বিজ্ঞাপন

‘অনেক দেশেই তো নির্বাচন হচ্ছে, আমরাও অবজারভার টিম পাঠাব’

May 2, 2024 | 3:54 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আমেরিকার নির্বাচনের দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, আরও অনেক দেশেই তো নির্বাচন হচ্ছে, আমরা দেখব। আমরা অবজারভার টিমও পাঠাব। দেখি কেমন নির্বাচন হয়? সেখানকার মানুষ কেমন ভোট দেয় আমরা দেখব।

বিজ্ঞাপন

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত রেখে একটা সুষ্ঠ অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক। মানুষ যাকে চাইবে সে আসবে। যেমন আওয়ামী লীগকে চাইছে আওয়ামী লীগ চলে আসছে। ঠিক সেইভাবে। যাকে মানুষ চাবে সেই আসবে। সেটাই আমরা চাচ্ছি।

বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে থাইল্যান্ড সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব বলেন। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে থাইল্যান্ড সফর নিয়ে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন তিনি।

মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা থেকে নিরুৎসাহিত করার বিষয়ে দলীয় নির্দেশনার বিষয়ে দৃষ্ট আকর্ষণ করলে পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আপনার কাছে হিসাব আছে কতজন আছে? টোটাল উপজেলা কত? আরেকটা হচ্ছে ফ্যামিলি ফর্মুলা কি? পারিবারিক ফর্মুলা কি? নিজের ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী, এই তো? আপনারা একটু হিসাব করেন? কয়জন ছেলে-মেয়ে আর কয়টা স্ত্রী দাঁড়িয়েছে। এর বাইরে তো আর পরিবার ধরা হয় না।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, হ্যাঁ, আমি বলেছি এটা কারণ হচ্ছে আমরা চাচ্ছি, আমাদের কথা হচ্ছে নির্বাচনটা প্রভাবমুক্ত যেন হয়, মানুষ যেন স্বাধীনভাবে ভোটটা দিতে পারে। সেটাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যেহেতু আমরা করি, আমাদের অনেকের পরিবার তো দীর্ঘদিন ধরে মানে যিনি এমপি হয়েছেন তার বউ আগে থেকে নির্বাচন করে কেউ ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান কেউ উপজেলা চেয়ারম্যান সেরকম ট্রাডিশান আছে। এখন তাদেরকে আমরা মানা করি কি করে? তবে হ্যাঁ এইটা ঠিক এক জায়গায় বউকে দিল আরেক জায়গায় ছেলেকে দিল; এইগুলি আসলে ঠিক না। কর্মীদেরও মূল্যায়ণ করা উচিত। আমি সেটাই বলতে চেয়েছি আমাদের নেতা-কর্মীদেরকে। কর্মীদেরও মূল্যায়ণ করা উচিত এবং সবকিছু নিজেরাই নিয়ে নেব আর আমার নেতা-কর্মীদের জন্য কিছু রাখব না; এটা তো হয় না। সেই কথাটাই আমি বলতে চেয়েছি।

তিনি বলেন, সবাই দাঁড়াচ্ছে, দাঁড়িয়েছে নির্বাচন করছে এবং এটার লক্ষ্যটা হল নির্বাচনটা অর্থবহ করা। এখন অনেকগুলি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করেছে। এক সময় দেখা গেল বর্জন করে, বর্জন করে কেন? আসলে নির্বাচন করার মতো সক্ষমতাই নাই।

বিজ্ঞাপন

জাতীয় নির্বাচন বর্জন করা বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে সরকারপ্রধান বলেন, সংসদ নির্বাচন করতে হলে আপনাকে তো পাবলিকের কাছে দেখাতে হবে আপনার পরবর্তী নেতৃত্বে কে আসবে বা প্রধানমন্ত্রী কে হবে? বা নেতা কে হবে? একটা নেতা তো দেখাতে হবে। আপনার কাছে যদি এখন উপযুক্ত নেতা না থাকে তখন আপনাকে একটা ছুঁতা খুঁজতে হয়। ইলেকশন করলাম না বিরাট ব্যাপার… দেখালাম। বাস্তবতা তো সেটাই। আমাদের দেশে তো ওইটাই হচ্ছে এখন। একটা সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে যদি পাবলিকের কাছে দেখান পাবলিক তো ওটা নেবে না। পলাতক আসামিকে যদি দেখান পাবলিক তো নেবে না।

রাজনীতি করলে তো ঝুঁকি নিতে হয় জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তর সালের পরে আমাকে দেশে আসতে দেবে না। রেহানার (শেখ রেহানা) তো পাসপোর্ট রিনিউ করে দেয়নি। যেখানে আমার বাবার খুনীরা পুরস্কারপ্রাপ্ত। যুদ্ধাপরাধী যাদের বিচার শুরু করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যারা সাজাপ্রাপ্ত আসামি তাদেরকে ছেড়ে দিয়ে রাজনীতি করার সুযোগ… তারাই মন্ত্রী উপদেষ্টা ক্ষমতায়, খুনীরা ক্ষমতায়। ওই অবস্থায় তো আমি দেশে ফিরে এসেছি।

হ্যাঁ, আমার জীবন ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। বারবার আঘাত এসেছে কিন্তু আমি বেঁচে গেছি। এটাই হয়তো অনেকের ভাল লাগেনি। এতোবার মারার চেষ্টার পরও বেঁচে গেলাম কেন?। ঠাকুরমার ঝুঁলিতে আছে না? তবু মরিল না সতিনের পুত। ঠাকুরমার ঝুলির গল্পেই কিন্তু আছে। বারবার চেষ্টা করে কিন্তু মরে না। লাল কমল নীল কমল কত কাহিনী আছে। সেভাবে আমিও বারবার বেঁচে যাচ্ছি। ইলেকশনে জিতে বারবার ক্ষমতায়ও আসছি। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসছে বলেই তো দেশের উন্নতিটা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসছে বলেই তো আজকে অন্ততপক্ষে বিশ্বব্যাপী মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার বা কথা বলার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বাঙালিদের। আগে তো তা ছিল না। বাংলাদেশ শুনলেই বলত বন্যা, ঝড়, দুর্ভিক্ষ, গরীব-ভিক্ষুকের জাত, সেটাই তো বলত। সেই দুর্নামটা ঘোচাতে পারছি কি না? সেটাই হচ্ছে বড় কথা।

বিজ্ঞাপন

সরকারের চেষ্টা হচ্ছে আস্তে আস্তে বাংলাদেশের নির্বাচনি প্রক্রিয়াটাকে আরও গণমুখী ও স্বচ্ছ করা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এই প্রথম আমরা আইন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি। আগে কিন্তু কেউ এটা করেনি। নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ন আর্থিকভাবে নির্ভরশীল ছিল প্রধানমন্ত্রীর দফতরে। সেখান থেকেও তাদেরকে মুক্ত করে সম্পূর্ণভাবে তাদেরকে স্বায়ত্বশায়িত করে দিয়েছি তাদের বাজেটে আলাদা বাজেট দিয়ে দিচ্ছি।

প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে আমরা কিন্তু এটা নিশ্চিত করতে চাই, দেশের মানুষের ভোটের অধিকার হচ্ছে তার গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার। সেই অধিকারটা যেন সে প্রয়োগ করতে পারে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী।

আগামী জুনে দলের হীরক জয়ন্তী উদযাপন করা হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে দলীয়প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, হ্যাঁ, আমাদের পঁচাত্তর বছর উদযাপন করব খুব ব্যাপকভাবে। সেখানে আমরা আলোচনা করছি। তখন বিশ্ব পরিস্থিতিটা বিবেচনা করেই দেখব, কোন কোন দেশকে দাওয়াত দিতে পারি বা কারা আসতে পারে। সেদিকেও আমাদের আলাপ আলোচনা আছে। কর্মসূচি ইতোমধ্যে আমাদের তৈরি করা হচ্ছে। আলাদা উপ-কমিটিও আমরা করে দিচ্ছি। যাতে উদযাপনটা আমরা সুন্দরভাবে করতে পারি। কারণ এটা তো এই উপমহাদেশে একটা রাজনৈতিক দল আজকে ৭৫ বছর উদযাপন করছে এটা তো কম কথা না।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ১৪ দল তো অবশ্যই আছে থাকবে না কেন? তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। যোগাযোগ যে নাই তা না। আমাদের যিনি সমন্বয় করেন আমির হোসেন আমু সাহেবের উপরেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। তিনি যোগাযোগটা করেন। আমি খুব শিগগিরই আবার তাদের সঙ্গে বৈঠকও করব। কারণ আমাদের নিজের ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং করেছি এবং আমাদের উপদেষ্টা কমিটির মিটিং করব, ১৪ দলের সঙ্গেও বসব।

নির্বাচনে ১৪ দলের অনেক দল কিন্তু তারা প্রার্থী দিয়েছিল। ইলেকশন করেছে। আর নির্বাচনে জেতা না জেতা সেটা আলাদা কথা। কিন্তু আমাদের জোট থাকবে এবং আছে এইটুকু খালি বলতে পারি। জোট শেষ হয়ে গেছে কে বলল বলেও জানান ১৪ দলীয় জোট নেত্রী শেখ হাসিনা।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, মন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এনআর/ইআ

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
তীব্র খরা ও অনাবৃষ্টিতে হাঁড়িভাঙ্গা আম চাষে বড় ক্ষতির শঙ্কাশেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের ইতিহাসের নতুন যাত্রামিয়ানমার থেকে এসেছে জি থ্রি রাইফেল-রকেট সেল, গ্রেফতার ৫গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনওসি-চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা তদন্তের নির্দেশশেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন: নক্ষত্রের প্রজ্জ্বলনসম্পদের তথ্য গোপন, সাবেক পৌর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলাস্ত্রী হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন, ২২ বছর পর গ্রেফতার স্বামীশেখ হাসিনা ফিরে এসেছিলেন বলেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশরাবিতে মাদক সেবনে বাধা দেওয়া নিয়ে মারামারি, আহত ৩ শিক্ষার্থী সব খবর...
বিজ্ঞাপন