বিজ্ঞাপন

‘বিপ্লবী হতে চাইনি, অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি মাত্র’

May 8, 2024 | 12:24 am

সারাবাংলা ডেস্ক

চট্টগ্রাম ব্যুরো: একুশে পদক পাওয়া কবি মিনার মনসুরকে চট্টগ্রামে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। সংবর্ধিত মিনার মনসুর বলেন, আমি একুশে পদক চাইনি, কবি হতে চাইনি, বিপ্লবীও হতে চাইনি, আমি চোখের সামনে দেখা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি মাত্র।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৬ মে) রাতে নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট হলে মিনার মনসুরের নাগরিক সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। ‘নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রামের’ আহ্বায়ক ও চসিকের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন।

কবি ও প্রাবন্ধিক মিনার মনসুর বলেন, ‘এ বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের যিনি প্রতিষ্ঠাতা, যার জন্ম না হলে এই রাষ্ট্রের জন্মই হতো না- সেই মানুষটিকে যখন হত্যা করা হলো, আমি চেয়েছিলাম তার প্রতিবাদ করতে, প্রতিশোধ নিতে। আমি কবি হতে চাইনি, বিপ্লবী হতে চাইনি, একুশে পদকও চাইনি। শুধু আমাদের চোখের সামনে যে অন্যায় হয়েছিল, শিশু হত্যা হয়েছিল, নারী হত্যা হয়েছিল- তার প্রতিবাদ করেছি মাত্র।’

‘একুশে পদক পাওয়ার পর যখন জিজ্ঞেস করা হলো- আমার প্রতিক্রিয়া কি, আমি বলেছিলাম, প্রধানমন্ত্রী আমাকে যে পদকটি দিয়েছেন, সেটি আসলে আমাকে দেননি, পঁচাত্তরের পরে আমার মতো অখ্যাত, অজ্ঞাত হাজার হাজার তরুণ লড়াই করেছে মাঠে, আমি তাদের পক্ষ থেকে পদকটি গ্রহণ করেছি মাত্র,’– বলেন মিনার মনসুর।

বিজ্ঞাপন

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. অনুপম সেন বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে বিক্ষুব্ধ বিশ্বকে দেখেছি, অত্যাচারের বিশ্বকে দেখেছি, অত্যাচারিত মানুষকে দেখেছি, আজও দেখছি। ১৯৭২ সালে সংবিধান দেওয়ার সময় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- বিশ্ব দু’ভাগে বিভক্ত, একটি হলো শোষিতের আরেকটি শোষকের। তিনি যে গণতন্ত্রের কথা বলেছিলেন তা হলো-ি শোষিতের গণতন্ত্র, শোষকের নয়। তিনি ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলেছিলেন- ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। প্রত্যেকে তার ধর্ম পালন করবে কিন্তু ধর্মকে রাজনীতির জন্য ব্যবহার করবে না।’

‘আজকের বিশ্ব বঞ্চিতের বিশ্ব। আমরা তো অত্যন্ত সুবিধাভোগী, আরামে থাকি, কিন্তু যখন রাস্তা দিয়ে যাই, দেখি অনেক মানুষ ফুটপাতে শুয়ে আছে। মিনার মনসুররা একদিন তাদের জন্যই সংগ্রাম করেছেন, এখনো করছেন। এসব মানুষের কথা ভাবতে হবে, তাদের নিয়ে তরুণদের ভাবতে হবে, এগিয়ে আসতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘মিনার মনসুরের লেখা পড়ে মুগ্ধ হয়েছি। তিনি তার লেখায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন। তিনি নারী ও শিশু হত্যা নিয়ে বারবার লিখেছেন। কিছু মানুষ আছে, যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, এভাবে আপনারা অনেকে দাঁড়িয়েছেন। যুগে যুগে মানুষ দাঁড়ায়, মারাও যায়।’

সভাপতির বক্তব্যে খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘পঁচাত্তরের ধ্বংসস্তুপ থেকে কীভাবে আওয়ামী লীগ উঠে এসেছে- আজ যারা রঙিন চশমা চোখে দিয়ে বিভোর জীবন কাটাচ্ছেন, তারা জানেন না, দেখেন না। পৃথিবীতে এমন নেতা নেই, যিনি স্বপ্নের বীজ বপন করে সেই বৃক্ষের ফল জনগণের জন্য দিয়ে গেছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু এদেশের মানুষের জন্য স্বপ্ন দেখেছেন, স্বপ্নের বীজ বপন করেছেন এবং সেই বৃক্ষের ফল আমাদের জন্য দিয়ে গেছেন।’

নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রামের সদস্য সচিব শাহরিয়ার খালেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম, কোডেকের উপ-নির্বাহী পরিচালক কমল সেনগুপ্ত, ড. আবদুল্লাহ আল মামুন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তৈয়ব, অধ্যাপক মাইনুল হাসান চৌধুরী, অনুবাদক ও গবেষক আলম খোরশেদ, কবি ও সাংবাদিক রাশেদ রউফ, রাশেদ মনোয়ার, এ টি এম আফতাবউদ্দীন, কবি দিলওয়ার চৌধুরী, ইউসুফ মোহাম্মদ, কামরুল হাসান হারুন, জামশেদুল আলম চৌধুরী, মুজিবুল হক, সাইফুদ্দিন সাকী, মশিউর রহমান চৌধুরী।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কবি মিনার মনসুরের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ও প্রবন্ধ পাঠ করেন আবৃত্তিশিল্পী রাশেদ হাসান। কবিতা আবৃত্তি করেন কাজী সিরাজুল ইসলাম, দিলরুবা খানম, মিশফাক রাশেল, মারওয়া আনজুমানে জান্নাত এবং সৈয়দ হোসেন বাবু।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন