বিজ্ঞাপন

উদ্ধারের দাবি পুলিশের, স্বজনরা বলছে ‘মুক্তিপণে মুক্তি’

April 23, 2024 | 11:12 am

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

কক্সবাজার: টেকনাফে অপহরণের ২৬ ঘণ্টা পর পল্লী চিকিৎসকসহ দু’জনকে দুর্বৃত্তরা ছেড়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তারা বলছে, উদ্ধার অভিযানের মুখে অপহৃতদের ছেড়ে দিয়েছে অপহরণকারীরা। কিন্তু স্বজনসহ স্থানীয়রা বলছেন, ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে তাদের ছাড়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি জানান, সোমবার রাতে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শিলখালীর পাহাড়ি এলাকায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

মুক্তিপ্রাপ্তরা হলেন, উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের পশ্চিম থাইংখালী এলাকার জাকের হোসাইনের ছেলে পল্লী চিকিৎসক মো. জহির উদ্দিন (৫১) এবং টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর নয়াপাড়ার মৃত মো. শফির ছেলে মোহাম্মদ রফিক (৩২)।

পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া দু’জনই শারীরিকভাবে অক্ষত রয়েছেন। তাদের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। রোববার রাত ৯টায় টেকনাফের বাহারছড়া স্টেশনে চেম্বার শেষ করে অন্য যাত্রীদের সঙ্গে অটোরিকশা যোগে বাড়ি ফিরছিলেন। তাদের বহনকারী গাড়িটি শামলাপুর-হোয়াইক্যং সড়কের হোয়াইক্যং ঢালায় পৌঁছালে যাত্রীবেশি তিন জন অস্ত্রের মুখে চালককে জিম্মি করে। পরে পল্লী চিকিৎসক জহির উদ্দিনসহ দু’জনকে পাহাড়ি এলাকার দিকে তুলে নিয়ে যায়।

বিজ্ঞাপন

ঘটনার পরপরই অপহৃত জহির উদ্দিনের ভাই ও স্থানীয় সাংবাদিক মোহাম্মদ কমরুদ্দিন গণমাধ্যমের কাছে জানিয়েছিলেন, ‘ঘটনার ঘণ্টা দেড়েক পর তার ভাইয়ের মোবাইল ফোন নম্বর থেকে কল দিয়ে অজ্ঞাত পরিচয়ে এক ব্যক্তি ৬ লাখ মুক্তিপণ দাবি করেছিল।’

টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, অপহরণ ঘটনাটি পুলিশ অবহিত হওয়ার পর থেকে অপহৃতদের উদ্ধারে বিশেষ অভিযান শুরু করে। পুলিশের একাধিক দল রাত থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত রাখে। এতে সোমবার রাত ১১টার দিকে শিলখালী পাহাড়ি এলাকায় অভিযানের মুখে গ্রেফতার এড়াতে অপরাধীরা অপহৃত দুইজনকে ছেড়ে দিয়েছে।’

তবে স্বজনরা মুক্তিপণ দিয়েছে কিনা তা পুলিশ অবহিত নয় এবং উদ্ধার হওয়াদের জিজ্ঞাসাবাদের পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানান ওসি।

বিজ্ঞাপন

অপহৃত জহিরের ছোট ভাই মোহাম্মদ কমরুদ্দিন জানান, রাতে দুর্বত্তরা তার ভাইসহ দু’জনকে ছেড়ে দিয়েছে। পরে খবর পেয়ে শিলখালী পাহাড়ি এলাকা পুলিশ তাদের উদ্ধার করেছে। তার ভাইকে আনতে তিনি বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। অপহৃতদের উদ্ধারে পুলিশ আন্তরিকভাবে কাজ করেছে।

তবে স্থানীয় বাসিন্দাসহ ভূক্তভোগী জহির উদ্দিনের কয়েকজন স্বজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, অপহরণকারীদের অন্তত ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দেওয়া হয়েছে। তবে মুক্তিপণের টাকা কোথায়, কিভাবে তুলে দেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করতে পারেননি তারা।

প্রসঙ্গত, গত ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের এখন পর্যন্ত টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১২০ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৬২ জন স্থানীয় বাসিন্দা, বাকিরা রোহিঙ্গা নাগরিক। এদের মধ্যে অন্তত ৫৩ জনকে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে আনা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমও

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন