বিজ্ঞাপন

ছাত্র না হয়েও থাকতেন চবি ক্যাম্পাসে, দিতেন এনএসআই সদস্যের পরিচয়

May 6, 2024 | 4:16 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে এক যুবককে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পুলিশ জানিয়েছে, চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি কলেজ থেকে বিবিএ পাস করলেও চবির ছাত্র পরিচয়ে গত ১২ বছর ধরে ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন ওই যুবক। এ ছাড়া নিজেকে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সদস্য পরিচয় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে এক লাখ টাকা হাতিয়ে নেন এ যুবক।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২ মে) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির হাতে ধরা পড়েন এ যুবক। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য। বর্তমানে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর দায়ের করা মামলায় থানায় আছেন এ প্রতারক।

অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিন (৩০) নোয়াখালী জেলার সুধারামপুর থানার আবুল বাহারের ছেলে। বর্তমানে থাকেন চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানা এলাকায়।।

নাজিম ফেসবুকে পরিচিত আরেফিন কাব্য (Arefin Kabbo) নামে। তিনি প্রায়ই চবির বগিভিত্তিক সংগঠন ৬৯ এর টি-শার্ট পরে ছবিও আপলোড করেন। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে করতেন স্মৃতিচারণও। কিন্তু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে তিনি চবির ছাত্র নন। চবির সাবেক ছাত্র এবং বর্তমানে এনএসআইতে চাকরি করছেন— এমন পরিচয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অসংখ্য মেয়ের সঙ্গে গড়ে তোলেন প্রেমের সম্পর্ক।

বিজ্ঞাপন

চবির প্রক্টর ওয়াহিদুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ওই ছেলে একজন প্রতারক। সে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিচয় দিয়ে আমাদের এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে এবং এক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। সে নিজেকে এনএসআইয়ের সদস্য পরিচয় দিত। কিন্তু সে একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে সেলসম্যান হিসেবে চাকরি করে। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এসব তথ্য জানতে পেরেছি। পরে তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বাদী হয়ে অভিযুক্ত নাজিমের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেছে।’

এদিকে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী মামলার এজাহারে জানান, প্রায় সাত মাস আগে ফেসবুকের মাধ্যমে নাজিমের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। নাজিম তাকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং বর্তমানে এনএসআইতে চাকরি করেন বলে পরিচয় দেন। এরপর থেকেই তাদের সঙ্গে নিয়মিত কথা চলতে থাকে। কথা বলার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে নাজিম বিভিন্ন সমস্যার কথা বলে ভুক্তভোগী ছাত্রীর কাছ থেকে এক লাখ টাকা নেন।

এজাহারে ওই ছাত্রী আরও জানান, প্রেমের সম্পর্ক থাকার কারণে নাজিম ভুক্তভোগী ছাত্রীর ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ তার নিয়ন্ত্রণে রেখে ব্যবহার করতেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন সময় ওই ছাত্রীকে তার শরীরের স্থিরচিত্র বা ভিডিও ধারণ করে পাঠানোর জন্য হুমকি দিতেন। নাজিমের এমন ব্যবহারে অতিষ্ট হয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ওই ছাত্রী।

বিজ্ঞাপন

এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাতে অভিযুক্ত নাজিম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসে ভুক্তভোগী ছাত্রীর সঙ্গে টানাহেঁচড়া করেন। পরে ওই ছাত্রী চিৎকার করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ছাত্ররা এগিয়ে এসে নাজিমকে আটক করে।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন সারাবাংলাকে জানান, গ্রেফতার নাজিম ভুয়া পরিচয় দিয়ে ওই ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। এরপর তার কাছ থেকে এক লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। তিনি নিজেকে গোয়েন্দা সংস্থার লোক হিসেবেও পরিচয় দিতেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি তার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ স্বীকার করেছেন।

সারাবাংলা/আইসি/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন