস। কিন্তু তরলের কোনও আয়োজন ছিল না সেই রাতে। যদিও তুলেছিলাম একটা নামফলকের ছবি। যেখানে এক শিঙের গন্ডারের অসম-আসামের লগোর পাশে লেখা ছিল “বাফেলো বার’’। ঝুলিয়ে রাখা গ্লাস আর সাজিয়ে রাখা বোতল চোখে পড়ল কিন্তু গলায় কোনও তরল পড়ল না। কারন পরের দিন ঘুম থেকে উঠতে হবে খুব ভোরে, অপেক্ষা করছিল এলিফ্যান্ট সাফারি। নৈশভোজের পর চাঁদের আলোতে হাটবার সাধ জাগলো সৈয়দ মাহবুব বুলু ভাইয়ের, মন খারাপ তার। কারন “বাফেলো বার’’ নামটা আমার সাথে তারও খুব পছন্দ হলেও তার সদ্ব্যবহার করা গেল না। শীতটা জাঁকিয়ে বসেছিল কাজিরাঙ্গা ফরেস্টে। সিগেরেটের ধোঁয়ায় কিছুটা আগুন পোহানোর চেষ্টা- কিন্তু আরাম হলো না। যদিও রুটি আর ভাতের সাথে আলুর দম, মুরগির ঝাল মাংস আর ডাল-মাখনি ভালই সাঁটিয়েছিল সবাই। ভোরে ওঠার তাড়া ছিল আর সাথে ছিল কলকাতা থেকে উড়ে এসে গাড়িতে চড়ে দীর্ঘপথ পাড়ি দেবার ক্লান্তি। শয্যাদেবীর কোলে নিজেকে সঁপে দিতে হলো, আর পূরণ হলো কাজিরাঙ্গা ফরেস্টে রাত কাটানোর ইচ্ছেটাও।

গভীর ঘুমে পাখির ডাক শুনিনি তবে হাতির পিঠে উঠে গন্ডার দেখবার আগ্রহে ঘুম ভেঙেছিল সময়মতো। দ্রুত ঠান্ডা হওয়ার আগেই চায়ে চুমুক। অতিসকালে বিছানা ছাড়ার দুঃখটা চলে গেল দ্রুতই। ঝটপট নাস্তার তাড়া দিচ্ছিল ওয়েঙ, উত্তর-পুর্ব ভারতের সবকিছু যার মুখস্ত। সেই-ই আমাদের ট্যুরগাইড। যার তাড়ায় দ্রুত নাস্তা খেয়ে, বেরিয়ে পড়লাম কাজিরাঙার সৌন্দর্য দর্শনে। গাছের সবুজ নয় আমাদের লক্ষ্য এক শিঙের গন্ডার আর গোল্ডেন টাইগার। কথা ছিল এলিফ্যান্ট সাফারি হবে, তবে তাতে সময় লাগবে বেশি আর শীতের ধাক্কায় আমরা অনেকটাই জড়োসড়ো। তাই চাপলাম খোলা জিপে। কান টুপি ফেলে এসেছি, যখন ছুটল ছাদখোলা জীপ, তখন মনে হলো চড়েছি আমাদের বান্দরবানের চান্দের গাড়িতে। মাঘের শীত কেটে বসছিল চামড়ার ভেতরে, নিজেকে স্বান্তনা দিলাম বাঘ দেখলে শীত কেটে যাবে। তবে সবার আগে দেখা মিলেছিল গন্ডারের এবং সে আমাদের স্বাগত জানাল প্রাতঃক্রিয়া দেখিয়ে।

বিজ্ঞাপন

বনের ভেতরের সরু রাস্তাতেই যথেষ্ট গতি নিয়ে জিপ ছুটিয়েছিল সুশান্ত। কিন্তু হটাৎ তার গতি কমে এলো। আর চট করে ব্রেক কষে বললো ঐ তো! কাজিরাঙা ফরেস্টের প্রধান বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে এখানেই আপনি দেখা পাবেন এক শিঙের গন্ডারের। তার উদেশ্যই আমাদের জীপ বহরের কুয়াশাঘেরা প্রভাতফেরি। সার ধরে জিপগুলো চালাচ্ছে যারা তারাই গাইড এই বনে। আমাদের জিপের চালক-কাম গাইড সুশান্ত তার গল্পের লাটাইয়ের ঘুড়ি ওড়ালেন।

কাজীরাঙ্গা ফরেস্ট ভারতের জাতীয় অরণ্য। আসামের গোলাঘাট-নগাঁও জেলা জুড়ে এর বিস্তৃতি। কাজীরাঙ্গা প্রথমে ন্যাশনাল ফরেস্টের স্বীকৃতি পায়, পরে এর গায়ে ইউনেস্কোর ওর্য়াল্প হেরিটেজের তকমা লাগে ১৯৮৫ সালে। আর এর বিশ্ব পরিচিতি এক শিঙের গন্ডারের নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে। জিপের পাইলটের বয়ান অনুযায়ী এখন এই অরণ্যে আছে ২ হাজার ৬০০’র বেশি এক শিঙের গন্ডার। পরে উইকিপিডিয়ায় ক্লিক করে দেখি বিশ্বের সেরা বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য সুনাম আছে কাজীরাঙ্গার। ভারতীয় সরকারের বিশেষ উদ্যোগের কারনেই এক শিঙ্গের গন্ডার বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরে এসেছে। ফলে এই বনেই এক শিঙের গন্ডারের ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। এর কাছাকাছি আছে নেপালের চিতওয়ান জাতীয় উদ্যান, যেখানে এক শিঙের গন্ডার আছে ৭০০ এর মত।

গন্ডারের দেখা মিলল খুব সকালেই। কারন তখনি তারা প্রাতক্রিয়া সারেন খোলা সড়কে এবং এজন্যই বন থেকে উঠে এসে দাঁড়ান মনুষ্য চলার পথে তাদের প্রাকৃতিক বাথরুমে। সঙ্গে থাকে ছানাপোনারাও। জিপ থামিয়ে সুশান্ত ঘোষণা দিল, এখানেই দেখা মিলবে কাজীরাঙ্গা ফরেস্টের মূল আর্কষণ এক শিঙের গন্ডারের। আমাদের সামনে পেছনে অনেকগুলো জিপ দাঁড়ানো। এলিফ্যান্ট সাফারির বদলে কেন জিপে তা বোঝা গেল, কারন অনেক সময় নাকি হাতির চলাচলের সময় গন্ডার তাদের এড়িয়ে চলে। তো আমরা সুশান্তের নির্দেশে বনের দিকে তাকিয়ে আছি গন্ডারের আশায়, না সত্যি সুশান্ত যে একজন গাড়িচালক শুধু নয় সে একজন দক্ষ গাইডও বটে। কারন একটু পরেই পাতার আড়ালে গাছের ঝোপের ভেতরে দেখা মিল সেই প্রত্যাশিত এক শিঙের গন্ডারের, না একটি দুটি নয় এক সাথে তিনটি। জানলাম বড়টির সাথে তার দুই বাচ্চা। কিন্তু সুশান্ত বারন করলো জিপ থেকে নামতে, আমরাতো পারলে দৌড়ে যাই বনের মধ্যে গন্ডারের কাছাকাছি! আচ্ছা গন্ডার কি তাড়া করে, শুনিনি কখনও। সঙ্গী নওরোজ ইমতিয়াজ জানতে চাইল, যাতে তেড়ে এলে নিজে দৌড়ে পালাতে পারে, আর তখন কিভাবে অন্যদের সাহায্য করবে চিন্তায় ছিল তা নিয়েও। তবে জেনেছি যে তারা নাকি তৃণভোজী প্রাণী। তবে এতো বড় দেহ গড়ে কি দিয়ে? তো জিপের চালক কাম বনের টুরিস্ট গাইড সুশান্ত সবাইকে অনুরোধ করলো শব্দ না করতে। কারন হিসেবে জানাল বাচ্চাসহ গন্ডার নাকি আসবে সড়কের ওপরেই। আমরাতো উত্তেজিত, জিপের কাছেই চলে আসবে কি!

বনের ভেতরেই কয়েক কদম এগিয়ে গেল সেই গন্ডার। তার খুব ধীরে সুস্থে গাছ বা পাতার যেন কষ্ট না হয় এমনভাবে দেহ ঘুরিয়ে সোজাসুজি হলো আমাদের। দুই শিঙ্গের গন্ডার আর এক শিঙের গন্ডারের সৌন্দর্যের পার্থক্য ভাবতে গিয়ে মোবাইল ক্যামেরা তাক করার আগেই বন ছেড়ে রাস্তার কাছাকাছি মা আর সন্তান, অবশ্য গন্ডার কিভাবে তার বাচ্চাদের লালন করে তা জানা না থাকলেও দেখলাম মায়ের পিছু পিছু শিশু গন্ডারও হাটা দিয়েছে সড়ক পানে। রুদ্ধশ্বাসে আমাদের অপেক্ষা। এরই মধ্যে সুশান্ত জানিয়ে দিল গন্ডারটা নাকি রাস্তায় উঠে প্রাতক্রিয়া সারবে, খোলাসা করলে মলত্যাগ করবে। একটা মানুষ কিভাবে জানে যে কখন গন্ডার সেই কাজটি করবে? আসলে অভিজ্ঞতা, কারন সে আগেও দেখেছে। আমরা সত্যি অপেক্ষা করছি গন্ডারের টয়লেটের জন্য। সত্যি মা গন্ডারটা সড়কের ওপরে উঠে একটু দাঁড়াল। বাচ্চাটা একটু নিচে। গন্ডারটা লেজটা একটু উঁচু করতেই জিপের একজন সহযাত্রী কাউন্ট ডাউন দিল, ওয়ান টু থ্রি ! সত্যি সত্যি কয়েক লাদি ছেড়ে দিল গন্ডারটা। তারপর হেলেদুলে নেমে গেল সড়ক ছেড়ে। পিছে পিছে রাস্তা অতিক্রম করলো বাচ্চা গন্ডারটাও। সকল সহযাত্রীর মোবাইল ক্যামেরায় ভিডিও হলো গন্ডারের “সুখকর্ম”। এখনও সেসব ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করা হয়নি। এই কাহিনী পড়ার পর পাঠকের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় থাকব। তারপর সিদ্ধান্ত নেব, গন্ডারের টয়লেটের ভিডিও দিয়ে জাকারবার্গকে বিব্রত করবো কি করবো না? যদি আবার মেটা ফেসবুকে কোনও রেস্টিকশন দিয়ে দেয়!

বিজ্ঞাপন

এক শিঙ্গের গন্ডার দেখার পর যেতে হয়েছিল বাঘের খোঁজে। তবে তথ্য বলছে গন্ডার, বাঘ ছাড়াও কাজীরাঙ্গা ফরেস্টে আছে ৩৫ ধরনের স্তন্যপায়ী প্রাণী। এর মধ্যে ১৫টি প্রজাতিই আইইউসিএনের লাল তালিকায় অর্ন্তভুক্ত, এর অর্থ হলো, এসব প্রাণীরা বিপদগ্রস্থ। তাই কাজীরাঙ্গাকে অভয়ারণ্য হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। তো বাঘের খোঁজে যাবার আগে আমাদের চোখে পড়ল নানা প্রজাতির অসংখ্য পাখি। একটা বড় পাতাবিহীন গাছে মিলল অনেকগুলো শকুনের দেখা। তাদের খাবারও ছিল, বিরাটাকারের একটি বুনো মহিষের মরদেহ চোখে পড়েছে। উইকিপিডিয়ার তথ্য বলছে কাজীরাঙ্গাতে আছে দেড় হাজারের বেশি বুনো মহিষের বিচরণ। তবে জীবন্ত বুনো মহিষের চলাফেরা চোখে না পড়ায় একটু হতাশই হয়েছিলাম। তবে চোখে পড়েছিল সম্বর হরিণ, এটি নাকি আছে মাত্র ৬০টির মত।

কিন্তু বাঘের দেখা? না আমরা দেখিনি, তবে বাঘ নাকি আমাদের দেখেছে, এটা নিশ্চিত করেই বলতে চায় সুশান্ত। বনের ঘাস দেখে তাকে টাইগার বেড বলে জানাল সে। আর প্রমান হিসেবে দেখালো অনেকগুলো জিপ ভর্তি ট্যুরিস্ট, না আসলে তারা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার বা পেশাদার ফটোগ্রাফার যারা ঘন্টার পর ঘন্টা ঠাঁয় বসে অপেক্ষা থাকে বাঘ মামার স্টিল ফটোগ্রাফি করার জন্য। আমরা সাধারণ পর্যটক অত ধৈর্য কোথায় অপেক্ষার? ফলে বাঘ মামার সাথে সাক্ষাত না করেই আমরা ফিরেছি কাজীরাঙ্গা ফরেস্ট থেকে, কারন তখন আমাদের গন্তব্য অরুনাচলের বোমডিলা। সুশান্ত অবশ্য লোভ দেখিয়েছে কাজীরাঙ্গায় নাকি রয়েল বেঙ্গল শুধু নয় আছে গোল্ডেন টাইগার, তারা নাকি সোনালী রংয়ের বাঘ। ভাবলাম দ্বিতীয়বার এসে যখন এক শিঙের গন্ডারের দেখা পেলাম তৃতীয়বার এলে নিশ্চয় পাব বাঘমামার দেখা। তাই বের হলাম বন থেকে। জিপ সাফারি থেকে বিদায় নিয়ে আবার চাপলাম ইনোভায়, গাড়ী ছুটল অরুনাচলের পাহাড়ী পথ ধরে। আমাদের পরবর্তী যাত্রাবিরতি বোমডিলায়, যেখানে অপেক্ষা করছিল শ্বেতশুভ্র বরফ।

সারাবাংলা/এসবিডিই

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন