বিজ্ঞাপন

বেনজীরের সম্পদ: দুদক তদন্ত না করলে আদালতে যাবেন ব্যারিস্টার সুমন

April 21, 2024 | 2:56 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে অবৈধ সম্পদ থাকার যে অভিযোগ উঠেছে, সে বিষয়ে তদন্ত চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে আবেদন জমা দিয়েছেন হবিগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক ওরফে ব্যারিস্টার সুমন। দুদক এ বিষয়ে কোনো তদন্ত না করলে প্রয়োজনে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ব্যারিস্টার সুমন। এর আগে তিনি দুদকে ওই আবেদন জমা দেন।

ব্রিফিংয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী সাবেক আইজিপির সম্পদের পরিমাণের তথ্য তুলে ধরেন ব্যারিস্টার সুমন। তিনি বলেন, উনার (সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ) সম্পদের ফিরিস্তি এত বড় যে কোনটা আগে বলব, কোনটা পরে বলব, মাথায় ধরে না। অথচ উনার ৩৪ বছরের চাকরিজীবনে বেতন-ভাতাসহ মোট আয় এক কোটি ৭৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ পৌনে দুই কোটি টাকারও কম। কিন্তু তার স্ত্রী ও মেয়েদের নামে কয়েক শ কোটি টাকার সম্পদ। কিন্তু এটা নিয়ে কেউ কোনো কথা বলে না।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আমি বলছি না যে উনি দুর্নীতিবাজ। কিন্তু উনার এত এত সম্পদের হিসাব এসেছে, সেটা কেউ তদন্ত (এনকোয়ারি) করার কথা বলবে না? কিন্তু কেউ কথা বলেনি। ৩১ তারিখে (৩১ মার্চ) ওই রিপোর্ট এসেছে। তারপর থেকে আমি কাউকে কথা বলতে শুনিনি। সবাই ভয় পায়। মামলা দেবে বা এটা করবে, ওটা করবে— এই ভয় পায় সবাই। কিন্তু এটা বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। স্বাধীন বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুকন্যা স্পষ্ট বলেছেন, দুর্নীতি প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। তাইলে এরকম একজন আইজপির এত সম্পদের হিসাব আসছে, কেউ কোনো কথা বলবে না কেন?

বিজ্ঞাপন

সাবেক একজন আইজিপির পরিবারের সদস্যদের নামে এত সম্পদ থাকাকে অশনি সংকেত বলে মনে করেন হবিগঞ্জ-৪ আসনের এই সংসদ সদস্য। তিনি বলেন, এরপর যারা দায়িত্বে আসবেন, তাদের সামনে তো কেউ না কেউ রোল মডেল হবেন। যারা অসৎ, তাদের সামনে মডেলটা কে হবেন? তারা যদি বেনজীর সাহেবকে মডেল ধরে নেন, তারা তো আরও আরও সম্পদ গড়ার চেষ্টা করবেন। সৎ অফিসাররা তখন আরও হতাশ হয়ে পড়বেন।

নিজ এলাকার উদাহরণ দিয়ে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আমার সংসদীয় এলাকায় দুটি উপজেলা, দুটি থানা। দুই থানায় দুজন ওসি আছেন। আমি এখন তাদের কোন বিবেকে বলব যে আপনারা দুই নম্বরি করবেন না? তারা যদি বলেন, আপনি কি আমাদের চাকরি দিয়েছেন? তারা তো বলতেই পারেন, আমাদের যারা ঊর্ধ্বতন অফিসার, তারা কত সম্পদ গড়েছেন আপনি জানেন? যে সম্পদের হিসাব দেখছি, ওসি-এসপিরা যদি একজন ব্যারিস্টার সুমনকে এমপি না মানেন, তাতে কী যায় আসে!

দুদকের সমালোচনা করে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, দুদক তো নিজের গাড়ি নিজেই স্টার্ট করতে পারে না। সাব-রেজিস্ট্রারের মামলা নিয়ে পড়ে থাকে। বড় জিনিস দেখলেই চুপসে যায়।

বিজ্ঞাপন

তবু দুদকের কাছে সাবেক আইজিপির সম্পদের তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছেন ব্যারিস্টার সুমন। দুদক তদন্ত না করলে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বলেন, কেউ তো কোনো কথা বলে না। তবু ভাবলাম, দুদকে (তদন্তের আবেদন) দিয়ে আসি। আর তারা যদি মনে করে এত বড় কিছু করতে পারবে না, তাহলে মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট তো আছেনই। আমি আবার এখানে আসব। আমি কতটুকু কী করতে পারব, জানি না। তবে চোখে চোখ রেখে বলতে পারব, চেষ্টা করে গেছি।

এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দুদকে আবেদন জমা দেন ব্যারিস্টার সুমন। আবেদনে তিনি লিখেছেন, বেনজীর আহমেদ বাংলাদেশ পুলিশের ৩০তম আইজি ছিলেন। ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি অবসর গ্রহণ করেন। কিন্তু চাকরিতে থাকাকালে তার স্ত্রী ও মেয়েদের নামে তিনি বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন বলে খবর বেরিয়েছে, যে সম্পদগুলো তার আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

ব্যারিস্টার সুমন লিখেছেন, বেনজীর আহমেদের বৈধ যে আয়, তার পরিবারের সদস্যদের নামে সম্পদের পরিমাণ তার তুলনায় অনেক বেশি। ফলে বেনজীর আহমেদ চাকরিতে থাকাকালে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে এসব সম্পদ অর্জন করেছেন বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে। এ পরিস্থিতিতে বেনজীর আহমেদ এবং তার স্ত্রী সন্তানদের সম্পদের তদন্তে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করছি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন