বিজ্ঞাপন

রোমাঞ্চকর ক্লাসিকো জিতে লিগ শিরোপায় এক হাত রিয়ালের

April 22, 2024 | 3:12 am

স্পোর্টস ডেস্ক

রিয়ালের ঘরের মাঠে ম্যাচের শুরুতেই লিড বার্সেলোনার। পিছিয়ে পড়ে পেনাল্টি থেকে ভিনিসিয়াসের গোলে সমতায় রিয়াল। এরপর গোটা ম্যাচজুড়ে চললো রিয়ালের গোল মিসের মহড়া। তার ভেতরেই দ্বিতীয়ার্ধে আবারও লিড বার্সেলোনার। তবে আবারও রিয়ালের প্রত্যাবর্তন। ৭৩ মিনিটে সমতায় ফেরার পর ৯১তম মিনিটে জুড বেলিংহামের গোলে রিয়াল ম্যাচে প্রথমবারের মতো লিড নেয়। আর তাতেই ৩-২ গোলের ব্যবধানে জয় পায় রিয়াল। এই জয়ে লা লিগার শিরোপা জয়ের পথে আরও এক পা এগিয়ে গেল লস ব্ল্যাঙ্কোসরা।

বিজ্ঞাপন

এই জয়ে লা লিগায় বার্সেলোনার চেয়ে ১১ পয়েন্টের ব্যবধানে এগিয়ে গেল রিয়াল। ৩২ ম্যাচে ২৫ জয় আর ৬ ড্র’তে রিয়ালের পয়েন্ট ৮১। সমান ম্যাচে ২১ জয় ৭ ড্র’তে ৭০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে বার্সেলোনা। ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে জিরুনা আর ৬১ পয়েন্ট নিয়ে চারে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ।

লা লিগায় চলতি মৌসুমে দুই দলের প্রথম দেখায় বার্সেলোনার মাঠে পিছিয়ে পড়েও দারুণভাগে ঘুরে দাঁড়ায় রিয়াল মাদ্রিদ। জুড বেলিংহাম জোড়া গোল করে রিয়ালকে এনে দেন ২-১ ব্যবধানের জয়। এরপর জানুয়ারিতে ভিন্ন প্রতিযোগিতায় আবারও মুখোমুখি দুই দল। স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করে শিরোপা জেতে মাদ্রিদের দলটি।

মৌসুমের শেষ এল ক্লাসিকোতে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে মুখোমুখি দুই দল। টানা দুই হারের বদলা নিতে বার্নাব্যুতে শুরুতেই এগিয়ে যায় বার্সা। ষষ্ঠ মিনিটে কর্নারে উড়ে আসা বল দূরের পোস্টে পেয়ে অনেকটা লাফিয়ে হেডে দলকে এগিয়ে নেন ডেনমার্কের ডিফেন্ডার ক্রিস্টেনসেন। মৌসুমের প্রথম ক্লাসিকোতেও ষষ্ঠ মিনিটে গুন্দোয়ানের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল বার্সেলোনা।

বিজ্ঞাপন

গোল হজমের দুই মিনিট পরই পাল্টা জবাব দেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পায় রিয়াল। কিন্তু আট গজ দূর থেকে উড়িয়ে মারেন ভিনিসিউস। পরের মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর একটি হাফ-চান্স পেলেও কাজে লাগাতে পারেননি লামিন ইয়ামাল। তবে গোলের জন্য খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি রিয়ালকে। ১৭তম মিনিটে বল নিয়ে ডান দিক থেকে ডি বক্সে ঢুকে পড়েন লুকাস ভাস্কেজ। তাকে আটকাতে ফাউল করতে বাধ্য হন কুবারিস। আর সেই ফাউলের সঙ্গে সঙ্গেই রেফারির পেনাল্টির বাঁশি। স্পটকিক থেকে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের দারুণ গোলে সমতায় ফেরে রিয়াল।

লা লিগায় এটি ভিনিসিয়াসের ১৩তম গোল। বার্সেলোনার বিপক্ষে সব প্রতিযোগিতা মিলিতে ৭ম গোল, এছাড়াও আছে চারটি অ্যাসিস্টও।

এরপর ম্যাচের ২৮তম মিনিটে এক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। রাফিনহার ক্রস ছয় গজ বক্সে পেয়ে বাঁ পায়ের দারুণ এক টোকা দেন ইয়ামাল, বল ছুটে যায় লক্ষ্যে, কোনোমতে গোললাইনে তা ঠেকিয়ে দেন লুনিন। বার্সেলোনার পক্ষ থেকে অবশ্য জোরাল আবেদন করা হয় যে, বল গোললাইন পেরিয়ে গেছে। তবে ভিএআরে কয়েকবার দেখেও এর পক্ষে শক্ত প্রমাণ না পাওয়ায় বেঁচে যায় রিয়াল।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে কম আক্রমণ করছিল না রিয়ালও। একের পর এক গোলের সুযোগ তৈরি করলেও ডি বক্সের আশেপাশে গিয়েই খেই হারিয়ে ফেলছিল লস ব্ল্যাঙ্কোসরা। ৪৪তম মিনিটে ভালো একটি সুযোগ পায় রিয়াল। ছোট ছোট পাসে শাণানো আক্রমণে বক্সের বাইরে বল পান লুকা মদ্রিচ। তবে শটটা যথেষ্ট জোরে নিতে পারেননি তিনি, সহজেই ঠেকিয়ে দেন টার স্টেগান। খানিক পর আবারও বিপদে পড়তে যাচ্ছিল বার্সেলোনা। তাদের থেকে বল কেড়ে আক্রমণে ওঠেন ভিনিসিয়াস, ঢুকে পড়েন বক্সে। সামনে গোলরক্ষককে একা পেয়েও তিনি শট না নিয়ে বাঁ দিকে রদ্রিগোর উদ্দেশে বল বাড়ান, দারুণভাবে স্লাইড করে ঠেকিয়ে দেন ক্রিস্টেনসেন।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আরও বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে খেলতে থাকে রিয়াল। তৈরি করে সুযোগও। তবে আবারও গোল মিসের মহড়া শুরু হয় রিয়ালের। এর ভেতরেই ম্যাচের ৬৯তম মিনিটে দ্বিতীয়বারের মতো এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। বাঁ দিক থেকে ইয়ামালের বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট লুনিন ঝাঁপিয়ে ঠেকালেও দলকে বিপদমুক্ত করতে পারেননি, আলগা বল পেয়ে সহজেই জালে পাঠান ক্রিস্টেনসেনের বদলি নামা ফারমিন লোপেজ।

তবে বেশি সময় লিড ধরে রাখতে পারেনি বার্সেলোনা। ৭৩তম মিনিটে বাঁ দিক থেকে ভিনিসিয়াসের বাড়ানো বল বক্সে ফাঁকায় পেয়ে জোরাল হাফ ভলিতে গোলটি করেন ভাসকেজ।পাঁচ মিনিট পর দুর্দান্ত এক প্রতি আক্রমণে পরিষ্কার সুযোগ পেয়েছিলেন ভিনিসিয়াস। কিন্তু শেষটা আবারও ফলপ্রসু হয়নি তার, দুরূহ কোণ থেকে তার শট ঠেকিয়ে দেন টার স্টেগান।

ভিনিসাসের একের পর এক সুযোগ হাতছাড়া করায় যেন বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন রিয়াল কোচও। তাই তো তাকে তুলে নিয়ে মাঠে নামান হোসেলুকে। এছাড়া রদ্রিগোর জায়গায় ডিফেন্ডার এডার মিলিতাও আর টনি ক্রুসের বদলে ব্রাহিম দিয়াজকে মাঠে নামানো হয়।

বিজ্ঞাপন

এরপরেই ম্যাচে গতি ফিরে পায় রিয়াল। ম্যাচের বাকি সময় দারুণ সব আক্রমণে বার্সেলোনাকে ভুগিয়েছে রিয়াল। আর তাতে সাফল্যও পেয়ে যায় ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে সাফল্যও পেয়ে যায় তারা। ভাসকেজের ডান দিক বাড়ানো বল ছয় গজ বক্সের মুখে পেয়েও ডামি করে ছেড়ে দেন হোসেলু, দূরের পোস্টে বল পেয়ে কোনাকুনি শটে দলকে উচ্ছ্বাসে ভাসান বেলিংহাম।

রিয়ালের হয়ে অভিষেক মৌসুমেই অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্স দেখিয়ে যাচ্ছেন এই ইংলিশ মিডফিল্ডার। লা লিগায় এটি তার ১৭তম গোল। চোট থেকে ফেরার পর নিজেকে খুঁজে ফিরছিলেন তিনি। পাচ্ছিলেন না গোলের দেখাও। প্রায় আড়াই মাস পর, ঘরের মাঠে ক্লাসিকোর মঞ্চে সেই খরা কাটালেন ক্লাসিকোতে গোল করে। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সংখ্যাটা ২১। আর এল ক্লাসিকোতে এটি তার তৃতীয় গোল।

সারাবাংলা/এসএস

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন