বিজ্ঞাপন

শহীদ ১০ শান্তিরক্ষীর পরিবারকে পুরস্কার দিলেন রাষ্ট্রপতি

May 29, 2018 | 11:20 pm

।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।

বিজ্ঞাপন

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে দায়িত্ব পালনের সময় শহীদ ১০ শান্তিরক্ষীর পরিবার এবং আহত আরও ১১ শান্তিরক্ষীকে পুরস্কার দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

মঙ্গলবার (২৯ মে) আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০১৮ উপলক্ষে রাজধানীতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শান্তিরক্ষী ও তাদের পরিবারের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মালি, কঙ্গো ও লেবাননে কর্মরত শান্তিরক্ষীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করেন। এরপর বিভিন্ন মিশনে থাকা শান্তিরক্ষীদের কল্যাণ কামনা করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের ৩০ বছর উপলক্ষে একটি বিশেষ ডাক টিকিট অবমুক্ত করেন রাষ্ট্রপতি। অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের বিভিন্ন মিশনে কর্মরত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ওপর নির্মিত একটি স্বল্প্যদৈর্ঘ প্রামাণ্য চিত্র দেখানো হয়। পরে রাষ্ট্রপতি একটি বুকস্টল এবং জাতিসংঘ মিশনে ব্যবহৃত শান্তিরক্ষীদের ‘মডেল অস্ত্রের’ একটি স্টলসহ কয়েকটি স্টল ঘুরে দেখেন।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে কর্মরত অবস্থায় শহীদ হওয়ায় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রপতি।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আমি প্রত্যাশা করি, আপনারা (জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরতারা) আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা সমুন্নত রাখার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী দেশ হিসেবে তুলে ধরতে কাজ করবেন।’

সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও দক্ষতা দেখানোর মাধ্যমে সাহসী ও বীরোচিত কাজের মধ্য দিয়ে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দেশের মর্যাদা সমুন্নত রাখার জন্য বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশন এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণ বিশ্বে বাংলাদেশকে একটি মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এ ছাড়া দেশের অর্থনীতি এবং দ্বিপক্ষীয় ও বহুমুখী কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে শান্তিরক্ষীরা অনেক বড় অবদান রাখছেন।’

১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ, যেখানে তিনি বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাঁর দৃঢ় আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছিলেন সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, ‘তখন থেকেই বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন শান্তিপ্রিয় ও বন্ধুপ্রতিম দেশের সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।’

বিজ্ঞাপন

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে পাঠানো সৈন্যের সংখ্যায় বাংলাদেশ অন্যতম শীর্ষস্থানীয়-এ কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ আরও বলেন, বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা ৪০টি দেশে ৫৪টি মিশন অত্যন্ত সফলতার সাথে সম্পন্ন করেছেন। এই মুহূর্তে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত ১২৪টি দেশের ৯১ হাজার ৫৮ জন শান্তিরক্ষীর মধ্যে ৭ হাজার ৭৫ জন বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী রয়েছেন- যা সত্যিই গর্ব করার মতো।

বর্তমানে ১০টি মিশনে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা নিয়োজিত রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, জাতিসংঘ সম্প্রতি নারী প্রতিনিধিত্বের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের ১৫৭ জন নারী শান্তিরক্ষী শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছেন।

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মুহাম্মদ শফিউল হক, জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সিপ্পোসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন আহম্মেদ, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এরসার, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীসহ মন্ত্রিসভার সদস্য, কূটনৈতিক কোরের সদস্য, সংসদ সদস্য, ঊর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এমআইএস

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন