বিজ্ঞাপন

রাজনৈতিক সমীকরণের চাপে মার্কিন-ইসরাইল মিত্রতার দুর্গে ফাটল

May 12, 2024 | 10:27 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চলতি সপ্তাহে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সম্পর্কের বর্তমান গতিধারা প্রকাশ্যে তুলে ধরেছেন। একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বোমা ফাটিয়েছেন বাইডেন। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ইসরাইল যদি রাফাতে আক্রমণ করতে যায় তাহলে কী হবে। জবাবে বাইডেন বলেন, ‘আমি অস্ত্র দেব না।’

বিজ্ঞাপন

মার্কিন-ইসরাইল সম্পর্কের মূল ভিত্তি হলো অস্ত্রের চালান। চার দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো এই ভিত্তিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। গাজায় আরও বড় আকারের বেসামরিক হতাহতের ঘটনা থামানো এবং ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকট রোধে সহায়তা করার জন্য দেশে-বিদেশে অব্যাহত চাপের মধ্যে রয়েছেন জো বাইডেন।

তিনি অবশেষে মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ কৌশলগত মিত্র ইসরাইলকে দেওয়া অস্ত্রের চালান আটকে দিয়েছেন। ১৯৮০-এর দশকে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানের পর আর এমন কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রাক্তন বিশ্লেষক এবং মধ্যপ্রাচ্যের প্রবীণ শান্তি আলোচনাকারী অ্যারন ডেভিড মিলার বলেন, ‘গত অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বাইডেন তার প্রতিপক্ষ দল ইসরাইলপন্থি রিপাবলিকান পার্টি এবং তার নিজের দল গভীরভাবে বিভক্ত ডেমোক্র্যাটিক পার্টির রাজনৈতিক বিভাজনের মধ্যে আটকে গেছেন। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে প্রেসিডেন্ট বাইডেন মার্কিন-ইসরাইল সম্পর্কের ক্ষতি হয় এমন কোনো পদক্ষেপ নিতে অনিচ্ছুক। কিন্তু রাফায় ইসরাইলের স্থল অভিযানের পরিকল্পনা জো বাইডেনের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন এনেছে।’

বিজ্ঞাপন

গত সোমবার ইসরাইল বলেছে, তার স্থল বাহিনী রাফা শহরের পূবে ‘উদ্দেশ্যপূর্ণ কার্যকলাপ’ শুরু করেছে। ওই অঞ্চলে ইসরাইলি ট্যাঙ্ক মোতায়েন করা হয়েছে। বাসিন্দারা ক্রমাগত গোলাগুলির শব্দের কথা জানিয়েছেন এবং বলেছেন, কোনোমতে কার্যকর হাসপাতালগুলো এখন আহতদের ভিড়ে অচল হওয়ার দশা।

জাতিসংঘ বলেছে, ইতোমধ্যে রাফা থেকে এক লাখের বেশি মানুষ পালিয়েছে। আশ্রয়, খাদ্য, পানি এবং স্যানিটেশন পরিষেবার মারাত্মক অভাবের সম্মুখীন হচ্ছে তারা।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ১০ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আবাসস্থল রাফা শহরটিতে পূর্ণমাত্রায় স্থল আক্রমণ করবেন তিনি। নেতানিয়াহু বলেছেন, সেখানে লুকিয়ে থাকা বাকি চারটি হামাস ব্যাটালিয়নকে ধ্বংস করার জন্য একটি বড় অভিযানের প্রয়োজন। যুদ্ধবিরতি আলোচনা সফল হোক বা না হোক, রাফায় আক্রমণ অনিবার্য।

বিজ্ঞাপন

অ্যারন ডেভিড মিলার বলেন, ‘ওয়াশিংটন বারবার নেতানিয়াহুকে রাফাতে টার্গেটেড অপারেশন না চালানোর জন্য অনুরোধ করেছে। বাইডেন আশঙ্কা করছেন, রাফায় স্থল আক্রমণ মৌলিকভাবে যুদ্ধকে হ্রাস করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করার যে কোনো সম্ভাবনাকে দুর্বল করে দেবে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রতিবেশী মিশরের সঙ্গেও সংকট এড়াতে চান। তার ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতে আরও ক্ষোভ ও বিভাজনও এড়াতে চান তিনি। রাফায় আক্রমণে ইসরাইলকে সমর্থন দিলে ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতে বড় ধরনের বিভাজন তৈরি হবে। তাই তিনি ইসরাইলকে একটি বার্তা দিয়েছেন।’

বুধবার বাইডেনের টিভি সাক্ষাৎকারের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলে অস্ত্র চালান স্থগিত করেছে। ইসরাইলে পাঠানোর জন্য ২০০০ পাউন্ড ও ৫০০ পাউন্ড ওজনের বোমার একটি চালান স্থগিত করা হয়।

বাইডেন প্রশাসনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, ঘনবসতিপূর্ণ শহুরে পরিবেশে ভারী অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ আছে তাদের। গাজার অন্যান্য অংশে ইতিমধ্যেই এমন অস্ত্রের বিধ্বংসী রূপ দেখা গেছে।

২০০০ পাউন্ডের বোমা ইসরাইলের অস্ত্রাগারের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক অস্ত্রের মধ্যে একটি। ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর যুক্তি, হামাসকে নির্মূল করার জন্য এই ধরনের যুদ্ধাস্ত্র প্রয়োজন। এছাড়াও ইসরাইলের জয়েন্ট ডাইরেক্ট অ্যাটাক মিনিশনস (জেডিএএম) কিটের একটি চালানও পর্যালোচনাধীন আছে। এই কিট আনগাইডেড বোমাকে গাইডেড বোমাতে রূপান্তরিত করতে পারে।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১১ মে) স্টেট ডিপার্টমেন্ট জো বাইডেনের আদেশে একটি প্রতিবেদন জারি করেছে। যেখানে বলা হয়েছে, ‘ইসরাইল গাজা যুদ্ধের সময় সম্ভবত কিছু ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনের জন্য মার্কিন সরবরাহ করা অস্ত্র ব্যবহার করেছে।’ তবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এই প্রতিবেদন মূল্যায়নে সম্পূর্ণ তথ্য তাদের হাতে নেই।’ যার অর্থ সামরিক সহায়তা অব্যাহত থাকতে পারে।

প্রাক্তন মার্কিন সেনাবাহিনীর আর্টিলারিম্যান কর্নেল জো বুকিনো। তিনি মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক কমান্ড সেন্টকম-এর একজন সিনিয়র কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি বলেছেন, ‘ইসরাইলের কাছে ইতোমধ্যে যত মার্কিন অস্ত্র আছে, তা দিয়েই রাফাকে সমতল করা সম্ভব।’

ওয়াশিংটন ইসরাইলকে বছরে ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সামরিক সহায়তা দিয়ে থাকে। মার্কিন কংগ্রেস সম্প্রতি এর সঙ্গে আরও ১৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের অস্ত্র এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যোগ করেছে। ইসরাইল সমষ্টিগতভাবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মার্কিন প্রাণঘাতী অস্ত্রের সহায়তা পেয়ে থাকে।

কর্নেল বুকিনো বলেন, ‘রাফাতে হামলা চালানোর জন্য কোনো মার্কিন অস্ত্র চালানের প্রয়োজন নেই। যে চালানটি স্থগিত করা হয়েছে, সেটি ছাড়াও রাফায় খুব ভালোভাবেই হামলা চালাতে পারে ইসরাইল। অস্ত্র চালান স্থগিতের বিষয়টি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যারা রাজনৈতিক কারণে উদ্বিগ্ন তাদের জন্য একটি সামান্য রাজনৈতিক খেলা।’

তবে ঘটনা সেটাই হোক বা অন্যকিছু হোক—এই পদক্ষেপে জো বাইডেন রাজনৈতিক চাপ থেকে মুক্তি পাননি। মার্কিন সিনেটে রিপাবলিকানরা ইসরাইলকে অস্ত্র চালান বন্ধের বিরোধিতা করে ব্যাপক হৈচৈ করেছে।

মার্কিন সিনেটর পিট রিকেটস ফরেন রিলেশনস কমিটির বৈঠকের বাইরে আমার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বলেন, ‘আমি মনে করি এই অস্ত্র চালান স্থগিত করার পদক্ষেপটি পুরোটাই আপত্তিকর। প্রেসিডেন্টের সত্যিই এটা করার কোনো দরকার ছিল না।’

যখন আমি তাকে বললাম, ইসরাইলের কাছে এখনও পূর্ব ঘোষিত পরিকল্পিত হামলা চালানোর উপায় রয়েছে। তখন তিনি উত্তর দেন: ‘এটি নিছক অস্ত্র পাঠানোর বিষয় নয়, একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের (হামাস) বিরুদ্ধে আমাদের মিত্র ইসরাইলকে সমর্থন করার বিষয় এটি।’

আরেক রিপাবলিকান সিনেটর জন ব্যারাসো বলেছেন, ‘সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য ইসরাইল যা করছে তা করার অধিকার তাদের রয়েছে। বাইডেনের এই পদক্ষেপ একটি বিষয়ই প্রদর্শন করেছে, তা হলো প্রেসিডেন্টের দুর্বলতা।’ তবে এই পদক্ষেপের কারণে জো বাইডেন তার নিজের দলের মধ্যে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেয়েছেন।

ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর ক্রিস কুনস দুই মাস আগে ইসরাইলে অস্ত্র সহায়তা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা যারা নিজেদের ইসরাইলের ঘনিষ্ঠ সমর্থক কিন্তু দুর্ভোগ এবং মানবিক পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বিগ্ন- গাজায় আক্রমণ তাদের মধ্যে বেদনাদায়ক প্রতিফলন ঘটিয়েছে। গাজায় ইসরাইলের আচরণে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন না আসা পর্যন্ত ইসরাইলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ রাখা উচিত।’

তিনি বিশ্বাস করেন, জো বাইডেন নেতানিয়াহুকে সংযত করার জন্য বহু চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বিপরীতে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। কারণ ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী অতি-জাতীয়তাবাদীদের রাজনৈতিক সমর্থনের উপর নির্ভর করেন, যারা গাজায় মানবিক সহায়তার বিরোধিতা করে এবং পশ্চিম তীর থেকে ফিলিস্তিনিদের বহিষ্কার করতে চায়।

তিনি মনে করেন, নেতানিয়াহুকে সংযত রাখতে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নতুন সিদ্ধান্তটি সম্ভবত প্রথমবারের মতো একটি সত্যিকারের পদক্ষেপ।

ইসরাইলে অস্ত্র চালান এমন এক সময় স্থগিত করা হয়েছে যখন হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর একটি প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে। যদিও কায়রোতে আলোচনা আপাত সমাধান ছাড়াই এই সপ্তাহের শুরুতে ভেস্তে গিয়েছিল। কিছু ইসরাইলি ভাষ্যকারদের দাবি, বাইডেনের পদক্ষেপ জিম্মি আলোচনায় আপস হিসেবে দেখা হবে। রাফাতে ইসরাইলি হামলার হুমকিকে হ্রাস করার যে কোনো প্রচেষ্টা হামাসকে উপকৃত করবে।

শান্তি আলোচনার বিষয়বস্তু বেশিরভাগই অস্বচ্ছ। ফলে ইসরাইলি ভাষ্যকারদের এই দাবিটিকে মূল্যায়ন করা কঠিন। আসলে, শান্তি আলোচনায় হামাসের প্রধান দাবি হলো যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তি। ইসরাইল হামাসের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। ফলে শান্তি আলোচনা সামনে এগুচ্ছে না।

জো বাইডেন ও নেতানিয়াহুর এখন যে সম্পর্ক, ঠিক তেমনই ছিল পাঁচ দশক আগে। তারা দুজনই তখন তরুণ ছিলেন। বাইডেন তখন একজন তরুণ সিনেটর আর নেতানিয়াহু তখন দূতাবাসের জুনিয়র কর্মকর্তা। জো বাইডেন কয়েক মাস আগে একটি ঘটনার কথা বলেছিলেন। একবার নেতানিয়াহুর উপস্থিতিতে বাইডেন একটি ছবিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। ওই ছবিতে লেখা ছিল ‘বিবি, আমি তোমাকে ভালবাসি, তবে আমি তোমার কথার সাথে মোটেও একমত নই।’ নেতানিয়াহু এখনও এই ছবি তার ডেস্কে রেখেছেন।

নেতানিয়াহু বরাবরই ইসরাইলকে সমর্থনের জন্য বাইডেনের প্রশংসা করেছেন। তবে তারা ফিলিস্তিন ইস্যুতে প্রধান নীতিগত বিষয়গুলোতে প্রায়ই ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেন না।

৭ অক্টোবরের হামলার ১৫ দিনের মধ্যে বাইডেন ইসরাইল সফরে যান। তেল আবিবে তিনি নেতানিয়াহুকে আলিঙ্গন করেন। যখন নেতানিয়াহু ও তার যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সঙ্গে বৈঠক শেষে বাইডেন বেরিয়ে এসে পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে ইসরাইলের প্রতি তার অবিচ্ছিন্ন সমর্থন জাহির করেন, তখন আমিও সেখানে ছিলাম।

বাইডেন ইসরাইলের প্রতি অবিচ্ছিন্ন সমর্থন জানালেও তার একটি সতর্কবার্তা ছিল। বাইডেন বলেছিলেন, ‘৯/১১ হামলার পরে আমরা যে ভুলগুলো করেছি তার পুনরাবৃত্তি করবেন না।’ এবং তিনি যা বোঝাতে চেয়েছিলেন তা তিনি উচ্চারণ করেছিলেন: ‘ফিলিস্তিনি জনগণও অনেক কষ্ট পাচ্ছে এবং আমরা সারা বিশ্বের মতো নিরপরাধ ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানির জন্য শোকাহত।’

গত বুধবার ইসরাইলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ রাখার কথা বলেছেন জো বাইডেন। এর একদিন পর বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহু তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মার্কিন অস্ত্র ছাড়াই তিনি রাফায় আক্রমণ চালাবেন। প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন পর বুঝতে পেরেছেন, তিনি মার্কিন চাপের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করে তার নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে পারেন।

নেতানিয়াহু তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা একাই দাঁড়াব। আমি বলেছি যে প্রয়োজনে আমরা আমাদের নখ দিয়ে লড়াই করব।’

এই বক্তব্যের বিষয়ে ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর ক্রিস কুনস বলেন, ‘তাদের নখ দিয়ে লড়াই করার দরকার নেই। তারা আমাদের সঙ্গে যৌথভাবে মিলে অনেক আধুনিক অস্ত্র তৈরি করে থাকে, সেগুলো নিয়েই তারা লড়াই করতে পারে। কিন্তু তাদের এই যুদ্ধটা এমনভাবে করতে হবে যেন বেসামরিক হতাহতের ঘটনা কম হয়।’

– বিবিসির ইন্টারন্যাশনাল করেসপন্ডেন্ট টম বেটম্যানের প্রতিবেদন

সারাবাংলা/আইই

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন