বিজ্ঞাপন

রোমাঞ্চকর ম্যাচে টাইব্রেকারে সিটিকে হারিয়ে সেমিতে রিয়াল

April 18, 2024 | 4:00 am

স্পোর্টস ডেস্ক

রিয়াল মাদ্রিদের ঘরের মাঠে ৩-৩ গোলে ড্র করে আসে ম্যানচেস্টার সিটি। নিজেদের ঘরের মাঠে গেল মৌসুমের মতো আটকে দেওয়ার কৌশল পেপ গার্দিওলার। তবে ম্যাচের শুরুতেই গোল হজম করে ধাক্কা খায় সিটি। এরপরেই গোটা ম্যাচজুড়ে সিটির দাপট। যদিও গোল পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধ পর্যন্ত। দ্বিতীয়ার্ধের অনেকটা সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর কাঙ্ক্ষিত গোলে সমতা ফিরিয়ে ম্যাচ টেনে নিল তারা অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে কেউ পেল না গোলের দেখা। ম্যাচে বেশিরভাগ সময় কোণঠাসা হয়ে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ বাজিমাত করল টাইব্রেকারে। শিরোপাধারীদের বিদায় করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি ফাইনালে কার্লো আনচেলত্তির দল।

বিজ্ঞাপন

ইতিহাদ স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে ১-১ সমতার পর ম্যাচের মীমাংসার জন্য খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে রিয়াল মাদ্রিদ ৪-৩ ব্যবধানে জিতে নেয়। আর নিশ্চিত করে সেমিফাইনাল।

ম্যানচেস্টারে রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যানচেস্টার সিটির মধ্যকার কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগের খেলা নির্ধারিত সময়ে সমতায়। এরপর অতিরিক্ত সময়েও জিততে পারেনি কোনো দল। এরপর ম্যাচের মীমাংসা টাইব্রেকারে। যেখানে দুটি শট ঠেকিয়ে ব্যবধান গড়ে দেন আন্দ্রে লুনিন। ম্যাচেও বেশ কয়েকটি দারুণ সেভ করেন তিনি। টাইব্রেকারে সিটির হয়ে জালের দেখা পান হুলিয়ান আলভারেজ, ফিল ফোডেন ও গোলরক্ষক এডারসন। বার্নার্দো সিলভা দুর্বল শট করেন গোলরক্ষক বরাবর। মাতেও কোভাচিচের শটও ঠেকিয়ে দেন লুনিন।

অন্যদিকে রিয়ালের লুকা মদ্রিচের নেওয়া প্রথম শট এডারসন ঠেকিয়ে দিলেও বাকি চার শটে গোল করেন জুড বেলিংহাম, লুকাস ভাসকেজ, নাচো ফার্নান্দেজ এবং অ্যান্তোনিও রুডিগার। এই জার্মান ডিফেন্ডার বল জালে পাঠাতেই উৎসবে মেতে ওঠে সফরকারীরা।

বিজ্ঞাপন

গেল মৌসুমেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদকে নিজেদের মাঠেই ৪-০ গোলের ব্যবধানে বিধ্বস্ত করেছিল সিটি। তবে এবার পেপ গার্দিওলার দলের শিরোপা ধরে রাখার অভিযান থমকে গেল শেষ আটেই। থামল টানা দ্বিতীয়বারের মতো ট্রেবল জয়ের আশাও।

৬৭ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ৩৩টি শট নিয়ে ৯টি লক্ষ্যে রাখে তারা। সেখানে রিয়ালের ৮ শটের ৩টি লক্ষ্যে ছিল। বিস্ময়কর হলেও সত্যি, রদ্রিগোর গোলের পর লক্ষ্যে আর শটই নিতে পারেনি রিয়াল। শেষ হাসি যদিও থাকল তাদের মুখেই। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে খেলবে প্রতিযোগিতাটির রেকর্ড ১৪ বারের চ্যাম্পিয়নরা।

ইতিহাদে ম্যাচের ১২তম মিনিটে দারুণ এক গোল করে রিয়ালকে এগিয়ে নেন রদ্রিগো। নিজেদের অর্ধ থেকে দানি কারভাহালের উঁচু করে বাড়ানো বল দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বেলিংহাম দেন ফেদে ভালভার্দেকে। উরুগুয়ের এই উইঙ্গারের পাস বক্সে পেয়ে ভিনিসিয়াস জুনিয়র বল দেন অন্য পাশে থাকা রদ্রিগোকে। তার প্রথম শট এডারসন ফিরিয়ে দিলেও ফিরতি শটে ঠিকানা খুঁজে নেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার। ১৯তম মিনিটে সমতায় ফিরতে পারত সিটি। বক্সের ভেতর থেকে আর্লিং হালান্ডের হেড ক্রসবারে লাগে। ফিরতি বল কাছ থেকে লক্ষ্যে রাখতে পারেননি বাঁর্নার্দো সিলভা।

বিজ্ঞাপন

এরপর একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে সিটি আর রিয়াল মাদ্রিদ রক্ষণদূর্গ গড়ে তা রুখতে শুরু করে। প্রথমার্ধের বাকি সময়ে আরও বেশ কয়েক দফায় রিয়ালের রক্ষণে ভীতি ছড়ায় সিটি। তবে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা তারা পায়নি। যোগ করা সময়ে বক্সের বাইরে থেকে ফোডেনের শট ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে উড়ে যায়।

ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ফিরেও আক্রমণের ধার ধরে রাখে সিটিজেনরা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে জ্যাক গ্রিলিশের জোরাল ভলি ফিরিয়ে দেন লুনিন। ৫১তম মিনিটে আত্মঘাতী গোল করতে বসেছিলেন নাচো, শেষ মুহূর্তে বল ক্লিয়ার করে দলকে বাঁচান রিয়াল ডিফেন্ডার। ৭৬তম মিনিটে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। বাঁ দিকের বাইলাইনের কাছাকাছি থেকে জেরেমি ডোকুর নিচু শট ক্লিয়ার করতে পারেননি রুডিগার। কাছ থেকে চমৎকার শটে বল জালে পাঠান ডি ব্রুইন।

এরপরে রিয়ালকে আরও কোণঠাসা করে ফেলে সিটি। গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠা সিটি ৭৮ মিনিটে লিড নেওয়ার খুব কাছে গিয়েও পারেনি। ডি ব্রুইনের শটে বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠান লুনিন। ৮১তম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ হারান বেলজিয়ান মিডফিল্ডার। বক্সে ভালো পজিশনে বল পেয়ে উড়িয়ে মারেন তিনি।

নির্ধারিত ৯০ মিনিটে আর দুই দলের কেউই গোল না পাওয়ায় ম্যাচ শেষ হয় ১-১ সমতায়। আর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধেও রিয়াল রক্ষণ দৃঢ় করে রাখে আর সিটিকে করতে দেয়নি গোল। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ের একেবারে শেষ মুহূর্তে কর্নার পায় সিটি। ম্যানুয়েল আকনজির ওই কর্নারে হলান্ডের প্রচেষ্টা ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়।

বিজ্ঞাপন

অতিরিক্ত সময়েও যথারীতি আক্রমণে আধিপত্য ধরে রাখে সিটি। প্রথমার্ধে গোলরক্ষককে তেমন পরীক্ষায় অবশ্য ফেলতে পারেনি তারা। এই অর্ধের যোগ করা সময়ে সুযোগ আসে রুডিগারের সামনে, তবে কাছ থেকে রিয়ালের ডিফেন্ডারের প্রচেষ্টা লক্ষ্যে থাকেনি। দ্বিতীয়ার্ধেও তেমন কিছু করে দেখাতে পারেনি কোনো দল। এরপর টাইব্রেকারে জিতে রিয়ালের উল্লাস।

সারাবাংলা/এসএস

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন