বিজ্ঞাপন

‘অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে’

April 16, 2024 | 3:25 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দেশে অনিবন্ধিত ও অবৈধভাবে পরিচালিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধের উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। গণমাধ্যম স্বাধীন ও মুক্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিছু অবৈধ ও অনিবন্ধিত অনলাইনের কারণে কিছুটা বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। সেজন্য আপনারাই বলছেন এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। আমরা এ দাবি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেব।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সচিবালয়ে অনলাইন নিউজ পোর্টাল অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ওনাব) কার্যনির্বাহী সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তথ্য প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, ‘গণমাধ্যম মুক্ত ও স্বাীধন যেকোনো ভাবেই চলতে পারে। সেটার প্রমাণ হচ্ছে সরকার কারও ওপরেই নিয়ন্ত্রণ করে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন। তবে কিছু কিছু অনিবন্ধিত অনলাইন সংবাদপত্র এখন সীমা অতিক্রম করে গেছে। সেজন্য বিশঙ্খল হচ্ছে। এখানে শৃঙ্খলা আনা দরকার। অনিবন্ধিত অনলাইন পোর্টাল চটকদার নিউজ করে। আমরা যারা পেশাদারিত্বে রয়েছি ওই সব নিউজ তাদের হার্ট করে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণ করতে চাই না। এটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অংশ। গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে গণমাধ্যমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।’

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে বিশ্বাস করি না। আমরা মুক্ত গণমাধ্যমে বিশ্বাস করি। দেশে ৪২৬টি নিবন্ধিত অনলাইন রয়েছে। এরমধ্যে ২১৩ মূল ধারার অর্থাৎ যারা সংবাদপত্রও টিভির অনলাইন। বাকিগুলো সরাসরি অনলাইন হিসেবেই কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অবৈধভাবে কোনো কিছু সঠিক না। সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেব। আপনারা বলছেন অবৈধ অনলাইন বন্ধ করতে। উচ্চ আদালতের রায় রয়েছে। আপনাদের দাবি পূরনের জন্য পদক্ষেপ নেব।’

বিজ্ঞাপন

সরকারের ভুলক্রুটি ধরিয়ে দিতেও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানান তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। তিনি বলেন, ‘এতে করে আমাদের ভুল শুধরে নেওয়ার সুযোগ হবে।’ বৈঠকে অনলাইন পোর্টালে সরকারি বিজ্ঞাপন ব্যবস্থা চালুর সুপারিশ করেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা (সাংবাদিক) বলছেন নজরদারি বা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সরকার যে নজরদারি বা নিয়ন্ত্রণ করে না, বরং আপনারাই বলছেন কিছুটা দরকার ডিসিপ্লিনের (শৃঙ্খলা) জন্য। অর্থাৎ নিবন্ধন প্রক্রিয়ার বাইরেও অনেকে অনলাইন সংবাদমাধ্যম পরিচালনা করছেন। এখানে গণমাধ্যম এতোটাই মুক্ত, উন্মুক্ত এবং স্বাধীন যে নিবন্ধন ছাড়াও চলতে পারে এবং নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণের কথা পেশাগত সাংবাদিকরাই বলছেন—এটা করা দরকার।’

‘কিন্তু আমরা এগুলো করি না। যেটা প্রমাণ করে— প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সংবাদমাধ্যমের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। তবে, একইসাথে আমি মনে করি, এটা মুক্ত না, উন্মুক্ত। স্বাধীনতা এমন পর্যায়ে চলে গেছে, যেটা লিমিটলেস (সীমাহীন)। যে কারণে কিছুটা ডিসিপ্লিনের অভাবও হয়ে গেছে,’ যোগ করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আবারও বলবো, নিয়ন্ত্রণ কিংবা নজরদারির প্রশ্ন আসে না। আমরা এগুলোর পক্ষে না, আমরা করতে চাই না। আমরা এগুলোতে বিশ্বাস করি না। আমরা মুক্ত গণমাধ্যম ও স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাস করি। তবে, আপনাদের দাবির সাথে আমি একাত্মতা প্রকাশ করছি এবং পোষণ করছি—একটা ডিসিপ্লিন আনা দরকার। যেহেতু নিবন্ধনের একটা প্রক্রিয়া আছে, সেটাকে কার্যকর করা দরকার।’

‘যারা নিবন্ধিত, তাদের কিছুটা প্রণোদনা ও সহায়তা দেওয়ার দরকার আছে, দায়িত্বশীল সাংবাদিকতাকে প্রমোট (এগিয়ে) করার জন্য। আর অনিবন্ধিত অনলাইন পোর্টালগুলোর মাধ্যমে অনেক চটকদার, অসত্য, মানহানিকর ও ডিসইনফরমেশন ক্যাম্পেইন হয়। এটা একটা ভালো দিক—সাংবাদিক মহলই চাচ্ছেন একটি শৃঙ্খল ডিসিপ্লিনযুক্ত সাংবাদিকতার বিকাশ। এখানে পূর্ণাঙ্গভাবে আপনাদের সাথে একমত।’

তিনি আরও বলেন, ‘সংবাদমাধ্যমের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা ও সব ধরনের নজরদারির বাইরে আমরা এখানে প্রমোট করতে চাই। কারণ আমরা বিশ্বাস করি, এটা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অংশ।’

‘আমাদের এখন ৪২৬টি নিবন্ধিত অনলাইন পোর্টাল আছে। এরমধ্যে ২১৩টির মূলধারার গণমাধ্যম আছে— ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া। আর ২১৩টি কেবল অনলাইন নিউজ পোর্টাল। আরও কিছু প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে,’ বলেন তথ্যপ্রতিমন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, ‘নতুন কেউ অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিয়ে আসতে চাইলে তাদের নিজেদের প্রমাণ করার সময় দেওয়া দরকার। আর যারা অনিবন্ধিত, আমি মনে করি, অবৈধভাবে কোনো কিছু সঠিক না, তারা সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে না। সেগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেব। আর এটা আপনাদের (সাংবাদিক) দাবি। আমি কিন্তু বলছি না। কাজেই আমি সরকারের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আপনাদের দাবি পূরণের ঘোষণা দিচ্ছি।’

‌‌‘আমি চাই না, সরকারের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আমি ঘোষণা দিলাম যে অনিবন্ধিত অনলাইন বন্ধ করে দেব, কালকে হেডলাইন করে পরের দিন আলাপ হবে, সরকার তো গণমাধ্যমের গলাটিপে ধরছে। সেটা আমি চাই না। সাংবাদিকরাই এমনটা বলছেন।’

এ সময়ে ওনাব সভাপতি মোল্লাহ এম আমজাদ হোসেন, সহসভাপতি লতিফুল বারী হামিম ও সৌমিত্র দেব, যুগ্ম সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান ও আশরাফুল কবির আসিফ, কার্যনির্বাহী সদস্য নজরুল ইসলাম মিঠু, তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু, রফিকুল বাসার, হামিদ মো. জসিম, মহসিন হোসেন, অয়ন আহমেদ, খোকন কুমার রায়সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/জেআর/এনএস

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন