বিজ্ঞাপন

ঈদযাত্রায় নিহত ৩২০, যাত্রী কল্যাণের হিসাব অগ্রহণযোগ্য: বিআরটিএ

April 21, 2024 | 9:33 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: এবারের ঈদুল ফিতরের আগে ও পরের ১৭ দিন সময়কে ঈদযাত্রার সময় ধরে সড়ক দুর্ঘটনার হিসাব দিযেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। সংস্থাটির হিসাব বলছে, ঈদের আগে-পরে ৪ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত ১৭ দিনে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৮৬টি। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩২০ জন, আহত হয়েছেন আরও ৪৬২ জন।

বিজ্ঞাপন

বিআরটিএর হিসাব বলছে, ঈদের আগে-পরের এই ১৭ দিনে গড়ে প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটেছে প্রায় ১৭টি। এই সময়ে গড়ে প্রতিদিন সড়কে নিহত হয়েছেন প্রায় ১৯ জন, আহত হয়েছেন আরও প্রায় ২৭ জন। গত বছরের তুলনায় এবার ঈদযাত্রার এই সময়ে সড়কে প্রাণহানি বেড়েছে প্রায় ১৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার রোববার (২১ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলন করে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির এসব তথ্য প্রকাশ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের তথ্য তুলে ধরেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার

এর আগে গতকাল শনিবার (২০ এপ্রিল) যাত্রী কল্যাণ সমিতির সংবাদ সম্মেলন করে ঈদযাত্রায় দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির তথ্য প্রকাশ করে। ওই সংবাদ সম্মেলনে সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, ৪ এপ্রিল থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত ১৫ দিনে ঈদযাত্রায় ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও এক হাজার ৩৯৮ জন।

বিজ্ঞাপন

বিআরটিএ ১৭ দিনের সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের যে হিসাব প্রকাশ করেছে, তার চেয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির ১৫ দিনের দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি। বিআরটিএর হিসেবে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১৭টি দুর্ঘটনা ও প্রায় ১৯ জন নিহতের তথ্য উঠে এলেও যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাব বলছে, গড়ে প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৬টির বেশি, গড়ে প্রতিদিন সড়কে নিহত হয়েছেন ২৭ জনেরও বেশি।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির দেওয়া এই পরিসংখ্যানকে অবশ্য আমলে নিচ্ছে না বিআরটিএ। সংস্থাটির চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অগ্রহণযোগ্য।

আরও পড়ুন- ঈদযাত্রায় সড়কে নিহত ৪০৭

বিজ্ঞাপন

বিআরটিএ তাদের পর্যালোচনায় বলছে, এবার গড় মৃত্যু বাড়লেও গত বছরের তুলনায় গড় দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়েনি। সংস্থাটির চেয়ারম্যান বলেন, বিআরটিএর নেওয়া বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে একটি যানজটমুক্ত ঈদযাত্রা উপহার দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তবে দুটি বড় সড়ক দুর্ঘটনা এ সফলতাকে কিছুটা ম্লান করেছে।

বিআরটিএ চেয়ারম্যান জানান, ফরিদপুর সদর ও ঝালকাঠির গাবখান সেতুর টোল প্লাজায় সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনা দুটি জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, এআরআই ও বিআরটিএর সমন্বয়ে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের গঠন করা স্ট্যান্ডিং কমিটির মাধ্যমে তদন্ত করা হয়েছে। যৌথ তদন্ত শেষে জানা গেছে, দুটি দুর্ঘটনাতেই জড়িত মোটরযানগুলোর কাগজপত্র মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল। ফলে তাদের নিবন্ধন সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়েছে।

বিভাগভিত্তিক দুর্ঘটনার তথ্য তুলে ধরে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, ঢাকা বিভাগে ৫৮টি দুর্ঘটনায় ৭৩ জন নিহত ও ৭১ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৭টি দুর্ঘটনায় ৪৭ জন নিহত ও ১০৮ জন আহত, রাজশাহী বিভাগে ৩৮টি দুর্ঘটনায় ৪৩ জন নিহত ও ৩৪ জন আহত, খুলনা বিভাগে ২৯টি দুর্ঘটনায় ৩১ জন নিহত ও ৪৩ জন আহত, বরিশাল বিভাগে ২৫টি দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত ও ৪৭ জন আহত, সিলেট বিভাগে ১৪টি দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত ও ২৪ জন আহত, রংপুর বিভাগে ১৯টি দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত ও ২০ জন আহত এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২৪টি দুর্ঘটনায় ৩০ জন নিহত ও ৫৮ জন আহত হয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বিআরটিএ জানায়, গত বছর ঈদুল ফিতরের ১৫ দিনে (২০২৩ সালের ১৫ থেকে ২৯ এপ্রিল) মোট ২৫৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩৯ জন নিহত ও ৫১০ জন আহত হন। অর্থাৎ গত বছরও ঈদের এই সময়ে গড়ে প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে প্রায় ১৭টি। ওই বছর প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছেন প্রায় ১৬ জন, আহত হয়েছেন আরও ৩৪ জন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরএফ/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন