বিজ্ঞাপন

এখনও ফাঁকা ঢাকা, রোববার থেকে ফিরতে পারে পুরনো রূপে

April 17, 2024 | 11:10 pm

রাজনীন ফারজানা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ঈদের এক সপ্তাহ পরেও রাজধানী ঢাকা এখনও অনেকটাই ফাঁকা। শুরু হয়নি ঢাকার চিরাচরিত ট্রাফিক জ্যাম, ফলে স্বস্তিতে চলাচল করছেন নগরবাসী।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর অধিকাংশ এলাকারই যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। ঈদুল ফিতর ও পয়লা বৈশাখের ৬ দিনের ছুটি শেষে গত সোমবার সরকারি অফিস-আদালত খুললেও বন্ধ অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এখনও খোলেনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিপণী বিতান ও মার্কেটও খোলেনি সব, তাই রাজধানীজুড়ে স্বাভাবিক যান চলাচল।

সকাল থেকেই রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব, এলিফ্যান্ট রোড, কাওরানবাজার, মিরপুর রোড ফার্মগেট এলাকায় যানজট ছিল না। উত্তরা, গুলশান, মগবাজার, বাড্ডা, রামপুরা, মতিঝিল এলাকাতেও ছিল একই চিত্র।

ঢাকার ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তারাও বলছেন, সড়কের অবস্থা স্বাভাবিক। এখন তাদের মূল চ্যালেঞ্জই গতি নিয়ন্ত্রণ করা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা মূল সড়কে উঠতে না দেওয়া।

বিজ্ঞাপন

ঢাকার ভেতরে দুর্ঘটনা ঠেকাতে গতি নিয়ন্ত্রণ মূল চ্যালেঞ্জ হলেও ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে ভিড় কিছুটা বেশি। ঈদের পরদিন থেকেই নানা মাধ্যমে ঢাকায় ফিরছেন মানুষ।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের ওয়ারি অঞ্চলের উপ-পুলিশ কমিশনার আশরাফ ইমাম বলেন, ‘আজ ট্রাফিক ব্যবস্থা স্বাভাবিক ছিল। তবে ফ্লাইওভারের টোল আদায়ের কারণে বিলম্ব হওয়ায় মাঝে মাঝে নিচের সড়কে ট্রেইল হয়েছে। তবে সবকিছু সহনীয় পর্যায়ে ছিল।’

উল্লেখ্য, ঢাকার প্রবেশপথ যাত্রাবাড়ী এই অঞ্চলের অন্তর্গত।

বিজ্ঞাপন

ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের মতিঝিল অঞ্চলের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাইনুল হাসান বলেন, ‘মতিঝিল অঞ্চলে তেমন ভিড় নেই। খুব কম সংখ্যক গাড়ি চলাচল করছে। তবে ফাঁকা রাস্তায় ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল বা সিএনজিচালিত অটোরিকশা- সবারই অতিরিক্ত গতি উঠানোর প্রবণতা থাকে।’ বর্তমানে তাদের মূল চ্যালেঞ্জ গতি নিয়ন্ত্রণ ও মূল সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা উঠতে না দেওয়া বলেও জানান তিনি।

তবে অন্য এলাকায় গাড়ির চাপ কম থাকলেও চ্যালেঞ্জ কমেনি গুলশান এলাকার। এই অঞ্চলের ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন বলেন, ‘অফিস খুলতে শুরু করেছে। তাই সড়কে গাড়ির চাপও বেড়েছে কিছুটা, কিন্তু তাকে স্বাভাবিকই বলা যায়।’

তিনি বলেন, ‘এই এলাকায় ব্যক্তিগত গাড়ি বেশি। আবার এদিকের বাসিন্দারা দেখা যায়, ঢাকাতেই ছিলেন ঈদের সময়। ফলে ঈদের সময়েও সিগন্যালে কিছুটা চাপ ছিল। আবার এখন অফিস খুলতে শুরু করায় যানবাহনের চাপও বাড়তে শুরু করেছে।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে ফাঁকা ঢাকায় স্বস্তিতে চলাচল করে খুশি নগরবাসী। তারা বলছেন, এমন ঢাকা যদি সারাবছর থাকতো কতই না ভালো হতো! সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেকেই মজা করে লিখছেন, ‘যারা নাড়ির টানে বাড়ি গেছেন, তারা আর আইসেন না ঢাকায়। আমাদের কিছুটা স্বস্তিতে কাটাতে দেন।’

ঈদের পর আজই কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন বেসরকারি চাকরিজীবী সোহেল রানা। বললেন, ‘উত্তরা থেকে বাসে উঠে একটানে ফার্মগেট চলে আসছি। অন্যান্য সময় যেখানে দেড় দুই ঘণ্টাও লেগে যায়, সেখানে আজ সকালে লেগেছে আধাঘণ্টা। একবার বিজয় সরণির সিগন্যালে পড়লে তো জানেনই কী অবস্থা হয়। বাসা থেকে দুই ঘণ্টা হাতে সময় নিয়ে বের হয়েও অনেকসময় লেট হয়ে যায়।’

‘জ্যাম নাই আবার ভিড় নাই, তাই তীব্র গরমেও খারাপ লাগেনি। এত গরমে কিছুদিন পর রাস্তায় ভিড় শুরু হলে কীভাবে চলাচল করবো তাই ভাবছি’, উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।

মোহাম্মদপুর থেকে কারওয়ানবাজার অফিস করা ফাহমিদ জানান, সাধারণ সময়ে আসাদ গেটের সিগন্যাল পার হতেই যেখানে আধাঘণ্টা লেগে যায় সেখানে এখন বাসা টু অফিসই যাওয়া-আসা করছি আধাঘণ্টায়। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য সময় দেখা যায় বাস বা লেগুনায় যাওয়া আসা করতে এক ঘণ্টা লাগে কিন্তু সিগন্যালগুলোতে জ্যামে পড়লেই লেট। দেখা যায় তেজগাঁও কলেজের সামনে থেকে হেঁটে অফিসে যাই জ্যাম এড়াতে। আবার কয়েকবার ভেঙে ভেঙে রিকশা নিই।’

রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকায় এবং বাস, লেগুনা কম থাকায় পুরোটা পথ রিকশায় যাতায়াত করছেন ফাহমিদ। কিন্তু ঈদের আগে থেকে শুরু হওয়া বাড়তি ভাড়া দিয়ে যাচ্ছেন এখনও।

বাড়তি ভাড়া বা রিকশার দৌরাত্ম্য থাকলেও ফাঁকা ঢাকায় স্বস্তিতে চলাচল করতে পেরে সন্তুষ্টি জানাচ্ছেন নগরবাসী। ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, এমন পরিবেশ হয়তো পাওয়া যাবে আর দুয়েকদিন। আগামী রোববার থেকেই ঢাকা পুরনো রূপে ফিরবে বলেও জানান তারা।

সারাবাংলা/আরএফ/এমও

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন