বিজ্ঞাপন

‘দ্বাদশ নির্বাচনের পর দেশের সংকট আরও গভীর হয়েছে’

May 12, 2024 | 4:56 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দ্বাদশ নির্বাচনের পর দেশের সংকট আরও গভীর হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১২ মে) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্য্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো এই সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দ্বাদশ নির্বাচনের পর দেশের সংকট আরও গভীর হয়েছে। এই সংকট নিরসন না হলে সরকারের ভবিষ্যত খুব ভালো নয়। একটা কথা আমি বলতে চাই, উনাদের (সরকার) একটা ফ্লস ধারণা তৈরি হয়েছে যে, ওভারকাম দ্যা ক্রাসিস। সংকট থেকে তারা উপরে উঠে গেছেন। আমি বলব, সংকট আরও গভীর করেছে। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সংকট আরও গভীর হয়েছে, সরকারের সংকটও আরও গভীর হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনরা যদি এখনও সেটা উপলব্ধি না করেন, সংকট নিরসনের চেষ্টা না করেন তাহলে ভবিষ্যত আপনাদের জন্য খুব ভালো না।’

খালেদা জিয়া কেমন আছেন জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়া শুধু বিএনপির মা নন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মা। এ জন্য যে, এই মহিয়সী নারী সারাটা জীবন ধরে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই-সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। দুর্ভাগ্য আমাদের এই মহিয়সী নারীর সঠিক মূল্যায়নটা এ দেশের অনেকে করতে পারছেন না।’

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া এখন লড়াই করছেন তার জীবনের সঙ্গে। তার স্বাস্থ্যের অবস্থা খুবই খারাপ। আপনারা দেখছেন যে, প্রায়শ তিনি হাসপাতালে যাচ্ছেন, চেকআপ, প্রসিজিউরও হচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে, আবার বাসায় ফিরে আসছেন। আসার পরেও কিন্তু তিনি ২৪ ঘন্টাই মেডিকেল কেয়ারের মধ্যে আছেন।’

বিজ্ঞাপন

সরকার লুটের বিশেষ গোত্র তৈরি করেছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এখানে একটা গোত্র তৈরি করা হচ্ছে যাদেরকে সমস্ত রকম দুর্নীতি-অনিয়মের মধ্য দিয়ে অর্থ উপার্জনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে, লুটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেটা দিয়ে তারা এই সরকারকে টিকিয়ে রাখছে। এর মধ্যে তারা নিজেরাও জড়িত এবং তাদের সুবিধাভোগী লোকজনরা জড়িত।’

তিনি বলেন, ‘আজকে যেগুলো দেখছেন সেগুলো হচ্ছে লুট, মেগা লুট। একজন ব্যক্তি সে এখন সিঙ্গাপুরে গিয়ে হাইয়েস্ট ইনভেস্টার। চার নম্বরে আছেন, তাই না? আর কয়েকজন ব্যক্তি আছেন পানামা লিস্টের মধ্যে পড়ে যায়। এতো টাকা তারা বানিয়েছেন। এরা দুর্নীতি-অনিয়মের ওপর ভিত্তি করে এই রাষ্ট্রকে কী করে পরনির্ভরশীল করা যায় এবং তাদের বিশেষ গোত্রকে কীভাবে অন্যায়ভাবে আর্থিক দিক থেকে শক্তিশালী করা যায়, সেই লক্ষ্যে তারা কাজ করছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কারও কোনো জবাবদিহিতা নাই তো, কারও কোনো স্ট্যাক নাই তো। এখানে দেখেন একজন মন্ত্রী যার লন্ডন বাড়ি পাওয়া গেছে তিন‘শ-আড়াই‘শ টার মতো, পত্রিকায় দেখা যায় যে, মন্ত্রী-এমপির বাড়ি-সম্পদ দেশের বাইরে রয়েছে। কারও কোনো স্ট্যাক নেই এখানে। তারা ডোন্ট কেয়ার। তাদের যে বক্তব্য, দাম্ভিকতা এটা অনেক আগে থেকে শুরু হয়েছে। এমন ভাবে কথা বলেন যে, উনারা ছাড়া দেশে আর কেউ নাই।’

তিনি বলেন, ‘এটাতেই প্রমাণ হয়ে গেছে যে, বাংলাদেশ একটা ব্যর্থ রাষ্ট্র অলরেডি হয়েই গেছে । আমরা সেটা আগের থেকে বলে আছি যে, এই সরকার পরিকল্পিতভাবে এই রাষ্ট্রের পরিণত করেছে। কখন ব্যর্থ রাষ্ট্র হয়? যখন অর্থনৈতিক, মেরুদণ্ড ভেঙে ফেলে, যখন তার রাজনৈতিক স্ট্রাকচারটা ভেঙে ফেলে, সামাজিক কাঠামো ভেঙে যায়, যখন কোথাও জবাবদিহিতা থাকে না তখন রাষ্ট্র একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়, নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়। এখন গোটা দেশে একটা নৈরাজ্য চলছে।’

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জিয়াউর রহমান একটা ক্লোজড ইকোনমি, একটা ফেল্ড পলিটিক্যাল স্টাকচার থেকে বেরিয়ে এসে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছিলেন, মিক্সড অর্থনীতি এবং পরবর্তীকালে প্রাইভেট সেক্টার চালু করেছিলেন। ফলে উন্নয়নের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। খালেদা জিয়া তার শাসনমালে সেগুলো এগিয়ে নিয়ে গেছে। একটা বিষয় আপনাদের মনে থাকার কথা ২০০৬ সালের সময়ে নিউজ উইকের মতো পত্রিকা কাভার স্টোরি করেছিল, বাংলাদেশ ইমার্জিং টাইগার।

‘অথচ এমনভাবে তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) কথা বলে যে, গণতান্ত্রিক সরকারগুলোর সময় কোনো উন্নয়নই হয় নাই। ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত যে উন্নয়ন হয়েছে সেই উন্নয়নই অর্থনীতির ভিত্তি তৈরি করেছে। আজকে যেগুলো দেখছেন সেগুলো হচ্ছে লুট, মেগা লুট’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সারাবাংলা/এজেড/ইআ

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন