বিজ্ঞাপন

এডিসের লার্ভা পেলে জেল-জরিমানার হুঁশিয়ারি মেয়র আতিকের

April 22, 2024 | 5:56 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: শুরু হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)র মাসব্যাপী ডেঙ্গু প্রতিরোধী সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান। ২৭ এপ্রিল থেকে অভিযানে এডিসের লার্ভা পাওয়া গেলে জেল-জরিমানার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর এলাকায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে একযোগে ডিএনসিসি’র ৫৪টি ওয়ার্ডে মাসব্যাপী জনসচেতনতামূলক প্রচার অভিযান উদ্বোধনকালে ডিএনসিসি মেয়র এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

মেয়র আতিক বলেন, ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে একযোগে ডিএনসিসি’র সব ওয়ার্ডে মাসব্যাপী সচেতনতামূলক প্রচার অভিযান শুরু করেছি। মানুষকে সচেতন করছি। তবে আগামী ২৭ এপ্রিল তারিখ থেকে কোনো বাসায় বা অফিসে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে জেল ও জরিমানা করা হবে।’

জেল-জরিমানা থেকে সরকারি অফিস ও সিটি করপোরেশনও বাদ যাবে না জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘সরকারি অফিসেও যদি লার্ভা পাওয়া যায় সে অফিসের যিনি দায়িত্বে আছেন তার বিরুদ্ধে মামলা হবে, জরিমানা হবে। এমনকি আমার সিটি করপোরেশনের কোনো অফিসেও যদি লার্ভা পাওয়া যায় সেই অফিসের কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমার ক্লিয়ার মেসেজ। লার্ভা পেলে মামলা হবে, জেল হবে, জরিমানা হবে এবং জরিমানার টাকার পরিমাণ আরও অনেক বেড়ে যাবে। আমাদের আরও ম্যাজিস্ট্রেট দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি।’

বিজ্ঞাপন

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘আমি আগেই ঘোষণা দিয়েছি ঈদের পর থেকে ডেঙ্গু মৌসুম শুরুর আগেই ডেঙ্গু প্রতিরোধে একযোগে ৫৪টি ওয়ার্ডে সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করব। বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি কারিগরি কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী পদক্ষেপ নিয়েছি। আমাদের কীটতত্ত্ববিদরা বলেছেন, এখন থেকেই মাঠে নামতে। তাই আমরা এই পদক্ষেপ নিয়েছি। সবার কাছে বিনীত অনুরোধ, আপনারা সচেতন হলে জেল-জরিমানা, মামলার দরকার নাই। তিন দিনে একদিন জমা পানি ফেলে দিন। এডিস মশা জন্মাতে পারে এমন জায়গাগুলো পরিষ্কার করুন। এডিস মশা কামড় না দিলে ডেঙ্গু হবে না। সচেতন হয়ে নিজে নিরাপদ থাকুন, অন্যকেও নিরাপদ রাখুন।’

মেয়র বলেন, ‘বিশেষজ্ঞদের মতে খালের ও ড্রেনের ময়লা পানিতে এডিস মশা জন্মায় না। জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশা জন্মায়। যেসব পরিত্যক্ত দ্রব্যাদিতে পানি জমে এডিসের লার্ভা জন্মাতে পারে সেসব দ্রব্যাদি সিটি করপোরেশন কিনে নিচ্ছে। তাই ডাবের খোসা, পরিত্যক্ত পলিথিন, চিপসের প্যাকেট, আইসক্রিমের কাপ, দইয়ের কাপ এগুলো যেখানে সেখানে না ফেলে ডিএনসিসির কাউন্সিলরদের কাছে জমা দিন।’

ঢাকা-১৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি ডেঙ্গু প্রতিরোধে রূপনগর এলাকার বাড়ি মালিক সমিতির সদস্যদের নিয়ে কাজ করছি। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সিটি করপোরেশনের একার কাজ নয়। দরকার জনসচেতনতা। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগসহ এলাকার সর্বস্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করে ডিএনসিসির মাসব্যাপী এই প্রচারণা অভিযান সফল করব।’

বিজ্ঞাপন

ডিএনসিসি মেয়রের উপদেষ্টা ও কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. কবিরুল বাসার বলেন, ‘আমি সকালে এই এলাকার কয়েকটি বাড়িতে পরিদর্শন করেছি। একটি বাড়িতে পরিত্যক্ত টায়ারে অসংখ্য লার্ভা পেয়েছি। দেখুন সিটি করপোরেশনের কর্মীরা কিন্তু বাড়ির ভিতরে পরিত্যক্ত টায়ার খুঁজে পাবে না। আমাদের নিজেদেরই এসব পরিষ্কার করতে হবে। কোথায় এসব লার্ভার উৎস আছে খুঁজে বের করুন এবং ধ্বংস করুন।’

ডিএনসিসির মাসব্যাপী জনসচেতনতামূলক প্রচার অভিযান উদ্বোধন শেষে ডিএনসিসি মেয়র এডিস মশার উৎসস্থল-গাড়ির পরিত্যক্ত টায়ার, ডাবের খোসা, মাটির পাত্র, খাবারের প্যাকেট, অব্যবহৃত কমোড এগুলো দেখিয়ে জনগণকে সচেতন করেন এবং এগুলো কেনার মাধ্যমে কার্যক্রমটি উদ্বোধন করেন। পরে ডিএনসিসি মেয়র অন্যান্য অতিথিরা, স্কাউট ও বিএনসিসির সদস্য এবং কাউন্সিলরসহ সবাইকে নিয়ে র‍্যালিতে অংশ নেন।

৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. তফাজ্জল হোসেনের (টেনু) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগনিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ, ডিএনসিসি’র প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মোঃ মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. ইমরুল কায়েস চৌধুরী, অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবেদ আলী, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর শিখা চক্রবর্তী প্রমুখ।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরএফ/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন