বিজ্ঞাপন

অন্যকে দিয়ে সাজা খাটানো যুবলীগ নেতা অবশেষে কারাগারে

May 13, 2024 | 1:02 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: মাদক মামলায় সাত বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত রাজধানী উত্তরার যুবলীগ নেতা নাজমুল হাসানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। অর্থের বিনিময়ে নিজের সাজা অন্যজনকে দিয়ে খাটানোর ঘটনায় আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৩ মে) ঢাকার অষ্টম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আমিনুল ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন।

এর আগে, নিজের সাজা অন্যকে দিয়ে খাটানোর ঘটনায় রাজধানীর উত্তরার যুবলীগ নেতা নাজমুল হাসানকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে গতকাল (১৩ মে) নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ওই মামলায় নাজমুলের পরিবর্তে অপর এক ব্যক্তির কারাভোগ করছেন। গতকাল (১২ মে) বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছিলেন।

আদালতে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ, যিনি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে এনেছিলেন। নাজমুল হাসানের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. গিয়াসউদ্দিন আহম্মদ।

বিজ্ঞাপন

‘মাদক মামলায় যুবলীগ নেতার আয়নাবাজি’ শিরোনামে গত ফেব্রুয়ারি মাসে একটি দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। তবে এর আগে ওই মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া ৭ বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে নাজমুল হাসান ২০২৩ সালে হাইকোর্টে একটি আপিল করেন। হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে আপিল শুনানি শেষে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রায়ের জন্য ছিল।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন সেদিন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করে আইনগত প্রতিকার প্রার্থনা করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। আদালত তখন রায় ঘোষণা মুলতবি করেন। অন্যদিকে, বিচারিক আদালতের একজন আইনজীবী বিষয়টি নিয়ে প্রধান বিচারপতি বরাবর আবেদন করেন। পরে প্রধান বিচারপতি আপিলটি নিষ্পত্তির জন্য ওই বেঞ্চে পাঠান।

এর ধারাবাহিকতায় শুনানি নিয়ে গত ২৪ এপ্রিল হাইকোর্ট পাঁচ দফা নির্দেশনাসহ আদেশ দেন। ওই ঘটনায় আসামির প্রকৃত পরিচয় কীভাবে শনাক্ত করা হয়েছিল, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিচারককে (ঢাকার অষ্টম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত) লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়। কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার আসামিকে কী প্রক্রিয়ায় গ্রহণ করেছিলেন, এর প্রমাণপত্রসহ হলফনামা আকারে লিখিত জবাব ৭ দিনের মধ্যে তাকে দাখিল করতে বলা হয়।

বিজ্ঞাপন

এর ধারাবাহিকতায় গতকাল (১৩ মে) বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২০ সালের আগস্ট মাসে উত্তরার একটি বাসায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল ও গাঁজাসহ আনোয়ার হোসেন নামে একজনকে আটক করে। তবে পালিয়ে যান চক্রের মূলহোতা যুবলীগ নেতা নাজমুল হাসান। এ ঘটনায় দু’জনকে আসামি করে মামলা করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। বিচারে অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় পলাতক নাজমুল হাসানকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেন নিম্ন আদালত।

নাজমুল ঢাকার উত্তরার ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের নেতা। কিন্তু এ পরিচয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করে যিনি জেল খেটেছেন তার প্রকৃত নাম মিরাজুল ইসলাম। এরইমধ্যে ৭ বছরের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানিতে প্রকৃত আসামির পরিবর্তে অন্য একজন জেল খাটার বিষয়ে মামলার শুনানিতে আদালত ৬ জনের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন।

অর্থের বিনিময়ে মিরাজুল ইসলামের জেল খাটার বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নিতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ আদালতে আবেদন জানান। পরে বিষয়টিতে শুনানি হয়।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/কেআইএফ/এমও

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন