বিজ্ঞাপন

‘দেশ আওয়ামী লীগ না, চালাচ্ছে অদৃশ্য শক্তি’

May 11, 2024 | 7:59 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আজকে নিজ দেশে থেকে আমরা পরবাসী হয়েছি। চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে গেলে বা এলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিমানবন্দরে বসিয়ে রাখা হয়। আসলে দেশ কি আওয়ামী লীগ চালাচ্ছে? দেশ চালাচ্ছে অদৃশ্য শক্তি।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আজকে সারাদেশ কুক্ষিগত করে রাখা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া চাকরি হয় না। বিসিএস পাস করার পরও চাকরি হচ্ছে না। আজকে চাকরির জন্য ডিএনএ টেস্ট করা হয়, তারা বিএনপি করে কিনা।’

শনিবার (১১ মে) বিকেলে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী যুবদল আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানের মামলা প্রত্যাহার এবং যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ কারাবন্দি নেতাদের মুক্তির দাবিতে সমাবেশ আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়া শুধু নির্যাতিত নেত্রী নন, তিনি গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী। সারাজীবন যিনি দেশ ও জনগণের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন, গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন। আজকে দানব সরকার তাকে বন্দি করে রেখেছে। যার সাজা হয়েছিল ৫ বছর। উচ্চ আদালতে তা ১০ বছর করা হয়েছে। এরকম মামলায় অন্যরা জামিন পেলেও তাকে দেওয়া হয়নি। তিনি অসুস্থ। দেশ-বিদেশ থেকে সবাই তার মুক্তি দাবি করলেও দেওয়া হচ্ছে না। কারণ তিনি মুক্ত হলে তার ডাকে সাড়া দিয়ে জনগণ সকল শৃঙ্খল ভেঙে ফেলবে, উপড়ে ফেলবে সকল অন্যায় ও অবিচার।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আটক রাখা হয়েছে হাজারো নেতা-কর্মীকে। অনেককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ঈশ্বরদীতে ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আদালতকে ব্যবহার করে এরা ক্ষমতার টিকে থাকতে চায়। কী নিদারুণভাবে ২৮ অক্টোবরের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ পণ্ড করা হয়েছে। অন্যায় করে জুলুম করে গণতান্ত্রিক আন্দোলন স্তব্ধ করা যাবে না। আমরা যখন যুবক ছিলাম, তখন লড়াই করে এ দেশ স্বাধীন করেছিলাম। কিন্তু আজ সে স্বাধীনতা ভূলুন্ঠিত। ২০০৮ সাল থেকে মানুষ আর ভোট দিতে পারে না। অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সরকার আবারও ভিন্ন মোড়কে বাকশাল কায়েম করতে চায়।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘গতকাল ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আবার সন্ত্রাস করবেন না, তাহলে ডাবল শিক্ষা দেব। সন্ত্রাস বিএনপি করে না। আপনারা করেন। সন্ত্রাসের মাধ্যামে আওয়ামী লীগের জন্ম। মওলানা ভাসানীকে পিটিয়ে আওয়ামী লীগ থেকে বের করে দিয়েছিলেন। ডেপুটি স্পিকারকে পিটিয়ে হত্যা করেছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘আজকে দুর্ভাগ্য যে, জাতি গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা জন্য যুদ্ধ করেছিল, সে অধিকার থেকে বাংলাদেশ বঞ্চিত। আজকে প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ছে। ট্রেনের ভাড়া, বাস ভাড়া, বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানির দাম বেড়েই চলছে। অপরদিকে লুটপাট হচ্ছে দেশের অর্থনীতি, লুটপাট হচ্ছে ব্যাংক। আজকে নতুন নতুন আইন করছে লুটেরাদের স্বার্থে।’

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। নতুন নতুন ফর্মুলা করা হচ্ছে। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের নাম ডামি নির্বাচন। ডামি নির্বাচনে গৃহপালিত দলগুলোর সঙ্গে চলে দেন-দরবার।’

তিনি বলেন, ‘সরকার বলে তারা নাকি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। তারা যদি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে, তাহলে এরশাদ ও ইয়াহিয়া কী করেছেন? তাদের আসলে কোনো লজ্জা-শরম নেই। দেশটাকে তাদের পৈতৃক সম্পত্তি মনে করে। যেমনি চাইবে তেমনি চলবে। কিন্তু তা হবে না। জনগণ যা চাইবে সেভাবেই দেশ চলবে।’

যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুন হাসানের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্নার সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, যুবদলের সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম নয়ন, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহবায়ক শরীফ উদ্দিন জুয়েল, সদস্য সচিব সাজ্জাদুল মিরাজ, দক্ষিণের আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনাম, সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়নসহ অনেকে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেড/এমও

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন