বিজ্ঞাপন

রবীন্দ্রনাথ যাদের নাম রেখেছিলেন

April 13, 2024 | 5:04 pm

মুহাম্মদ ফরিদ হাসান

মানুষের নাম রাখার প্রতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিশেষ ঝোঁক ছিল। কখনও ভালোবেসে-স্নেহ করে, কখনওবা অনুরোধে তিনি নামকরণ করতেন। তিনি যে কেবল বহু শিশুর নাম দিয়েছেন তা নয়, অনেক সময় বয়সীদের নামও তিনি নতুন করে রেখেছেন। কারও কারও নাম সামান্য পরিবর্তন করে বদলে দিয়েছেন। নামকরণের এ তালিকা রয়েছেন চিত্রনিভা চৌধুরী, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, ইন্দিরা গান্ধী, শান্তিদেব ঘোষ, অমর্ত্য সেন-এর মত বরেণ্য মানুষ। তালিকা থেকে বাদ পড়েনি কবির স্ত্রী-সন্তান, প্রেয়সীর নামও। রবীন্দ্রনাথ ভেবে-চিন্তে অর্থবোধক নাম রাখতেন, নাম রাখার পাশাপাশি আশীর্বাদরূপে দু-চারলাইনের কবিতা লিখে দিতেন। কবির দেওয়া নামটি অনেকেই স্বযত্নে সারাজীবন বহন করেছেন, হয়েছেন জগৎবিখ্যাত। আবার তার দেওয়া নাম বদলিয়ে অন্য নাম রাখার ঘটনাও আছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন ও কর্ম নিয়ে অসংখ্য গবেষণা হলেও অজ্ঞাত কারণে তার নাম রাখার বিষয়টি অনালোকিত রয়ে গেছে। বর্তমান প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেওয়া নাম-সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মানুষের নাম রাখতে পছন্দ করতেন। নিজের পছন্দ তো রয়েছেই, কখনও কখনও ভক্তদের অনুরোধেও তিনি শিশুর নাম রাখতেন। বিস্ময়ের বিষয় হল এমন অনেক সময় হয়েছেযখন শিশুর নাম পূর্বেই পরিবার রেখেছিল, রবীন্দ্রনাথ সেই নামটি পরিবর্তন করে নতুন নামকরণ করেছিলেন। কবি যাদেরকে বিশেষ স্নেহ করতেন তাদের নামের ক্ষেত্রে এমনটা বেশি ঘটেছে। রবীন্দ্রনাথের দেওয়া নাম নিয়েই অনেকে সারাজীবন পার করেছেন। আবার তার দেওয়া নাম ব্যবহার না করার ঘটনাও রয়েছে। আমরা আলোচ্য প্রবন্ধে মুখ্যত রবীন্দ্রনাথ কর্তৃক বিভিন্ন মানুষকে দেওয়া নামের বিষয়ে আমাদের দৃষ্টি প্রসারিত রাখবো।
বাংলাদেশের প্রথম নারী চিত্রশিল্পী ও শান্তিনিকেতনের প্রথম নারী শিল্প অধ্যাপক চিত্রনিভা চৌধুরী। তার জন্ম ১৯১৩ সালে, চাঁদপুরে। জন্মের পর তার বাবা-মা নাম রেখেছিলেন নিভাননী। ১৯২৮ সালে তিনি শান্তিনিকেতনে গিয়ে বিখ্যাত শিল্পী নন্দলাল বসুর সান্নিধ্যে চিত্রচর্চা শুরু করেন। শান্তিনিকেতনের শুরুর দিনগুলো থেকেই নিভা কবিগুরুর সান্নিধ্য পেয়েছেন। কবিও তাকে কন্যার মত স্নেহ করতেন। নিভাননীর চিত্রকর্মের প্রতি কবির বিশেষ আগ্রহ ছিল। তিনি নিভার শিল্পচর্চার নিয়মিত খোঁজ নিতেন। চিত্রনিভা চৌধুরী তার স্মৃতিকথায় লিখেছেন-
“দেখা হলেই তিনি আমায় বলতেন, ‘তুমি কী কী ছবি আঁকলে? আমায় এনে দেখিও।’ তাই আমি যখন যা ছবি আঁকতাম তাকে দেখাতাম। তিনি দেখে খুব খুশি হয়ে, আমার মাথায় হাত দিয়ে বলতেন, ‘তোমার শক্তি আছে, তুমি পারবে, আমি আশীর্বাদ করলুম।’ একথাগুলো থেকে আজও আমার সমস্ত কাজে প্রেরণা লাভ করি।”
রবীন্দ্রনাথ তার চিত্রকর্ম দেখে এতই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে, তিনি নিভাননীর নাম রাখলেন ‘চিত্রনিভা’। তার স্মৃতিভাষ্য থেকে শোনা যাক- “একদিন আমার সব ছবি দেখে খুশি হয়ে, তিনি আমার নাম রেখে দিলেন ‘চিত্রনিভা’। সেই থেকে তিনি আমায় ‘চিত্রনিভা’ বলে ডাকতেন। এবং প্রায়ই তিনি রসিকতা করে আমায় বলতেন, ‘তোমার নামকরণ করলুম। এখন বেশ ঘটা করে আমাদের খাইয়ে দাও।” নাম রাখার জন্যে চিত্রনিভা কখনও কবিগুরুকে খাইয়েছিলেন কি-না তা আমাদের জানা নেই। তবে তিনি এই নামটিই আজীবন সযত্নে-সশ্রদ্ধায় ব্যবহার করেছেন।
রবীন্দ্রনাথের সাথে বুদ্ধদেব বসুর স্ত্রী প্রতিভা বসুর পূর্বপরিচয় ছিল। বুদ্ধদেবের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পূর্বেই তিনি শান্তিনিকেতনে গান শিখতে গিয়েছিলেন। ওই সময় নানাকারণে রবীন্দ্রনাথের প্রতি প্রতিভা বসুর অভিমান তৈরি হয়। অবশ্য অভিমানের কারণে কবির প্রতি তার শ্রদ্ধা কোনোভাবে কমেনি। ১৯৩৮ সালে বুদ্ধদেব স্ত্রী ও প্রথম কন্যা নিয়ে কবির সঙ্গে দেখা করতে যান। এ সময় শান্তিনিকেতনের সুধাকান্ত রায় জানতে পারলেন বুদ্ধদেব দম্পত্তির কন্যার নামকরণ এখনও হয়নি। তিনি প্রতিভা বসুকে বললেন, ‘গুরুদেবের কাছে কিন্তু নাম চাইবেন, না হলে উনি রেগে যাবেন’। ‘জীবনের জলছবি’ গ্রন্থে প্রতিভা বসুর লিখেছেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথমদিনেই বললেন-
“কন্যার কি নাম হল? অমনি আমি ন্যাকামি করে বললাম, ‘আপনি দিলে তবে তো হবে।’ খুশি হয়ে পা নাড়লেন। …বিকেলে রানী চন্দ অথবা রানী মহলানবিশ, ওদের দুজনের মধ্যে কে আমার মনে নেই, আইসক্রীম নিয়ে এলেন। রবীন্দ্রনাথ লিখে দিয়েছিলেন মীনাক্ষীর জন্য। বোঝা গেল কন্যার নাম মীনাক্ষী রাখা হয়েছে।”
কিন্তু নামটি প্রতিভা বসুর পছন্দ হল না। তিনি কোলকাতায় ফিরে এসে শান্তিনিকেতনের অভিজ্ঞতা-অনুভূতি জানিয়ে রবীন্দ্রনাথকে একটি চিঠি লিখেছেন। চিঠির শেষে কৌশলে তিনি লিখলেন, ‘আপনি কিন্তু আমার কন্যার জন্য একটা নাম ঠিক করে দিলেন না।’ প্রতিভা বসু ভেবেছেন নাম রাখার বিষয়টি রবীন্দ্রনাথ ভুলে যাবেন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ যে কিছুই ভোলেননি তা চিঠির উত্তর দেখলেই বোঝা যায়। রবীন্দ্রনাথ প্রতিভা বসুর চিঠির প্রতিউত্তরে সবশেষে লিখলেন, ‘মীনাক্ষী কেমন আছে?’ এ জবাব দেখে বুদ্ধদেব প্রতিভা বসুকে বলেছিলেন, ‘মনে করেছো এতেই উনি ভুলে যাবেন। হল?’ এরপর অবশ্য বুদ্ধদেব-কন্যা মীনাক্ষী (মীনাক্ষী দত্ত) নামেই পরিচিত হয়েছেন।
বিস্ময়ের বিষয় হল বুদ্ধদেবের দ্বিতীয় কন্যার নামকরণও রবীন্দ্রনাথ করেছিলেন। প্রথম কন্যার নাম চাওয়ার মধ্যে প্রতিভা বসুর ‘ন্যাকামি’ থাকলেও দ্বিতীয় কন্যার ক্ষেত্রে তা ছিল না। প্রতিভা বসু লিখেছেন-
“আমরা আমাদের ছোট কন্যাটিকে নিয়ে যেতাম। রবীন্দ্রনাথের ইচ্ছেতেই নিতাম। …রবীন্দ্রনাথ জিজ্ঞেস করলেন, ‘এই মেয়ের নাম কী হল?’ সেই একই কথার পুনরাবৃত্তি করে পুনরায় বললাম, ‘আপনি একটা রেখে দিন।’ তবে এই কথার মধ্যে আগেরবারের মত ছলনা ছিল না। আমরা নিজেরাই নাম চাইবার বাসনা নিয়ে এসেছিলাম। বলতে সুযোগ পাচ্ছিলাম না। রবীন্দ্রনাথ বললেন, ‘ঐ তো দুটো নাম পড়ে আছে নাও না, চন্দনা আর কাকলি। তা তোমাদের মেয়ে যেমন কলকল করে তাতে কাকলি নামটাই মানাবে ভালো’।”
যদিও ‘কাকলি’ নামটি বেশিদিন ব্যবহার হয়নি। বুদ্ধদেব বসু রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পর ছোটকন্যাটির নাম পরিবর্তন করে রাখেন ‘দময়ন্তী’। যাকে আমরা দময়ন্তী বসু সিং নামে চিনি।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নতুন গানের কপি করে দিতেন দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও রমা কর। তাদের মৃত্যুর পর এ দায়িত্ব বর্তেছিল শান্তিদেব ঘোষের ওপর। তিনি একাধারে রবীন্দ্রসঙ্গীত বিশারদ, স্বরলিপিকার, গায়ক, অভিনেতা, নৃত্যশিল্পী, সুরকার ও লেখক ছিলেন। শান্তিদেবের পারিবারিক নাম ছিল শান্তিময় ঘোষ। তার বাবা রবীন্দ্রনাথের সহকর্মী কালীমোহন ঘোষ। ১৯১০ সালে জন্ম নেওয়া শান্তিময় ঘোষ মাত্র ছ’মাস বয়সে প্রথম শান্তিনিকেতনে আসেন। ১৯৩০ সালের পূর্ব পর্যন্ত তার নাম শান্তিময়ই ছিল। রবীন্দ্রনাথের ইচ্ছায় ‘শান্তিময়’ থেকে ‘শান্তিদেব’ হওয়া সম্পর্কে তিনি স্মৃতিকথায় লিখেছেন-
“…আমার ‘শান্তিদেব’ নাম গুরুদেব দিলেন, তার নিজের হাতে লেখা নৃত্য-গীত-আবৃত্তির একটি অনুষ্ঠানের কার্যসূচিতে। তাকে যখন জিজ্ঞেস করলাম ‘শান্তিময়’ থেকে আমার নাম ‘শান্তিদেব’ করলেন কেন? তিনি বলেছিলেন, এটিই ভাল, এটিই থাকুক। তখন থেকেই আমি ‘ময়’ শব্দটির পরিবর্তে ‘দেব’ শব্দটির ব্যবহার করা শুরু করি। ‘দেব’ যুক্ত নামটিই স্থায়ী হয়ে গেল, ‘ময়’ শব্দটির কথা আজ আর কেউ জানে না।’
১৯৯৯ সালে প্রয়াণের পূর্বপর্যন্ত শান্তিদেব ঘোষ একবারের জন্যেও আর শান্তিময় নামটির ব্যবহার করেননি। কবির আশীর্বাদধন্য ‘শান্তিদেব ঘোষ’ নামেই তিনি উপমহাদেশে খ্যাতি লাভ করেন।
রবীন্দ্রনাথের নাম ধারণ করে উপমহাদেশব্যাপী উজ্জ্বল আলো ছড়িয়েছেন এমন আরেকজন হলেন কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পীদের মধ্যে তিনি অন্যতম। ১৯২৪ সালে পশ্চিমবঙ্গে তার জন্ম। জন্মের পর পিতা সত্যচরণ মুখোপাধ্যায় মেয়ের নাম রাখেন অনিমা। কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় তার স্মৃতিকথায় লিখেছেন, কালবৈশাখীর সন্ধ্যায় উত্তরায়ণের বাগানে আম চুরি করতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথের সাথে তার প্রথম সাক্ষাৎ হয়। সঙ্গীতপ্রতিভার কারণে রবীন্দ্রনাথ তাকে বিশেষ স্নেহ করতেন। তিনি স্নেহের ‘অনিমা’র নামটি পরিবর্তন করে রাখেন কণিকা। ১৯৩৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর রবীন্দ্রনাথ স্কুলে পাঠানো চিরকুটে লিখেছেন, ‘অনিমার নাম পরিবর্তন করে কণিকা নাম দেওয়া হয়েছে। তার পিতারও সম্মতি আছে। আপিসের খাতায় এই নাম চালানো যেতে পারে।’ একই চিরকুটে কবি শুভেচ্ছাস্বরূপ এক পঙক্তি কবিতা লিখে দিয়েছেন। পঙক্তিটি হল-
‘আমার নামের আকরে জড়ায়ে
আশীর্বচনখানি
তোমার খাতার পাতায় দিলাম আনি।’
কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন সাক্ষাৎকার ও স্মৃতিকথায় বলেছেন, রবীন্দ্রনাথের সান্নিধ্যে এবং নাম রাখার মধ্য দিয়ে তার দ্বিতীয় জন্ম হয়েছে। তিনি সারাজীবন কেবল কবিগুরুর সুরই নয়, তার দেওয়া নামও বয়ে নিয়ে চলেছেন।
ভারতের ইতিহাসে একমাত্র নারী প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তাকে ‘ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী গান্ধী’ নামেও ডাকা হয়। প্রিয়দর্শিনী নামকরণের পেছনেও রয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। ইন্দিরা ১৯৩৪ সালের জুলাই মাসে বিশ্বভারতীতে পড়তে যান। গবেষক জেড এ তোফায়েল লিখেছেন, ‘যদিও পরবর্তীকালে শান্তিনিকেতনে কিশোরী ইন্দিরাকে রবীন্দ্রনাথ প্রিয়দর্শিনী বলেই ডাকতেন কিন্তু এই নাম শৈশবেই দিয়েছিলেন।’ ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী গান্ধী নামটি ভারতবর্ষে বিপুল জনপ্রিয় ছিল। রবীন্দ্রনাথ ১৯৩৫ সালের ২০ এপ্রিল জওহরলাল নেহেরুকে লেখা পত্রে লিখেছেন, ‘ইন্দিরাকে আমরা সবাই এক মহামূল্য সম্পদ মনে করতাম।’ ইন্দিরাও কর্মের মাধ্যমে তার নামকে উজ্জ্বল করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি ১৯৬৬ সালে ভারতের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে তিনি ৪ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনও ধারণ করে আছেন কবিগুরুর দেওয়া নাম। তার জন্মও শান্তিনিকেতনে। তার মাতামহ বরেণ্য পণ্ডিত আচার্য ক্ষিতিমোহন সেন। বাবা আশুতোষ সেন, মা অমিতা সেন। এনসাইক্লোডিপিডিয়া অব ভারত-রত্ম গ্রন্থে বলা হয়েছে-
“অমর্ত্য সেনের জন্মের পর বাবা-মা তাকে আদর করে বাবলু ডাকতেন। কিন্তু তারা একটা ভালো নাম খুঁজছিলেন। সেজন্য শিশুকে নিয়েই দ্বারস্থ হলেন রবীন্দ্রনাথের কাছে। কবি বললেন, ওর নাম রাখবো? কী নাম রাখবো আমি জানি! তবে আমি জানি পিতা-মাতা কী চায়। তারা চায় তাদের সন্তান বিখ্যাত হোক, অমর হোক। তোমরাও নিশ্চয়ই তোমার সন্তানের জন্য এমন স্বপ্ন দেখো। সুতরাং ওকে ‘অমর্ত্য’ বলে ডাকো। মৃত্যুঞ্জয়ী একজন! বলেই গুরুদেব হাসলেন। নামটি আশুতোষ-অমিতা সেনের পছন্দ হল। আশুতোষ বললেন, ‘গুরুদেব, আপনি ওর (শিশুটির) কানে এ নামটি একবার বলুন। তাকে তার নামে আপনিই প্রথমবার ডাকুন। রবীন্দ্রনাথ শিশুটির ডানকানের কাছে মুখ নিয়ে নিচুকণ্ঠে বললেন, অমর্ত্য! তুমি অমর হও!” (ইংরেজি থেকে ভাষান্তরকৃত অংশ)
নাম রাখার পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথ অনিতা সেনকে বলেছেন, অমর্ত্য শব্দের শেষে য-ফলা যেনো বাদ না যায়। অমর্ত্য সেন বিশ্বভারতীতে পড়াশোনা করেছেন। রবীন্দ্রনাথের দেওয়া নাম নিয়ে অমর্ত্য সেন সত্যি সত্যিই মর্ত্য জয় করেছেন।
রবীন্দ্রনাথ শিশুদের অসম্ভব ভালোবাসতেন। শিশুদের সঙ্গে তিনিও শিশুমন নিয়ে মিশে যেতেন। শুনতেন তাদের গল্প-কথা। কবিগুরুর সচিব অনিল চন্দের সন্তান অভিজিৎ তার স্নেহধন্যদের একজন। ছোট্ট অভিজিৎ প্রতিদিন ছুটে যেত কবিগুরুর কাছে। অভিজিতের মা রানী চন্দ লিখেছেন-
‘সকাল ছাড়াও যখন-তখন ছুটে ছুটে গুরুদেব দাদুর কাছে যাওয়া চাই অভিজিতের। পথে যেতে তলায় পড়ে থাকা সোনাঝুরির শুকনো পাতাটি নজরে পড়ল, তুলে নিয়ে এল দাদুর কাছে- দাদু, এই দেখো কেমন চাঁদ! রঙ তুলি নিয়ে কাগজে কাগজে হিজিবিজি দাগ কাটল তাই নিয়ে ছুটে গেল দাদুর কাছে দাদু, এই নাও ছবি। এটা হল মাছ, এটা চাঁদের মা বুড়ি বসে বসে সুতো কাটছে, আর এটা হল শিমুল ফুলতলায় পড়ে আছে।”
রবীন্দ্রনাথ অভিজিতের শিশুসুলভ প্রশ্নে আনন্দিত হতেন। প্রতিদিন তার জন্য বরাদ্দ থাকত তিনটি চকলেট। কবি তার একটি আদুরে নাম দিয়েছিলেন। রানী চন্দের মুখেই শোনা যাক ‘…কতবার যে দাদুর ঘরে যাওয়া চাই অভিজিতের তার শেষ ছিল না। শিশু অভিজিৎ আর গুরুদেবের মধ্যে বেশ একটা সম্পর্ক ঘনিষ্ঠতর হয়ে গিয়েছিল দিনে দিনে। ঘুরে ফিরে না এলে গেলে চলত না। অভিজিৎকে গুরুদেব আদর করে বলতেন ‘যুবরাজ’। বলতেন, রানীর ছেলে ‘রাজপুত্তুর’।”
রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর তিন-চার বছর আগের ঘটনা। কবির খাসদপ্তরের কর্মী সুধীরচন্দ্র কর প্রথম সন্তানের নাম চেয়েছেন কবির কাছে। কবি ব্যস্ত ছিলেন। মুখে মুখে নাম দিলেন- সুমিত এবং সুকৃত। কিন্তু নাম দুটি পূর্বেই অন্যত্র ব্যবহার হয়ে গিয়েছিল। ফলে সুধীরচন্দ্র আরেকটি নাম চাইলেন। এবং সঙ্গে চাইলেন কবিতার দু লাইন, আশীর্বাদরূপে। রবীন্দ্রনাথ শিশুর নাম দিলেন। কিন্তু আশীর্বাদ দিলেন না। বললেন, ‘মনের আশীর্বাদেই হবে।’ এর সপ্তাহখানেক পরে কার্ডে কবি লিখে দিলেন আশীর্বাদবাণী হিসেবে দু’লাইন কবিতা। সুধীরচন্দ্র কর তার ‘কবি-কথা’য় নিজের সম্পর্কে লিখেছেন-
“প্রার্থনাটি মনে রেখেছেন এবং এতখানি কৃপা করেছেন এই অভাবিত সৌভাগ্যের আনন্দ কর্মীকে অভিভূত করে ফেলল। ছেলের নাম দিয়েছেন ‘সুপ্রভাস’। অর্থ জিজ্ঞেস করতেই বললেন, সুপ্রভাস মানে যা আলো ছড়িয়ে উজ্জ্বল করে।…কবিকে প্রণাম করে তার আশীর্বাদ গ্রহণ করা গেল। কবিতাটি ছিল এইরূপ-
  ‘ভোরের কলকাকলীতে মুখর তব প্রাণ
জাগাবে দিন সভাতলে আলোর জয়গান।’
…সব-সময় বলবার মত আরেকটি নামও শেষে বলে দিয়েছিলেন ‘সুব্রত’। ঐ নামটিই চলতি হয়।”
সুধীরচন্দ্র করের অনুরোধের এই শেষ নয়। তার অনুরোধে তার স্ত্রীর নামের সঙ্গে মিল রেখে রবীন্দ্রনাথ কবিতার ‘ভোরের’ শব্দটি কেটে ‘ঊষার’ করে দেন।
কেবল শিশু নয়, বয়স্ক মানুষের নতুন নামকরণের জন্যেও রবীন্দ্রনাথের দ্বারস্থ হওয়ার উদাহরণ রয়েছে। বিশিষ্ট নাট্যকার বিধায়ক ভট্টাচার্য পূর্বে বগলা রঞ্জন ভট্টাচার্য নামে পরিচিত ছিলেন। ১৯৩৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তার প্রথম উপন্যাস ‘শ্রী সমীরণ সেন’ প্রকাশিত হয়। এরপর নাটক লেখা শুরু করলে ড. পশুপতিনাথ ভট্টাচার্য্য বগলাকে নিয়ে কবিগুরুর কাছে যান। তিনি রবীন্দ্রনাথকে আবদার করে বললেন, ‘এই ছেলেটি নাটক লিখছে, একটা নতুন নাম দিন না বগলাকে!’ তার অনুরোধে কবি বগলার নাম রাখলেন বিধায়ক। সেদিন থেকে বগলা রঞ্জন ভট্টাচার্য শিল্পমহলে পরিচিত হলেন বিধায়ক ভট্টাচার্য নামে।
রাজমাতা বিনীতি রায় পার্বত্যবাসীর শ্রদ্ধার আসনে ছিলেন। তিনি পার্বত্য অঞ্চলে সর্বপ্রথম পত্রিকা প্রকাশের উদ্যোগ নেন। তার প্রথম সন্তান ধারণ করে আছে কবিগুরুর দেওয়া নাম। এ বিষয়ে গবেষক জেড এ তোফায়েল লিখেছেন, “রাজমাতা বিনীতা রায় ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আশীর্বাদধন্যা। তার পিতা সরল সেন কবিগুরুর বন্ধু ছিলেন। তার প্রথম সন্তানের নামকরণ করা হয় রবীন্দ্রনাথের দেওয়া নামেই, এবং এ নামটি ছিল অমিতি। পরে অমিতি রায় একজন কবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।” এখানে বলে রাখা দরকার, অমিতা রায় চারটি কাব্যগ্রন্থ লিখেছেন। কবি অজিত চক্রবর্তী (১৮৮৬-১৯১৮)-এর নাতনি ‘অলকা’ চক্রবর্তীর নামটিও রবীন্দ্রনাথের দেওয়া। তার স্বামী খ্যাতিমান অভিনেতা বসন্ত চৌধুরী। মাসিক বসুমতি পত্রিকায় এ বিষয়ে লেখা হয়েছে- ‘এ কথা কারওরই অজানা নয় যে বহুজনের নামকরণ করে তাদের গৌরবিত করে গেছেন রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথ শেষবারের মত যার নামকরণ করলেন তিনিই অলকা চৌধুরী।’ অলকার পিসতুতো দিদি স্মিতা সিংহ জানিয়েছেন, “ওর নামটা রবীন্দ্রনাথের দেওয়া, আষাঢ় মাসে জন্ম তাই, অলকানন্দা। নানা গুণের অধিকারী ছিল। কবিতা লিখত, ভাল ছবি আঁকত, দারুণ নকল করতে পারত।”
কেবল ছাত্রছাত্রী-স্বজন, পরিচিতদের নামই রবীন্দ্রনাথ রাখেননি, নিজের স্ত্রী ও প্রেয়সীদের নামও রেখেছেন তিনি। রবীন্দ্রনাথের জীবনে প্রেমের গুঞ্জন কম ছিল না। তার রহস্যময় নারীদের মধ্যে আর্জেন্টিনার ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো ছিলেন অন্যতম। যদিও বয়সে রবীন্দ্রনাথ তার থেকে ২৯ বছরের বড় ছিলেন। তবু তার প্রতি ছিল কবির অন্যরকম ভালোবাসা ও আবেগ। ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোকে তিনি ‘বিজয়া’ বলে ডাকতেন। সম্ভবত ভিক্টোরিয়া শব্দের অর্থকে মাথায় রেখে তিনি ‘বিজয়া’ নামটি নিয়ে থাকবেন। কবি ওকাম্পোর প্রশংসায় ছিলেন পঞ্চমুখ। তিনি লিখেছেন-
“সেদিন বিজয়ার চিঠি পেলুম। ছোট্ট একটি কার্ডে লিখেছে, ‘যদি তুমি আমায় কিছু লেখ’। একবার আসতে লিখে দিলুম। আমার জন্য সে কী করবে দিশে পেত না। নিজের বাড়িতে সবচাইতে সেরা সুখ-সুবিধের মাঝে আমাকে রেখেছিল। অজস্র টাকা আমার জন্য খরচ করেছে, তাতেও যেন ওর তৃপ্তি নেই। সব সময় তবু আশায় থাকত আমি কী চাই। আমার চাওয়া ও প্রাণ দিয়ে মেটাবে, এমনি ভাব।”
রবীন্দ্রনাথ ওকাম্পোকে লেখা কোনো কোনো চিঠি ‘প্রিয় বিজয়া’ বলে শুরু করতেন। শুধু তাই নয়, কবি ১৯২৫ সালে প্রকাশিত তার ‘পূরবী’ কাব্যগ্রন্থটি বিজয়াকে উৎসর্গ করেন।
রবীন্দ্রনাথের প্রথম জীবনের প্রেম ছিল তার সমবয়সী আন্না তড়খড়। এখানেও আন্নাকে নিজের দেওয়া নামে ডাকতেন রবীন্দ্রনাথ। তিনি আন্নার নাম দিয়েছিলেন ‘নলিনী’। কবি ১৮৮৬ সালের ৯ ডিসেম্বর ভবতারিণী দেবীকে বিয়ে করেন। ‘ভবতারিণী’ নামটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পছন্দ ছিল না। তিনি তার নাম বদলিয়ে রাখলেন ‘মৃণালিনী’। রবীন্দ্রজীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের মতে, আন্না তড়খড়কে ডাকা নলিনী নাম থেকে রবীন্দ্রনাথ মৃণালিনী নামটি নিয়ে থাকতে পারেন। কারণ দুটি নামের প্রতিশব্দই ‘পদ্ম’। অবশ্য মৃণালিনীকে কবি ‘ভাইছুটি’ বলেও ডাকতেন। রবীন্দ্রনাথ ৫ সন্তানের জনক ছিলেন। রথীন্দ্রনাথ, শমীন্দ্রনাথ, মাধুরীলতা, রেণুকা ও মীরা। প্রত্যেক সন্তানের নামই কবি রেখেছেন।
অন্যদিকে কবি নজরুলের তারুণ্যকে পছন্দ করতেন রবীন্দ্রনাথ। তাকে তিনি কখনও সম্ভোধন করতেন ‘উদ্দাম’, কখনও ডাকতেন ‘ক্ষ্যাপা!’। অনেক বৃক্ষের নামও রেখেছেন রবীন্দ্রনাথ। কবির খাসদপ্তরের কর্মী সুধীরচন্দ্র লিখেছেন, “গাছ-গাছড়াদের নাম দিয়েছেন কবি নিজে। ‘নীলমণিলতা’ ও ‘মধু-মঞ্জুরী’র কথা আছে তার কাব্যে। আরও নাম দিয়েছিলেন। একটি তার ‘রক্তমুখী’। …আরেকটি আছে ‘বনপুলক’… আরও একটি ফুল ‘বনজুঁই’। ”
কবির জীবনে নাম রাখা নিয়ে অসংখ্য স্মৃতি থাকলেও তার সবটুকু মধুর নয়। নাম রাখা নিয়ে বিব্রতকর ঘটনাও ঘটেছে কয়েকবার। হয়েছেন ত্যক্ত-বিরক্ত। ১৯৩৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর শান্তিনিকেতনের ছাত্রী বীণা বাগচী সন্তানের জন্যে নাম চেয়ে রবীন্দ্রনাথকে একটি চিঠি লিখেন। তিনি লিখেছেন-
“পরম শ্রদ্ধাভাজনেষু
গুরুদেব। ২৪শে ভাদ্র আমার আর একটি শিশুকন্যা হয়েছে। আমার প্রথম শিশুকন্যার নাম ‘মুকুলিকা’ আপনিই রেখেছিলেন। এই নবজাত শিশুকন্যাটিরও আপনি যদি একটা নামকরণ করে দেন, তাহলে বড়ই ধন্য হব। …নবজাত শিশুকন্যা যদি আপনার দেওয়া নাম না পায়, তাহলে বড় হয়ে দুই বোনে তুমুল ঝগড়া বাধবে। মুকুলিকা তার ছোট বোনকে বলবে, ‘তোর নাম তো বিশ্বকবির দেওয়া নয়।’ অতএব, সেই ঝগড়ার সমাধান করার জন্য মুকুলিকার ছোট বোনের জন্য, একটা নতুন নাম ভিক্ষা আপনার কাছে চাচ্ছি। আশা করি বঞ্চিত হব না।”
বীণা বাগচীর কন্যাদের ঝগড়া সমস্যা সমাধানে রবীন্দ্রনাথ একটি নাম দিয়েছিলেন ঠিকই, তবে চিঠিতে কবির বিরক্তিভাব গোপন থাকেনি। ১৯৩৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর কবি বীণা বাগচীকে লিখেছেন-
“কল্যাণীয়েষু,
তোমাদের দাবী কেবল যে ক্লান্তিকর তা নয় হাস্যকর হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে সমস্ত নবজাত শিশুদের নামকরণের দায় আমার উপরে চেপেছে। তুমি ভাবছ সন্তান কেবল তোমারই কোলে আসে কিংবা তুমিই একমাত্র সন্তানজননী আমার উপরে আবদার খাটে। যাকে রূপ দিয়েছ তুমি তাকে নাম দিতে পারো না? যাই হোক এই আমার শেষ ‘কুসুমিকা’ নাম যদি পছন্দ হয় গ্রহণ কোরো নইলে অন্য কোনো নামাবলীর সৃষ্টিকর্তার স্মরণ নিয়ো।”
আরেকটি অন্তর্গত বেদনার কথাও এ প্রবন্ধে উল্লেখ করা জরুরি। এটা উল্লিখিত বিভিন্ন ঘটনার আলোকে স্পষ্ট যে, রবীন্দ্রনাথ নাম রাখতে ভালোবাসতেন। তার সম্ভাব্য নাতির জন্যে আগ্রহ করে একটি নাম জমা রেখেছিলেন। তার ইচ্ছে রথীন্দ্রনাথের পুত্র হলে তিনি ‘রাসভেন্দ্র’ নামটি তাকে দেবেন। কিন্তু কবির ইচ্ছে পূর্ণ হয়নি। তিনি সযত্নে এ নামটি আগলে রেখেছেন ২৩ বছর। পরে নামটি তিনি সুরেন্দ্রনাথ করের পুত্রের জন্যে দিয়ে দেন। ১৯৩৩ সালের ১৩ মে রবীন্দ্রনাথ সুরেন করকে চিঠিতে লিখলেন, “রাসভেন্দ্র নাম বউমার ছেলে হলে রাখব বলে রিজার্ভ করে রেখেছিলুম। সম্ভাবনা যখন স্বল্প, তখন ওটা নিঃস্বত্ব তোমার শিশুকে দিতে পারি।” এ দুটি বাক্যে কবির অন্তর্গত বেদনার আঁচ আর গোপন থাকেনি।
রবীন্দ্রনাথ সাহিত্যকর্মের নামকে যেমন কেবলমাত্র নাম হিসেবে দেখেননি, তেমনি মানুষের নামকরণকেও তিনি লঘুভাবে দেখেননি। অনেক ভেবেচিন্তে তিনি নাম রাখতেন। নাম নিয়ে রবীন্দ্রনাথকে আক্ষেপ করতেও দেখা যায়। তার মনে হয়েছে, সমকালে যেসব নাম রাখা হয়েছে, তা দুর্বল। কবি সুধীরচন্দ্র করকে বলেছেন-
‘যত কাব্যিক আর দুর্বল নামের ছড়াছড়ি! পৌরুষব্যঞ্জক নাম বড়ো আজকাল একটা কানে ঠেকে না। দেখো তো আগের কালের রুচি! কেমন সব বড়ো-ওজনে ভারী নাম, বলতে সব-মুখ ভরে বলতে হবে। ধৃতরাষ্ট্র, দুর্যোধন, যুধিষ্ঠির, জয়দ্রথ, বভ্রুবাহন, কাত বীর্যার্জুন মহাভারতের এসব নামের মধ্যেই সেকালের পুরুষ-চরিত্রের ভূমিকা প্রকাশমান।
রবীন্দ্রনাথ যাদের নাম রেখেছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা নিজেরা যেমন আলোকিত হয়েছেন, তেমনি সমাজকেও আলোকিত করেছেন। শান্তিদেব ঘোষ, চিত্রনিভা চৌধুরী, ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী গান্ধী, অমর্ত্য সেন প্রমুখ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেওয়া নামের সম্মান রক্ষা করতে পেরেছেন। আনন্দের বিষয় হল কবির দেওয়া নাম নিয়ে এখনও সশরীরে পৃথিবীময় ঘুরে বেড়াচ্ছেন অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। নিঃসন্দেহে রবীন্দ্রনাথের দেওয়া নাম যে কোনো ব্যক্তির জন্যেই গর্বের এবং এ প্রাপ্তি কোনোভাবেই কম নয় তা আর নূতন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
টীকা ও সহায়ক গ্রন্থ:
১. চিত্রনিভা চৌধুরী, রবীন্দ্রস্মৃতি, ঢাকা, বেঙ্গল পাবলিকেশন্স, ফেব্রুয়ারি ২০১৭, পৃ.২১
২. চিত্রনিভা চৌধুরী, প্রাগুক্ত, পৃ.২২
৩. প্রতিভা বসু, জীবনের জলছবি, কলকাতা, আনন্দ পাবলিশার্স, নবম মুদ্রণ ১৪১৮, পৃ. ১১৭
৪. প্রতিভা বসু, প্রাগুক্ত, পৃ. ১১৭
৫. প্রতিভা বসু, প্রাগুক্ত, পৃ. ১৫৪
৬. প্রতিভা বসু, প্রাগুক্ত, পৃ. ১৬২
৭. শান্তিদেব ঘোষ, জীবনের গান, কলকাতা, আনন্দ পাবলিশার্স, ষষ্ঠ মুদ্রণ চৈত্র ১৪২২, পৃ. ৩৮
৮. কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, আনন্দধারা, কলকাতা, আজকাল পাবলিশার্স, ১৯৯৮, পৃ. ৮
৯. কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাগুক্ত, পৃ. ৮
১০. কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাগুক্ত, পৃ. ১৬
১১. জেড এ তোফায়েল, ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশে, ঢাকা, প্রকাশক : রেবেকা তাসনিম, ১৯৮৬ পৃ. ৫৯
১২. জাফর ওয়াজেদ, কীর্তির চেয়ে মহৎ, পরিবেষ্টনের চেয়ে সত্য, ঢাকা, ঢাকা টাইমস, ৫ আগস্ট ২০১৫
১৩. আর কে মূর্তি, এনসাইক্লোডিপিডিয়া অব ভারতরত্ম, দিল্লি, পিতাম্বর পাবলিশিং কোম্পানি, ২০০৫, পৃ. ১৯৩
১৪. শাহ মতিন টিপু, অমর্ত্য সেন ও বাংলাদেশ, ঢাকা, রাইজিংবিডি ডটকম, ৩ নভেম্বর ২০১৫।
১৫. রানী চন্দ, গুরুদেব, কলকাতা, বিশ্বভারতী গ্রন্থনবিভাগ, প্রথম প্রকাশ ২২ শ্রাবণ ১৩৬৯, পৃ. ১৪৩
১৬. রানী চন্দ, প্রাগুক্ত, পৃ. ১৪৩
১৭. সুব্রত রুদ্র, কৃষ্ণকালের চাঁদ, কলকাতা, অয়ন পাবলিশার, ১৯৭৮, পৃ. ১৪
১৮. সুধীরচন্দ্র কর, কবি-কথা, কলকাতা, সুপ্রকাশন, ১৯৫১, পৃ. ৮৯-৯০
১৯. রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য, নাট্যে উপেক্ষিত, কলকাতা, সৃষ্টিসুখ প্রকাশন, ২০১৫, পৃ. ১৪
২০. জেড এ তোফায়েল, বরেণ্য বাঙ্গালী, ঢাকা, পঞ্চগ্রাম প্রকাশনী, ১৯৯১, পৃ. ৬২৩
২১. হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ (সম্পা.), মাসিক বসুমতী, কলকাতা, ভলিয়ম ৪৩, ১৯৬৪, পৃ. ৩৩১
২২. সুদেষ্ণা বসু, রোদনভরা বসন্তে স্বাভিমানী এক অভিনেতা, কলকাতা, আনন্দবাজার পত্রিকা, ১৯ ডিসেম্বর ২০২০
২৩. শঙ্খ ঘোষ, ওকাম্পোর রবীন্দ্রনাথ, কলকাতা, দে’জ পাবলিশিং, দশম মুদ্রণ ২০১৭, পৃ. ১১৬।
২৪. বাসন্তী চক্রবর্তী, রবীন্দ্রনাথের শেষ পর্যায়ের কাব্য, কলকাতা, ওরিয়েন্টাল বুক কোম্পানি, ১৯৮১, পৃ. ৪১৫
২৫. নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, মৃণালিনী, কলকাতা, আনন্দবাজার পত্রিকা, ২২ অক্টোবর ২০১৬
২৬. দিনেশ মাহাতো, রবীন্দ্রনাথের জীবনে মৃণালিনী, ঢাকা, দৈনিক জনকণ্ঠ, ২৭ জানুয়ারি ২০১৭
২৭. সুধীরচন্দ্র কর, কবি-কথা, কলকাতা, সুপ্রকাশন, ১৯৫১, পৃ. ০২
২৮. ভূঁইয়া ইকবাল, রবীন্দ্রনাথ : তার চিঠি, তাকে চিঠি, ঢাকা, মূর্ধণ্য প্রকাশন, ২০১২, পৃ. ৭৪-৭৫
২৯. ভূঁইয়া ইকবাল, রবীন্দ্রনাথের কয়েকটি অগ্রন্থিত পত্র, ঢাকা, কালি ও কলম, নভেম্বর ২০১৭
৩০. অরুণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাডেমি, ২০০৫, পৃ. ১৬৭

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসবিডিই

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন