বিজ্ঞাপন

কাঠের গুদামে মিলল ৩০ টন ভারতীয় চিনি, মালিক আটক

April 27, 2024 | 10:22 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে একটি কাঠের গুদামে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৩০ মেট্রিক টন ভারতীয় চিনি জব্দ করেছে জেলা প্রশাসন। আটক করা হয়েছে গুদামের মালিককে। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছেন, এসব চিনি চোরাচালানের মাধ্যমে ভারত থেকে এনে মজুত করা হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে নগরীর বহদ্দাহাট এক কিলোমিটার এলাকায় নাফিজ গলিতে ওই গুদামে অভিযান চালায় জেলা প্রশাসনের টিম। এতে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের কাট্টলী সার্কেলের সহকারি ভূমি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত সিদ্দিকী।

গ্রেফতার গুদাম মালিক মো. আব্দুর রব্বানের (৪৫) বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায়। গুদামের সঙ্গে তিনি সেখানে একটি কাঠের আসবাব তৈরির কারখানাও পরিচালনা করেন।

অভিযানে জেলা প্রশাসনের টিম দেখতে পায়, গুদামে ফ্রেশ ব্র্যান্ডের বস্তায় চিনিগুলো রাখা ছিল। মোট ৬০০ বস্তার প্রতিটিতে ৫০ কেজি করে ৩০ মেট্রিক টন চিনি সেখানে ছিল। বস্তাগুলোতে প্রক্রিয়াজাতকরণের তারিখ, ব্যাচ নম্বর কিছুই ছিল না।

বিজ্ঞাপন

পরে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ফ্রেশ ব্র্যান্ডের চিনি পরিশোধন কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারা নিশ্চিত করেন, ফ্রেশ ব্র্যান্ডের নকল বস্তায় চিনিগুলো রাখা হয়েছে, সেগুলো তাদের চিনি নয়।

এসময় গুদাম মালিক রব্বানের কাছে চিনি আমদানির কাগজপত্র দেখতে চান জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তিনি জানান, কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি জাহেদ জয়নাল কাঠ রাখার কথা বলে ‍তার কাছ থেকে গুদামটি ভাড়া নিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে তিনি যে কাঠের বদলে চিনি রেখেছিলেন, সেটা রব্বান জানতেন না। এ পর্যায়ে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা তার আসবাব কারখানার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করেন। সেখানে দেখা যায়, তিনদিন আগে রব্বানের উপস্থিতিতেই চিনির বস্তাগুলো গুদামে ঢোকানো হয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত সিদ্দিকী সারাবাংলাকে বলেন, ‘কৃষি বিপণন কর্মকর্তা শাহ মোর্শেদ পরীক্ষা করে জানান যে, চিনিগুলো ভারতীয়। গুদাম মালিকের কাছে ভারতীয় চিনি আমদানির কোনো নথিপত্র নেই। যিনি চিনিগুলো সেখানে রেখেছেন, সেই জাহেদ জয়নালকে বারবার তাগাদা দিয়েও আমরা সেখানে আনতে পারিনি। তিনি পালিয়ে গেছেন। সার্বিকভাবে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে, চিনিগুলো ভারত থেকে অবৈধভাবে চোরাচালানের মাধ্যমে আনা হয়েছে। এরপর গুদাম মালিক ও জাহেদ জয়নাল পরস্পরের যোগসাজশে গোপনে সেগুলো কাঠের গুদামে মজুত করেছেন।’

বিজ্ঞাপন

‘পরবর্তীতে সেগুলো খোলাবাজারে সরবরাহের পরিকল্পনা ছিল তাদের। চোরাচালানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের এখতিয়ারে নেই। এজন্য আমরা গুদাম মালিককে আটক করে চান্দগাঁও থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি,’ – বলেন ম্যাজিস্ট্রেট।

গুদাম মালিক আব্দুর রব্বান সাংবাদিকদের বলেন, ‘কাঠ রাখার কথা বলে আমার কাছ থেকে গুদামটি ভাড়া নিয়েছিলেন জাহেদ সাহেব। পরে বললেন, কাঠ তো রাখতে পারছি না, আমাকে কিছু চিনি রাখতে হবে। যেহেতু তিনি চিনির ব্যবসা করেন আর তিনি গুদাম ভাড়া নিয়েছেন, সেজন্য আমি অনুমতি দিই। চিনিগুলো যে অবৈধভাবে আনা, সেটা আমি জানতাম না।’

অভিযানে অংশ নেওয়া চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রিয়াদ উছ সালেহীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘গুদাম মালিককে আমরা হেফাজতে নিয়েছি। আরও তদন্ত করে যাচাইবাছাইয়ের পর মামলা দায়ের হবে। জব্দ চিনি গুদাম থানার হেফাজতে থাকবে।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/এমও

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন