বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশি ছাত্রের বীরত্ব: চিকিৎসা বিল মওকুফ করল কানাডা সরকার

April 19, 2024 | 3:48 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

কানাডার ভ্যানকুভারে গত বছরের ডিসেম্বরে এক ছিনতাইকারীকে ধরতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে আহত হন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মিরাজ আহমেদ। তার অসম সাহসিকতার ভূয়সী প্রশংসা হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসায় মোটা অংকের অর্থ খরচ হয়েছিল মিরাজের। বিল উঠেছিল দুই হাজার কানাডিয়ান ডলার। ঘটনার প্রায় চার মাস পর এবার সেই বিল মওকুফ করে দিয়েছে সেদেশের সরকার।

বিজ্ঞাপন

কানাডার সংবাদ মাধ্যম সিবিসির খবরে বলা হয়, ভ্যানকুভারে গত ডিসেম্বরে ফেসবুক মার্কেটপ্লেস লেনদেনের সময় কম্পিউটারের সরঞ্জামের একটি টুকরো ছিনতাই করতে চেয়েছিল এক ব্যক্তি। দিনটি ছিল বক্সিং ডে ছুটির দিন। তখন সবেমাত্র অলিম্পিক ভিলেজে খাবার ডেলিভারি দিয়েছেন মিরাজ। হঠাৎ দেখতে পান এক ব্যক্তির উপর পিপার স্প্রে প্রয়োগ করা হয়েছে। আরেকজন গাড়িতে করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তখন মিরাজ আহমেদ ও আরেক পথচারী মিলে ওই পলাতককে ধরে ফেলেন। পুলিশ আসা পর্যন্ত ছিনতাইকারীকে আটকে রাখেন তারা। এর মধ্যেই হাতে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন মিরাজ। তিনি পড়াশুনার পাশাপাশি পার্টটাইম ফুড ডেলিভারির কাজ করেন।

চিকিৎসার জন্য মিরাজ আহমেদের হাতে অস্ত্রোপচার করতে হয়। মেডিকেল সার্ভিসেস প্ল্যান (এমএসপি) পরিষেবার আওতায় না থাকায় বড় অংকের বিল পরিশোধ করতে হয় তাকে। এই বিল বহন তার জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। পরে তিনি এমএসপি পরিষেবার জন্য আবেদন করেন।

তার অসম সাহসিকতা নজর এড়ায়নি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের। এমএসপি আবেদন গ্রহণ করে ডিসেম্বরের চিকিৎসা বিল মওকুফ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অফিস থেকে মিরাজ আহমেদকে ফোন করে বলা হয়, তার চিকিৎসা বিল মওকুফ করা হয়েছে। চিকিৎসার জন্য যে ঋণ ছিল সেটা আর নেই।

বিজ্ঞাপন

মিরাজ আহমেদ সিবিসি নিউজকে বলেন, তারা গতকাল আমাকে ফোন করেছিল। আমাকে বলেছিল, আর বিল নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। অবশ্যই আমি আমার অন্তর থেকে তাদের ধন্যবাদ জানাই। এটা আমার জন্য খুব ভালো খবর। কারণ এই ঋণটি একটি বোঝা ছিল।

এদিকে মঙ্গলবার প্রসিকিউশন সার্ভিস ঘোষণা করেছে, বক্সিং ডেতে ছিনতাইয়ের জন্য গ্রেফতার ব্যক্তি শেলডন ইলবেগি তার অপরাধ স্বীকার করেছেন। তিনি অস্ত্র দিয়ে হামলা ও ছিনতাইয়ের জন্য দুটি অভিযোগে অভিযুক্ত।

বিজ্ঞাপন

তাকে ধরতে গিয়ে আহত হওয়া মিরাজ আহমেদ বর্তমানে বি সি ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে পড়াশুনা করছেন। আহত হওয়ার কারণে প্রায় আড়াই মাস কোনো কাজ করতে পারেননি তিনি। এতে আর্থিক সংকটে পড়েছেন মিরাজ।

ছুরিকাঘাতের প্রায় চার মাস পরে এখনও বাম হাত দিয়ে কোনো কিছু ঠিকমতো ধরতে পারেন না মিরাজ আহমেদ। তিনি বলেন, বাম হাত ডান হাতের চেয়ে বেশি দুর্বল। কিন্তু টেন্ডন সেরে উঠায় এখন অনেকটা ভালো বোধ করছি।

মিরাজ আহমেদ জানান, বক্সিং ডেতে তিনি যা করেছেন তা নিয়ে কোনো দুঃখ নেই তার। একই ঘটনা আবারও তার সামনে ঘটলে একইভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবেন তিনি। মিরাজ আহমেদ বলেন, আমি কখনই সেই পরিস্থিতিতে কী করেছিলাম তা নিয়ে দুঃখ করিনি। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই ঘটনা ঘটেছিল। ভবিষ্যতে যদি এমন কিছু ঘটে, আমি আবারও একই কাজ করব।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আইই

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন